বেরোবি’তে আন্দোলনকারী কর্মচারীদের ওপর হামলার অভিযোগ

৩২১

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীদের ডাকা অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটের দ্বিতীয় দিনে এক শিক্ষকের নেতৃত্বে শিক্ষার্থী ও বহিরাগতদের নিয়ে কর্মচারীদের ওপর হামলা অভিযোগ উঠেছে। এই হামলায় কমপক্ষে দশ জন আহত হয়েছেন বলে দাবি আন্দোলনকারীদের।

কর্মচারীদের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীরা কর্মচারী বান্ধব পদোন্নতি আপগ্রেডেশন নীতিমালা বাস্তবায়ন, ৪৪ মাসের বকেয়া বেতন-ভাতা প্রদান এবং ১০ম গ্রেড প্রাপ্ত ২৫ জনকে কর্মকর্তা পদমর্যাদা প্রদান ও মাস্টার রোল কর্মচারীদের চাকুরী স্থায়ী করণের দাবিতে সোমবার থেকে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট শুরু করেন। তারা প্রশাসনিক ভবনে অবস্থান করে আন্দোলন চালিয়ে আসছিলেন। মঙ্গলবার দ্বিতীয় দিনে প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দিয়ে অবস্থান ধর্মঘট পালন করছিলেন তারা। কিন্তু দুপুর আড়াইটার দিকে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক তাবিউর রহমানের নেতৃত্বে ৩-৪ জন শিক্ষক এবং ওই বিভাগের শিক্ষার্থী ও বহিরাগত কিছু তরুণ প্রশাসনিক ভবনের সামনে আসেন। তারা সেখানে এসেই প্রশাসনিক ভবনের তালা খুলে দিতে বলেন। এ নিয়ে কর্মচারীদের সঙ্গে শিক্ষক তাবিউর রহমানের কথা কাটাকাটি ও বাদানুবাদ হয়। এসময় তার সঙ্গে আসা শিক্ষার্থীরা ও বহিরাগতরা এক জোট হয়ে কর্মচারীদের ওপর হামলা চালায় এবং কর্মচারীদের তৈরি করা মঞ্চ ভাঙচুর করে। একপর্যায়ে প্রশাসনিক ভবনের তালা ভেঙে ফেলা হয়।

আন্দোলনরত কর্মচারীরা জানান, শিক্ষক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক তাবিউর রহমান কোনও প্রশাসনিক কর্মকর্তা নন। তারপরও উপাচার্যের পক্ষ হয়ে তার নিজের বিভাগের শিক্ষার্থী ও বহিরাগতদের নিয়ে এসে হামলা চালিয়েছেন। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের নিয়ে গঠিত কর্মচারী সমন্বয় পরিষদের সভাপতি নুর আলম ও সাধারণ সম্পাদক মাসুম খান বলেন, ‘আমরা আমাদের ন্যায়সঙ্গত দাবি নিয়ে আন্দোলন করছি। এর আগে উপাচার্য আমাদের দাবি বাস্তবায়নের কথা বলেও কোনও পদক্ষেপ নেননি। সে কারণে বাধ্য হয়ে আবারও আন্দোলনে নেমেছি। অথচ তাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে হামলা করে মারধর করা হলো, মঞ্চ ভাঙচুর করা হলো।’ হামলার ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তারা।

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক তাবিউর রহমান অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেওয়ায় শিক্ষার্থীরা জরুরি প্রয়োজনে যেতে না পারায় বিক্ষুব্ধ হয়ে তালা ভেঙে ফেলেছে। তারা কোন বিভাগের শিক্ষার্থী তা জানি না।’  তিনি কাউকে নিয়ে প্রশাসনিক ভবনে যাননি বলেও দাবি করেছেন।  

এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এস আই মহিবুল ইসলাম বলেন, ‘পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে।’

এ ব্যাপারে কথা বলতে উপাচার্য অধ্যাপক নাজমুল আহসান কলিম উল্লাহর মোবাইল ফোনে বেশ কয়েকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।