‘বরকত’ এর দাম আট লাখ

প্রায় চার বছর আগে এর কোনও নাম ছিল না। সেসময় বাছুরটিকে কিনেছিলেন মণিরামপুর উপজেলার সাতগাতি এলাকার ব্যবসায়ী আব্দুল মান্নান। কিন্তু তারপর থেকেই তার সংসারে আয় বেড়ে যায় জন্য আদর করে বাছুরটির নাম রাখা হয় ‘বরকত’। তিন বছর পর সেটি এখন পুরোদস্তুর ষাঁড়ে পরিণত হয়েছে। আসছে কোরবানির ঈদে বিক্রির জন্য এর দাম আট লাখ টাকা হাঁকা হয়েছে।

জানা গেছে, এখন পর্যন্ত ছয় লাখ টাকা পর্যন্ত দাম উঠেছে। তবে গরুটি ছাড়েননি মালিক।

বুধবার (১০ জুলাই) দুপুরে মান্নানের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, আশপাশের এলাকার বেশ কয়েকজন এসেছেন ষাঁড়টি দেখতে।

মান্নান বলেন, ‘বছর তিনেক আগে একই উপজেলার খানপুর এলাকার জনৈক মাসুম সরদারের কাছ থেকে ৯২ হাজার টাকা দিয়ে অ্যামেরিকান ব্রাহমা প্রজাতির এই গরুর বাছুরটি কিনি। সেসময় বাছুরটির বয়স ছিল ১৬ মাস। গায়ের রঙ সুন্দর চকচকে হওয়ায় গত বছর খুলনার হাটে আমার গরুটি বাজারের সবচেয়ে সুন্দর হিসেবে বিবেচিত হয়। তখন এর দাম ওঠে ৪ লাখ ৭০ হাজার টাকা। কিন্তু আমি দিইনি। এখন বরকতের বয়স ৩ বছর ১১ মাস। এর ওজন ১৩শ’ কেজির মতো হবে। এতে ২০-২২ মণ মাংস হবে বলেও দাবি করেন আব্দুল মান্নান।’

ষাঁড়টির ব্যাপারে মান্নান আরও বলেন, ‘বরকতের জন্যে একটি গোয়ালঘর করা হয়েছে। সেখানে একটি সিলিং ফ্যান রয়েছে। খাদ্য হিসেবে জাউনা (বিচালি), খুঁদের ভাত, সরিষার খৈল আর গমের ভূষি ব্যবহার করা হয়। প্রথমদিকে কাঁচাঘাস দেওয়া হলেও পরে তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।’

আব্দুল মান্নানের স্ত্রী রহিমা বেগম বলেন, ‘ষাঁড়টির যত্নে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। প্রতিরাতে (রাত ১টার পর্যন্ত) কমপক্ষে তিনবার ভেজা গামছা দিয়ে তার শরীর মুছিয়ে দেওয়া হয়। প্রতিদিন দু’বার স্নান করাই। তবে, স্নানে সাবান বা শ্যাম্পু কিছুই ব্যবহার করা হয় না।’

একপ্রশ্নের জবাবে আব্দুল মান্নান বলেন, ‘স্থানীয় প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার পরামর্শ অনুযায়ী ৩ মাস ১০দিন অন্তর খুরারোগ প্রতিরোধে ভ্যাকসিন, কৃমিনাশক ওষুধ আর তড়কা রোগের জন্যে বছরে একবার ভ্যাকসিন দেওয়া হয়।’ বরকতের খাবার ও ওষুধের জন্যে প্রতিমাসে ১০ হাজারের বেশি টাকা খরচ করা হয় বলে তিনি জানান।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আবুজার সিদ্দিকী বলেন, ‘আব্দুল মান্নানের আমেরিকান ব্রাহমা প্রজাতির গরুটি আমি দেখেছি। তাকে বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ দেওয়া হয়। গরুটিকে কোনও ধরনের ক্ষতিকর স্টেরয়েড বা ব্যথানাশক ওষুধ প্রদান করা হয় না। সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক খাবার খাওয়ানো হয়। এর মাংস মানবদেহের জন্যে মোটেও ক্ষতিকর নয়।’