নওগাঁয় সঞ্চয় অধিদফতরে সোয়া দুই কোটি টাকার আমানত লোপাট

নওগাঁ সঞ্চয় অধিদফতরনওগাঁয় জাতীয় সঞ্চয় অধিদফতরে গ্রাহকের প্রায় দুই কোটি ২৫ লাখ টাকা আত্নসাতের ঘটনা ধরা পরেছে। বিভাগীয় অডিটে ধরা পড়ে এই ঘটনা। এ জন্য অফিস সহায়ক সাদ্দাম হোসেনকে দায়ী করছেন কর্মকর্তারা। ঘটনা অনুসন্ধানে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গেল জুন মাসে অডিট করতে গিয়ে আমানত আত্নসাতের ঘটনা ধরা পড়ে। এরপর বেশ কিছু সঞ্চয়ী গ্রাহকের মুনাফা বন্ধ করে দেওয়া হয়। জানানো হয় ৫০ থেকে ৬০ জন গ্রাহকের জমাকৃত টাকার হদিস মিলছে না। ঘটনা জানাজানির পর উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন গ্রাহকরা। ভুক্তভোগীরা ব্যাংকে জমা দেওয়া টাকার রসিদ নিয়ে প্রতিদিনই ধরনা দিচ্ছেন সঞ্চয় অধিদফতর অফিসে।

আমানতকারীরা জানান, নিয়ম অনুযায়ী সোনালী ব্যাংকে টাকা জমা দিয়ে সঞ্চয় অধিদফতর থেকে তারা আমানতের প্রমাণ সংগ্রহ করেছেন। এর পর থেকে তারা মেয়াদ অন্তে সঞ্চয়ী হিসেবের বিপরীতে লভাংশ বা মুনাফা পেতে থাকেন। কিন্তু হঠাৎই কর্মকর্তারা মুনাফা দেওয়া বন্ধ করে দেন। এতে হতাশ হয়ে পড়েছেন তারা।

নওগাঁ সঞ্চয় অধিদফতরের ভারপ্রাপ্ত সঞ্চয় কর্মকর্তা নাসির হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, অডিটে গ্রাহকের টাকা আত্নসাতের ঘটনা ধরা পড়ার পর তিনি নিজে বাদী হয়ে ১৫ জুন অফিস সহায়ক সাদ্দাম হোসেনের বিরুদ্ধে নওগাঁ সদর মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। তিনি আরও জানান, ‘নওগাঁ সঞ্চয় অধিদফতর অফিসে ২০১৪ সাল থেকে অফিস সহায়ক পদে কর্মরত ছিলেন সাদ্দাম। ২০১৮ সালের ডিসেম্বর মাস থেকে হঠাৎ করে অফিসে আসা বন্ধ করে দেন তিনি। গত সাত মাস অফিসে আসেননি। দ্বায়িত্ব পালনকালে সাদ্দাম বেশ কিছু আমানতের হিসাবের রেকর্ড না রেখে গ্রাহককে ভুয়া সিল-স্বাক্ষরে রসিদ দিয়েছেন। এ ধরণের বিভিন্ন পন্থায় দুই কোটি ২৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন তিনি।’

অভিযুক্ত সাদ্দাম হোসেন গাইবান্ধা জেলা সদরের পশ্চিম কোমরনই গ্রামের বক্তার আলীর ছেলে। গত ২৫ জুন দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) রাজশাহী বিভাগীয় কার্যালয়ের অনুসন্ধানী দল তাকে আটক করে। পরে সাদ্দামকে নওগাঁ সদর থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে। বর্তমানে দুদকের  টিম নওগাঁয় অবস্থান করে এ মামলার তদন্ত করছে।

তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের সহকারী পরিচালক আলমগীর হোসেন বলেন, ‘টাকা আত্নসাতের ঘটনায় আরও তথ্য উদঘাটনের জন্য অভিযুক্ত সাদ্দাম হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে আদালতের কাছে রিমান্ডের আবেদন দেওয়া হয়েছে। রিমান্ডে নিলে আরও তথ্য বেরিয়ে আসতে পারে।’ এ ঘটনার সঙ্গে সাদ্দাম হোসেন ছাড়াও সঞ্চয় অধিদফতরের অন্যান্য কর্মকর্তারা জড়িত আছেন কিনা তা উদঘাটনের চেষ্টা চলছে বলেও জানান দুদক কর্মকর্তা।