অর্থপাচার মামলায় নিউ বসুন্ধরা রিয়েল এস্টেটের এমডি মান্নান কারাগারে

আব্দুল মান্নান

বাগেরহাটের নিউ বসুন্ধরা রিয়েল এস্টেট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আব্দুল মান্নান তালুকদারকে ১১০ কোটি টাকা পাচারের মামলায় কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত। সোমবার (১৫ জুলাই) বিকালে তিনি বাগেরহাটের জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক গোলক চন্দ্র বিশ্বাসের আদালতে হাজির হয়ে আত্মসমর্পণ করলে তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন বিচারক। তবে ওই প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান আনিসুর রহমান মামলার পর থেকে পলাতক রয়েছেন।

এদিকে আদেশের পর আব্দুল মান্নান তালুকদারিআদালত থেকে বের হওয়ার সময় যাতে সংবাদকর্মীরা তার ছবি তুলতে না করতে পারে সেজন্য তার আইনজীবীরা চারদিক থেকে ঘিরে রাখেন। পরে তাকে পুলিশের প্রিজনভ্যানে না তুলে তার ব্যক্তিগত গাড়িতে করে জেলা কারাগার পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়া হয়।

এর আগে, ৩০ মে বাগেরহাট সদর মডেল থানায় দুদকের খুলনা জেলা সমন্বিত কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক (এডি) মো. শাওন মিয়া বাদী হয়ে নিউ বসুন্ধরা রিয়েল এস্টেট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আব্দুল মান্নান তালুকদার ও চেয়ারম্যান আনিসুর রহমানের বিরুদ্ধে ১১০ কোটি টাকা পাচারের একটি মামলা করেন।

দুদকের আইনজীবী মিলন কুমার ব্যানার্জী বলেন, ‘ওই মামলায় তিনি সোমবার আম্তসমর্পণ করলে আদালতের বিচারক তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানো আদেশ দেন।’

জানা গেছে, ২০১০ সালে বাগেরহাট জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারি আব্দুল মান্নান তালুকদার নামে এক ব্যক্তি স্বেচ্ছায় অবসর নিয়ে নিউ বসুন্ধরা রিয়েল এস্টেট লিমিটেড নামে একটি জমি কেনাবেচার প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। ওই প্রতিষ্ঠানে তিনি ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং তার ওই প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান করা হয় বাগেরহাট শহরের মিঠাপুকুরপাড় জামে মসজিদের ঈমাম আনিসুর রহমান নামে আরেক ব্যক্তিকে। এই প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তোলার পর তিনি গ্রাহকদের প্রতি লাখে মাসে দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা করে দেওয়ার প্রলোভনে বাগেরহাট, খুলনাসহ বেশ কয়েকটি জেলার অন্তত ২০ হাজার গ্রাহকের কাছ থেকে অন্তত ২৯৯ কোটি টাকা আমানত সংগ্রহ করেন, যা ব্যাংকিং আইনের পরিপন্থী। গত কয়েক বছরে বাগেরহাটের ১৬টি ব্যাংকের ৩০টি (অ্যাকাউন্ট) হিসাব থেকে ১১০ কোটি ৩১ লাখ ৯১৩৫ টাকা ৫৮ পয়সা জমা করেন। গ্রাহকদের কাছ থেকে নেওয়া এই বিপুল পরিমাণ অর্থ তিনি ব্যাংক থেকে তুলে পাচার করেছেন। এই টাকা কোথায় পাচার করা হয়েছে তা জানতে দুদক অনুসন্ধান চালাচ্ছে।