সেবা পরিবহন বাস সার্ভিসের পৃথক রুট নিয়ে রাজধানীর মহাখালীর পরিবহন মালিকদের সঙ্গে দ্বন্দ্বের জেরে পূর্বঘোষিত আলটিমেটাম অনুযায়ী সিরাজগঞ্জের বাস মালিক সমিতি ঐক্য পরিষদের ব্যানারে বৃহস্পতিবার থেকে এ ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়। ধর্মঘটের কারণে সিরাজগঞ্জ জেলা শহর থেকে ঢাকা, রাজশাহী, পাবনা, কুষ্টিয়া, যশোর, বগুড়া, রংপুর, সৈয়দপুর, দিনাজপুর, পঞ্চগড়, নওগাঁ, জয়পুরহাটসহ অন্যান্য জেলা বাদেও জেলার সবকটি উপজেলার সঙ্গে আভ্যন্তরীণ রুটে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে।
এদিকে, চলমান বন্যার কারণে জেলা সদর, কাজিপুর, শাহজাদপুর, উল্লপাড়া, চৌহালী ও বেলকুচিসহ যমুনার চরাঞ্চলের জনসাধারণ এমনিতেই দুর্ভোগের মধ্যে রয়েছেন। তার ওপর ধর্মঘটের কারণে বাস চলাচল বন্ধ থাকায় যোগাযোগ কঠিন হয়ে পড়েছে। পরিবহন সেক্টরের চলমান এই জটিলতা নিরসনে কার্যকর ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে জেলা প্রশাসন ও বিআরটিএ ব্যর্থ হয়েছে বলে অভিযোগ করছেন ভুক্তভোগীরা।
গত ৯ জুলাই সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসন দুই পক্ষের নেতাদের নিয়ে আলোচনার বসে ১০ দিনের সময়সীমা বেঁধে দেন। কিন্তু ওই আলোচনায় অংশ না নিয়ে মহাখালীর মালিক ও শ্রমিক নেতারা সিরাজগঞ্জের বাস ঢাকায় স্বাভাবিক চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেন। পক্ষান্তরে সিরাজগঞ্জের পরিবহন নেতারাও বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম পাড়ে কড্ডার মোড়ে তাদের পাল্টা বাধা দেন। এতে গত ১৩ জুলাই থেকে সিরাজগঞ্জ জেলার বাস ঢাকার রুটে চলাচল বন্ধ রয়েছে। এরইমধ্যে বিআরটিএ চেয়ারম্যান বিষয়টি নিয়ে সমঝোতা করার জন্য সিরাজগঞ্জ জেলার মালিকদের ঢাকায় তার কার্যালয়ে ডাকেন। কিন্তু শ্রমিক নেতাদের বাদ রেখে শুধু মালিক নেতাদের এককভাবে সমঝোতা বৈঠকে ডাকায় এবং ঢাকার কাউন্টারগুলো খুলে না দেওয়ায় বৈঠক শেষ পর্যন্ত আর অনুষ্ঠিত হয়নি। আবারও নতুন করে দুই সংগঠনের নেতাদের চিঠি দিয়েছেন বিআরটিএ’র চেয়ারম্যান। রবিবার (২১ জুলাই) ওই সমঝোতা বৈঠক হতে পারে।
ঢাকার মহাখালীর বাস মালিক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মান্নান বলেন, ‘আমরা বরাবরই ছাড়ের মন মানসিকতা রাখি। তাদের একতরফা ৬০/৭০টি বাস ঢাকায় চলবে, পক্ষান্তরে আমাদের একটিও চলবে না তা তো হয় না। জেলা প্রশাসক আলোচনার জন্য বলেছিলেন, এমনকি বিআরটিএ চেয়ারম্যানও তাদের ডেকেছিলেন। কিন্তু সিরাজগঞ্জের নেতারা আলোচনা না এসে বন্যার সময় স্থানীয় প্রশাসনকে বেকায়দায় ফেলতে ধর্মঘট ডেকেছে। তাদের ধর্মঘটের কারণে সিরাজগঞ্জ জেলাবাসীই বন্যায় দুর্ভোগে পড়েছেন।’
অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট তোফাজ্জল হোসেন বলেন, ‘প্রশাসনের তরফ থেকে উভয় পক্ষকে নিয়ে আলোচনা করা হলেও তা ফলপ্রসূ হয়নি। বিআরটিএ চেয়ারম্যান এককভাবে সিরাজগঞ্জের মালিক নেতাদের ডাকায় সমঝোতা হয়নি। মালিক-শ্রমিক সংগঠনের নেতাদের আলাদা চিঠি দিয়ে আগামী রবিবার বিআরটিএ আবার ডেকেছে। বন্যার দুর্ভোগের সময় ধর্মঘট না ডাকার জন্য অনুরোধ করা হলেও তারা সেটি মনেননি।’