মাদ্রাসার তিন শিক্ষার্থীসহ চার জনের সাক্ষ্যগ্রহণ

নুসরাত হত্যা মামলা

ফেনী সোনাগাজীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার মামলায় ওই মাদ্রাসার ছাত্রী তাহমিনা আক্তার, বিবি হাজেরা, ছাত্র আবু-বকর সিদ্দিক ও স্থানীয় মো. আকবর হোসেনের সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

রবিবার (২১ জুলাই) ১৭তম দিনের মতো ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামুনুর রশিদের আদালতে তারা সাক্ষ্য দেন। এর ফলে এখন পর্যন্ত এই মামলার ৯২ জন সাক্ষীর মধ্যে ৩২ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা সম্পন্ন হলো।  

এর আগে, রবিবার সকাল সাড়ে ১১টায় কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে মামলার ১৬ আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। এরপর রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী চার স্বাক্ষীকে আদালতে উপস্থাপন করেন।

বাদীপক্ষের আইনজীবী এম শাহজাহান সাজু এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী হাফেজ আহাম্মদ জানান, গত ২৭ ও ৩০ জুন মামলার বাদী ও নুসরাতের ভাই মাহমুদুল হাসান নোমানকে জেরার মধ্য দিয়ে এই মামলার বিচারকাজ শুরু হয়।

তিনি আরও জানান, গত ২৯ মে আদালতে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ১৬ জনকে অভিযুক্ত করে ৮০৮ পৃষ্ঠার অভিযোগপত্র দাখিল করে। ৩০ মে মামলাটি ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর হয়। ১০ জুন মামলাটি আদালত আমলে নিলে শুনানি শুরু হয়। ২০ জুন অভিযুক্ত ১৬ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন বিচারিক আদালত।

উল্লেখ্য, নুসরাত সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার আলিম পরীক্ষার্থী ছিলেন। ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দৌলার বিরুদ্ধে তিনি যৌন নিপীড়নের অভিযোগ করেন। নুসরাতের মা শিরিন আক্তার বাদী হয়ে ২৭ মার্চ সোনাগাজী থানায় মামলা দায়ের করেন। এরপর অধ্যক্ষকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে মামলা তুলে নিতে বিভিন্নভাবে নুসরাতের পরিবারকে হুমকি দেওয়া হয়। ৬ এপ্রিল সকাল ৯টার দিকে আলিম পর্যায়ের আরবি প্রথমপত্রের পরীক্ষা দিতে সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে যান নুসরাত। এসময় তাকে কৌশলে পাশের বহুতল ভবনের ছাদে ডেকে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। সেখানে তার গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দেওয়া হয়। গত ১০ এপ্রিল রাত সাড়ে ৯টায় ঢামেক হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে নুসরাত মারা যান। এই ঘটনায় নুসরাতের বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান বাদী হয়ে গত ৮ এপ্রিল ৮ জনের নাম উল্লেখ করে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলাটি দায়ের করেন।