কলকাতায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত মাইনুল ও তানিয়ার দাফন সম্পন্ন

বেনাপোলে হস্তান্তর করা হয় নিহত দুই বাংলাদেশির মরদেহ

আজ রবিবারই (১৮ জুলাই) ভারত থেকে দেশে ফেরার কথা ছিল গ্রামীণফোনের ঢাকার মতিঝিল এলাকার এরিয়া ম্যানেজার মাইনুল ইসলাম সোহাগের (৩৬)। ঠিকই ফিরেছেন তিনি। তবে জীবিত নন, লাশ হয়ে। কলকাতায় চোখের চিকিৎসা করাতে গিয়ে শুক্রবার রাতে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন তিনি। তার সঙ্গে একই ঘটনায় নিহত হন ফারহানা ইসলাম তানিয়া (৩০) নামের আরেক ব্যাংক কর্মকর্তা। একসঙ্গেই সফরে গিয়েছিলেন তারা। আজ মাইনুলের দাফন তার গ্রামের বাড়ি ঝিনাইদহ পৌর এলাকার ভুটিয়ারগাতি গ্রামে ও তানিয়ার দাফন তার গ্রামের বাড়ি কুষ্টিয়ার খোকসার চাদোট গ্রামে সম্পন্ন  হয়েছে। তাদের অকাল মৃত্যুর ঘটনায় উভয় পরিবারে চলছে শোকের মাতম।

বেনাপোল প্রতিনিধি জানান, ওই দুর্ঘটনায় নিহত দুই বাংলাদেশি ফারহানা ইসলাম তানিয়া (৩০) ও মাইনুলের মরদেহ আজ রবিবার (১৮ আগস্ট) সকালে বেনাপোল চেকপোস্টে এসে পৌঁছায়। সেখানে দুই দেশের কাগজপত্রের আনুষ্ঠানিকতা শেষে উভয় পরিবারের সদস্যদের কাছে মরদেহ দুটি হস্তান্তর করেন বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স (বিএসএফ) এর সদস্যরা। মইনুলের মরদেহ গ্রহণ করেন তার চাচাতো ভাই জিহাদ। এরপর ঝিনাইদহের ভুটিয়ারগাতী গ্রামে নিয়ে যাওয়া হয় মইনুল আলমের (৩৬) মরদেহ। মইনুলের পিতার নাম কাজী খলিলুর রহমান। অন্যদিকে কুষ্টিয়ার খোকসা থানার চাদোট গ্রামে নিয়ে যাওয়া হয় ফারহানা ইসলাম তানিয়ার মরদেহ। তিনি ওই গ্রামের আমিরুল ইসলামের মেয়ে।

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি জানান, সকাল সাড়ে ১১ টার দিকে অ্যাম্বুলেন্সে করে সোহাগের মরদেহ বাড়িতে আনা হয়। এ সময় এলাকাবাসী ও পরিবারের সদস্যদের মধ্যে শোকের মাতম দেখা যায়। লাশ দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন বৃদ্ধ মা-বাবা, স্ত্রী, ভাই-বোনেরা। বাদ জোহর পারিবারিক গোরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন করা হয়।

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি জানান, বেতবাড়ীয়া ইউনিয়ন পরিষদের চাঁদট গ্রামের মেম্বার মো. ফারুখ হোসেন জানান, বেনাপোল থেকে বেলা ১টার দিকে চাঁদট গ্রামের ফারহানা ইসলাম তানিয়ার লাশ এসে পৌঁছায়। পরে বেলা আড়াইটার দিকে চাঁদট জামে মসজিদ মাঠে জানাজা শেষে মরদেহ দাফন করা হয়।

চোখের সমস্যা নিয়ে বুধবার কলকাতার অ্যাপোলো হাসপাতালে চিকিৎসার উদ্দেশ্যে গিয়েছিলেন মাইনুল। সঙ্গে ছিলেন তার চাচাতো ভাই জিহাদ ও কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার চাদোট গ্রামের মুন্সী আমিনুল ইসলামের মেয়ে ফারজানা ইসলাম তানিয়া।

শুক্রবার মধ্যরাতে বৃষ্টির কারণে কলকাতার শেকসপিয়র সরণির একটি পুলিশ বক্সে দাঁড়িয়ে ছিলেন তারা। সেসময় এই সরণি ধরে বিড়ালা প্ল্যানেটোরিয়ামের দিক থেকে কলামন্দিরের দিকে যাওয়ার সময় প্রচণ্ড গতির একটি জাগুয়ার জিপ সজোরে ধাক্কা মারে একটি মার্সিডিজকে। এরপর জাগুয়ারটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা সোহাগ ও তানিয়াকে চাপা দেয়। সেখান থেকে গুরুতর আহত অবস্থায় তাদের উদ্ধার করে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে গিলে চিকিৎসক মাইনুল ও তানিয়াকে মৃত ঘোষণা করেন।