বগুড়ার শাজাহানপুর থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) আবুল কালাম আজাদ জানান, বগুড়া সদরের কদিমপাড়া গ্রামের দৌলতুজ্জামানের ছেলে শাহীন আলম বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালের কেবিন ওয়ার্ড বয়। নিহত নূর জাহান বিবি শিবগঞ্জ উপজেলার দাইমুল্যা গ্রামের মৃত সাবাজ শাকিদারের মেয়ে। নূর জাহান বগুড়া শজিমেক হাসপাতালে রোগী নিয়ে এলে তার সঙ্গে ওয়ার্ড বয় শাহীনের পরিচয় হয়। এরপর দুই জনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। গত ২২ আগস্ট তারা বিয়ে করেন। পরে শাজাহানপুর উপজেলার শাকপালার দিঘিরপাড়া এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস শুরু করেন। এটি শাহীনের দ্বিতীয় ও নূর জাহানের তৃতীয় বিয়ে। মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে প্রতিবেশীরা তালা দেওয়া ঘরের বিছানায় নূর জাহানের লাশ পড়ে থাকতে দেখেন। খবর পেয়ে শাজাহানপুর থানা পুলিশ দরজা ভেঙে রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করে বগুড়া শজিমেক হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। রাতেই শাহীন আলম সদর থানায় আত্মসমর্পণ করতে গেলে পুলিশ তাকে গ্রেফতার দেখায়।
সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) সনাতন চক্রবর্তী জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে শাহীন তার স্ত্রীকে হত্যার কথা স্বীকার করে। সে জানায়, বনিবনা না হওয়ায় স্ত্রীকে হত্যার সিদ্ধান্ত নেয়। মঙ্গলবার আসর নামাজের পর সে প্রথমে কোমলপানীয়ের মধ্যে ১০টি ঘুমের ট্যাবলেট মিশিয়ে খাওয়ায়। কিছুটা অচেতন হলে হাত বেঁধে তিনটি ঘুমের ইনজেকশন দেয়। নূর জাহান পুরো অচেতন হয়ে পড়লে ছুরি দিয়ে গলা কেটে হত্যার পর ঘরের দরজায় তালা দিয়ে পালিয়ে যায়। তার স্বীকারোক্তিতে ভাড়া বাসার পাশ থেকে হত্যায় ব্যবহৃত ছুরিটি উদ্ধার করা হয়েছে।
তদন্তকারী কর্মকর্তা শাজাহানপুর থানার এসআই শরিফুল ইসলাম জানান, আসামি শাহীনকে বুধবার বিকালে আদালতে পাঠানো হয়েছে। সে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি দিতে রাজি আছে।
নিহতের ছেলে লিটন জানান, শাহীন আলম তার মা নূর জাহান বেগমের তৃতীয় স্বামী। তার বাবা ইনসেন আলীর সঙ্গে তার মায়ের প্রায় ২০ বছর আগে ডিভোর্স হয়। এরপর তার মা শিবগঞ্জ উপজেলার লড়িয়াল গ্রামের মজিবর রহমানকে দ্বিতীয় বিয়ে করেন। সেখানে প্রায় তার মা আট বছর সংসার করেন। পরে মজিবর রহমান মারা গেলে তার মা বগুড়া ইসলামপুর হরিগাড়িতে হাসান জুট মিলে শ্রমিক হিসেবে যোগদান করেন। সেখানে কর্মরত থাকা অবস্থায় শাহীন আলমের সঙ্গে বিয়ে হয়। লিটন তার মায়ের খুনির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।