মিলন হত্যাকাণ্ড: পুলিশসহ ২১ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি

nonameনোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে ডাকাত সন্দেহে পুলিশের উপস্থিতিতে কিশোর শামছুদ্দিন মিলনকে (১৬) পিটিয়ে হত্যার মামলায় ২৮ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র গ্রহণ করেছে আদালত। একই সঙ্গে কোম্পানীগঞ্জ থানার তৎকালীন এসআই মো. আকরাম শেখসহ পলাতক ২১ আসামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। রবিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) নোয়াখালী আমলী আদালত ২নং এর বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এস এম মোসলেহ উদ্দিন মিজান এই পরোয়ানা জারি করেন।

আদালত সূত্রে জানা যায়, নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার চর কাঁকড়া ইউনিয়নের বাসিন্দারা ২০১১ সালের ২৭ জুলাই ছয় ডাকাতকে পিটিয়ে হত্যা করে। ঐদিন সকালে চর ফকিরা গ্রামের বাড়ি থেকে উপজেলা সদরে যাচ্ছিলেন কিশোর মিলন। পথে চর কাঁকড়া একাডেমি স্কুলের সামনে থেকে তাকে ডাকাত সন্দেহে আটক করে পুলিশের গাড়িতে তুলে দেয় স্থানীয়রা। কোম্পানীগঞ্জ থানার তৎকালীন এসআই মো. আকরাম শেখের নেতৃত্বে একদল পুলিশ তাকে থানায় না নিয়ে টেকের বাজারে গাড়ি থেকে নামিয়ে উত্তেজিত জনতার হাতে ছেড়ে দেয়। পরে বিক্ষুব্ধ জনতা কিশোর মিলনকে পুলিশের উপস্থিতিতে পিটিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে। ঘটনার কয়েকদিন পর মোবাইলে ধারণকৃত ভিডিওচিত্র ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় মিলনের মা কোহিনুর বেগম একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

২০১৫ সালের জুলাই মাসে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নোয়াখালী জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি-ডিবি) আতাউর রহমান ভূঁইয়া (বর্তমানে অন্য জেলায় কর্মরত) মামলা তদন্তে ভিডিও চিত্র দেখে হত্যার ঘটনায় শনাক্ত হওয়া ২৭ ব্যক্তি ও চার পুলিশ সদস্যসহ ৩১ জন আসামি সবাইকে মামলা থেকে অব্যাহতি দিয়ে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। ডিবি-পুলিশের চূড়ান্ত প্রতিবেদনের ওপর শুনানি শেষে আদালত প্রতিবেদনটি গ্রহণ না করে মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য ২০১৬ সালের জানুয়ারিতে সিআইডিকে নির্দেশ দেন। অধিকতর তদন্ত শেষে গত ৯ মার্চ অভিযোগপত্র জমা দেন সিআইডির কুমিল্লা ও নোয়াখালী অঞ্চলের অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার জালাল উদ্দিন আহম্মদ।

নতুন অভিযোগপত্রে চর কাঁকড়া ইউনিয়ন পরিষদের তৎকালীন সদস্য জামাল উদ্দিন, তাঁর সহযোগী মিজানুর রহমান মানিকসহ ২৯ জনকে আসামি করা হয়। এর মধ্যে একজনের মৃত্যু হওয়ায় তাকে অভিযোগপত্র থেকে বাদ দেয়া হয়। মামলার আসামিদের মধ্যে ৭ জন জামিনে ও বাকিরা পলাতক রয়েছে।