আশ্রয়কেন্দ্রে উপকূলবাসী

০০০

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’-এর প্রভাবে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত জারির পরও উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষকে দুপুর পর্যন্ত আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে আগ্রহ দেখায়নি। তবে শনিবার (৯ নভেম্বর) বিকাল থেকে আশ্রয়কেন্দ্রমুখী হয়েছেন তারা। সন্ধ্যা থেকে আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে মানুষের উপস্থিতি লক্ষ করা গেছে। বিভিন্ন জেলা থেকে পাওয়া খবরে জানা যায়, আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে আশ্রয় নিয়েছেন উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মানুষ। 

বরগুনা প্রতিনিধি জানান, প্রথম দিকে কেউ আশ্রয়কেন্দ্রে না গেলেও বিকাল থেকে আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে ছুটেছেন প্রান্তিক উপকূলের মানুষ। ঘূর্ণিঝড় বুলবুল এর ক্ষয়ক্ষতি থেকে রক্ষা পেতে বরগুনার ৫১১টি আশ্রয়কেন্দ্রে ১ লাখ ৮ হাজার ৯৬৩ জন মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। এছাড়াও এসব আশ্রয়কেন্দ্রে গরু, ছাগল ভেড়াসহ ২০ হাজারের মতো গবাদি পশু ও ৩০ হাজারের অধিক হাঁস মুরগি আশ্রয় নিয়েছে। বরগুনার জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ এসব তথ্য জানিয়েছেন।

বিকালের পর বরগুনা সদর উপজেলার, পোটকাখালী, কেওড়াবুনিয়া, বুড়িরচর, নলটোনা, এম বালিয়াতলী, ডালভাঙা, নলী, মাঝেরচর ও গুলিশাখালী এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে- এসব এলাকার অধিকাংশ বাসিন্দারা আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে শুরু করেছেন। কেউ কেউ ঘর তালাবদ্ধ করে পরিবার পরিজন ও গবাদি পশু নিয়ে ছুটছেন। আবার অনেকে পৈত্রিক সম্পত্তি ও ঘর ছেড়ে যেতে চাইছেন না আশ্রয়কেন্দ্রে।

বরগুনা সদর উপজেলার পোটকাখালী এলাকার বাসিন্দা কামাল বলেন, ‘যে পরিস্থিতি তাতে মনে হয় সিডরের মতো অবস্থা হবে। সিডরের সময় এইরকম অবস্থা হয়েছিল। তখন আমরা আশ্রয়কেন্দ্রে না গিয়ে অনেক ভুল করেছিলাম, এবার আর সেই ভুল করতে চাই না।’

সদর উপজেলার নলী এলাকার সাহিদা নামের এক গৃহবধূ জানান, ‘ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানবে শুনেছি। মাইকিংও করা হয়েছে কিন্তু সাইক্লোন শেল্টারে যে যাবো, সেই অবস্থা নেই। সাইক্লোন শেল্টারগুলোতে নারী ও শিশুদের জন্য কোনও সুব্যবস্থাই রাখা নেই।’  

এবিষয়ে জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ বলেন, ‘১০ নম্বর মহা বিপদ সংকেত চলছে। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় যে যেভাবে যেখানেই থাকুক না কেন, স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সবাকে নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে আসার জন্য।’

তিনি আরও বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। প্রস্তুত রয়েছে ৫০৯টি আশ্রয় কেন্দ্র, ৪২টি মেডিক্যাল টিম, ৮টি জরুরি সেবা কেন্দ্র ও সিপিপি, রেডক্রিসেন্টসহ বিভিন্ন সেচ্ছাসেবী সংগঠনের ১০ হাজার স্বেচ্ছাসেবক।’

 ১২১

বাগেরহাটের রামপাল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তুষার কান্তি পালের বরাত দিয়ে বাগেরহাট প্রতিনিধি জানান, শনিবার বিকাল ৫টা পর্যন্ত সাড়ে ১২ হাজার লোক আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছে। সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে এই সংখ্যা বাড়ছে।

শরণখোলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সরদার মোস্তফা শাহিন জানান, শরণখোলার চারটি ইউনিয়নে এখন পর্যন্ত ৩০ হাজার লোক আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছে।

মোংলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাহাত মান্নান জানান, উপজেলাবাসীকে আশ্রয়কেন্দ্রে নিতে আড়াই হাজার স্বেচ্ছাসেবক কাজ করছেন। ইতোমধ্যে ১০ হাজার মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছে। এই সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে।

মোরেলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান জানান, ২৬ হাজার মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছে।

চিতলমারী উপেজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মারুফুল আলম জানান, লোকজনকে আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়া যাচ্ছে না। বিকাল পর্যন্ত দেড় শতাধিক মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছে।

এদিকে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত জারির পর জেলা সদরসহ উপকূলে নতুন করে মাইকিং করা হয়েছে। বিকালে জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির জরুরি সভা হয়েছে জেলা প্রশসকের সম্মেলন কক্ষে।

বন্দরের হারবার মাস্টার কমান্ডার শেখ ফকর উদ্দিন জানান, মোংলা বন্দরে অবস্থান করা দেশি-বিদেশি বাণিজ্যিক জাহাজগুলোকে পশুর চ্যানেলে নিরাপদে সরিয়ে আনা হয়েছে। এছাড়া বন্ধ রাখা হয়েছে মোংলা বন্দরে জাহাজ আগমন ও নির্গমনও।  

এদিকে নিরাপত্তার কারণে সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের শেলারচর, কটকা, কচিখালী, আলোরকোল, দুবলাসহ বন বিভাগের ৬টি অফিস বন্ধ করে সব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে সরিয়ে আনা হয়েছে বলে জানান সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মাহমুদুল হাসান।

সুন্দরবনসহ বাগেরহাটের উপকূলীয় এলাকায় ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী উদ্ধার তৎপরতা চালাতে নৌবাহিনীর ১০টি জাহাজসহ চারশ’ নৌসেনা, মোংলা বন্দরের তিনটি জাহাজ এমটি সুন্দরবন, এমটি শিপসা ও এমটি অগ্নিপ্রহরী প্রস্তুত রয়েছে।  একইভাবে কোস্টগার্ডের সিজিএস কামরুজ্জামান, মুনসুর আলী, স্বাধীন বাংলা, সোনার বাংলা, অপারেজয় বাংলাসহ ১০টি জাহাজ ও সুন্দরবন বিভাগের ছয়টি প্রস্তুত রাখা হয়েছে উদ্ধার তৎপরতার চালানোর জন্য। 

 

২২২

খুলনা প্রতিনিধি জানান, খুলনার চার উপজেলার ২৮৫ কেন্দ্রে এক লাখ ৪০ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। উপজেলাগুলো হচ্ছে- কয়রা, দাকোপ, পাইকগাছা ও বটিয়াঘাটা। খুলনা জেলা প্রশাসন কন্ট্রোল রুম থেকে এই তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। 

জানা গেছে, ঘূর্ণিঝড় বুলবুল পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবিলায় ত্রাণের জন্য ৪শ’ মেট্রিক টন চাল মজুদ আছে। ৬০ হাজার পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেটও মজুদ রয়েছে। পাশাপাশি ৩০টি পানি পরিশোধন প্লান্টও সক্রিয় রাখা হয়েছে। ইতোমধ্যেই ঝুকিপূর্ণ এলাকায় প্যাকেটজাত শুকনা খাবার পাঠানো হয়েছে। এছাড়া নৌবাহিনীর ৫টি জাহাজ প্রস্তুত রয়েছে ত্রাণ নিয়ে।

প্রতিটি উপজেলার পাঁচটি করে মেডিক্যাল টিম ও দুটি করে অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত রয়েছে।

এছাড়া খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি বিশেষ মেডিক্যাল টিম প্রস্তুত রয়েছে। জেলা প্রশাসন থেকে সার্বিক পরিস্থিতি মনিটরিং ও প্রয়োজনীয় কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে।

 ৩২১

নোয়াখালী প্রতিনিধি জানান, হাতিয়া, সুবর্ণচর ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার উপকূলীয় অঞ্চলের ৩৪৫টি আশ্রয়কেন্দ্রে প্রায় ২৯ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন ও কয়েক হাজার গবাদিপশুকে উঁচু স্থানে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

জেলা নিয়ন্ত্রণ কক্ষের দায়িত্বে থাকা ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ইসরাত সাদরিন জানান, দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার নিঝুম দ্বীপ ও ঢালচরের প্রায় ১৫ হাজার ২শ’, সুবর্ণচর উপজেলার মোহাম্মদপুর, জনতার ঘাট, সোলায়মান বাজার ও শান্তির হাট এলাকার ৫ হাজার, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার চর এলাহী, চর হাজারী ও মুছাপুরের ৮ হাজার ৮শ’ মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করছে। মজুদ রাখা হয়েছে পর্যাপ্ত শুকনো খাবার ও নগদ অর্থ। সব ধরনের নৌ-যান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।

আরও জানানো হয়, জেলা প্রশাসন সব ধরনের পূর্ব প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। চট্টগ্রামে ৯ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেওয়ার পর উপকূলীয় উপজেলা হাতিয়া, সুবর্ণচর ও কোম্পানীগঞ্জের লোকজনকে নিরাপদ আশ্রয়ে নেওয়ার জন্য রেড ক্রিসেন্টের স্বেচ্ছাসেবক দলকে সতর্ক রাখা হয়েছে এবং বিভিন্ন স্থানে জনগণকে নিরাপদে আশ্রয়ে নেওয়ার জন্য মাইকিং করা হচ্ছে। দুপুর ২টার পর থেকে হাতিয়ার আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে লোকজন আসতে শুরু করেছে। এসব আশ্রয়কেন্দ্রে পানি ও শুকনো খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

এদিকে তিনটি উপজেলার ৬২৪০ জন স্বেচ্ছাসেবক এবং প্রয়োজনীয় সংখ্যক ওষুধসহ ১১টি মেডিক্যাল টিম ও প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

জেলা প্রশাসক তন্ময় দাস জানান, প্রতিটি উপকূলীয় উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষা করে সকল প্রকার নির্দেশনা প্রদান করা হচ্ছে।

 ২১

ফেনী প্রতিনিধি জানান, উপকূলীয় সোনাগাজী উপজেলায় দুর্যোগকালীন উদ্ধার তৎপরতাসহ বিভিন্ন কাজের জন্য সিপিপির দেড়হাজার স্বেচ্ছাসেবকসহ দুই হাজার কর্মী প্রস্তুত রয়েছেন। মওজুদ রাখা হয়েছে শুকনো খাবার। এছাড়াও পরিস্থিতি মোকাবিলায় অর্ধশত আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

জেলা প্রশাসক মো. ওয়াহিদুজজামান বলেন,  ‘জেলায় ৭৬টি মেডিক্যাল টিম প্রস্তুত রয়েছে। এছাড়া প্রয়োজনীয় খাবার স্যালাইনসহ প্রাথমিক ওষুধ মজুদ রাখা হয়েছে।’ দুর্যোগ পরবর্তী সময়ে কৃষি বিভাগ, মৎস বিভাগসহ সম্ভাব্য ক্ষতি মোকাবিলায় সব বিভাগ কাজ করবে বলেও জানান তিনি।

সোনাগাজী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অজিত দেব বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় ও দুর্যোগ মোকাবিলায় এবং জানমালের ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনাসহ জনগণকে সর্তক করার লক্ষ্যে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। অর্ধশত ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্রসহ উপজেলার সব বিদ্যালয়কে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। একটি নিয়ন্ত্রণকক্ষ খোলা হয়েছে এবং ১০টি চিকিৎসক দল, ফায়ার সার্ভিসের সদস্যদের প্রস্তুত রাখা হয়েছে।’

পরিস্থিতি মোকাবিলায় মানুষের জন্য ৫ হাজার মেট্রিক টন চাল, ৬শ’ মেট্রিক টন গম, চিড়া, মুড়িসহ বিশুদ্ধ পানির মজুদ রাখা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

১ি২১

ঝালকাঠি প্রতিনিধি জানান, দুই দিন ধরে বৃষ্টি থাকলেও আশ্রয়ণ কেন্দ্রে যাওয়ার আগ্রহ নেই মানুষের মধ্যে। তবে নদীর তীরবর্তী কিছু মানুষ আশ্রয়ণ প্রকল্পের দিকে ছুটছেন। নলছিটি উপজেলার সুগন্ধা নদীর নিকটবতী ভৈরবপাশা ও মড়গ এবং রাজাপুর উপজেলার বিশখালি নদীর পাড়ের বড়ইয়া ও মঠবাড়ি ইউনিয়নের কয়েকটি আশ্রয়ণ কেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছেন অনেক মানুষ।

রাজাপুর উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মনিরউজ্জামান মনির জানান, ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় সব প্রস্তুতি সম্পন্ন রয়েছে। প্রচুর পরিমাণ শুকনো খাবার মজুত করা হয়েছে। বিভিন্ন আশ্রয়ণ কেন্দ্রে চিড়া, গুড় ও মুড়ি সরবরাহ করা হয়েছে। রাতে খিচুড়ি পাক করে খাওয়ানো হবে।

জেলা প্রশাসক মো. জোহর আলী বলেন, ‘জেলায় ৭৪টি সাইক্লোন সেন্টার, স্কুল-কলেজ প্রস্তুত রাখা  হয়েছে। জেলা পর্যায়ের সব কর্মকর্তা ও কর্মচারীর ছুটি বাতিল করা হয়েছে। প্রতিটি উপজেলায় একটি করে কন্ট্রোলরুম খোলা হয়েছে। আশ্রয়ণ কেন্দ্রের জন্য ৭ লাখ টাকা, ১১২ মেট্রিক টন চাল ও ২ হাজার মেট্রিক টন শুকনো খাবার প্রস্তুত রাখা হয়েছে।’ 

২১১১১১১

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি জানান, শনিবার (৯ নভেম্বর) কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে ঘূর্ণিঝড় বুলবুল মোকাবিলায় জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এসময় জেলা প্রশাসক মো. আসলাম হোসেন জানান, ঝড় মোকাবিলায় বিভিন্ন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ২৪ ঘণ্টা সেবা নিশ্চিত করতে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে কন্ট্রোল রুম খোলা রাখা, প্রত্যেক ইউনিয়নে জনগণকে নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে ব্যাপক মাইকিং, সিভিল সার্জনের নেতৃত্ব ৯৯টি মেডিক্যাল টিম গঠন ও ফায়ার সার্ভিসকে সদা প্রস্তুত রাখা।

তিনি আরও জানান, ইসলামিক ফাউন্ডেশন সব মসজিদের ইমামদের মাধ্যমে মসজিদের মাইক হতে জনগণকে নিরাপদে যেতে আহ্বান করবেন।

এ ছাড়াও বিদ্যুৎ বিভাগের সার্বক্ষণিক মোবাইল টিম রেডি রাখা আছে, যা ইতোমধ্যেই কাজ শুরু করেছে।

২১১১১১১১১

পিরোজপুর প্রতিনিধি জানান, পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার বেতমোর রাজপাড়া ইউনিয়নের মাঝের চরের লোকজনকে বলেশ্বর নদীর এপারে সরিয়ে আনা হয়েছে। বেতমোর রাজপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান মো. দেলোয়ার হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, মাঝের চরে চারশ’ পরিবার বসবাস করে। ইতোমধ্যে তাদের অধিকাংশকেই সরিয়ে আনা হয়েছে।

মঠবাড়িয়ার শাপলেজা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মিরাজ মিয়া জানান, লোকজন আশ্রয়কেন্দ্রে উঠছে। তাদের শুকনা খাবার সরবারহ করা হবে।

জেলা প্রশাসক আবু আলী মো. সাজ্জাদ হোসেন জানান, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। প্রত্যেকটি ইউনিয়নে একটি করে মেডিক্যাল টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এছাড়া জেলার ২২২টি সাইক্লোন শেল্টার প্রস্তুত রাখার জন্যও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

মঠবাড়িয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মর্তা জিএম সরফরাজ জানান, উপজেলার ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে তুষখালী,বড়মাছুয়া, আমড়াগাছিয়া,সাপলেজা, বেতমোড় ইউনিয়নসহ সিপিপির প্রতিটি ইউনিটে সতর্ক সংকেত হিসেবে লাল পতাকা উত্তোলন করা হয়েছে।

৭৮৯০

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি জানান, বিকাল সাড়ে ৪টার পর থেকে বাতাসের তীব্রতা বেড়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছেন কমপক্ষে ১ লাখ ৩৫ হাজার মানুষ। এছাড়াও পুলিশ,বিজিবি, নৌবাহিনী ও কোস্ট গার্ডের সমন্বয়ে গঠিত টিম উপকূলবর্তী মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়ার কাজ শুরু করেছে। সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। হাসপাতাল ও কমিউনিটি ক্লিনিক সার্বক্ষণিক খোলা রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার কামরুজ্জামান বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় বুলবুল আঘাত হানলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভবনা গাবুরা এবং পদ্মপুকুরের বুড়িগোয়ালীনি ইউনিয়নে। আমার ইতোমধ্যে ঝূর্কিপূর্ণ এলাকার মানুষদের নিরাপদে সরিয়ে নিতে সক্ষম হয়েছে। অধিকাংশ মানুষ এখন সাইক্লোন শেল্টারে অবস্থান করছেন।’

২১১১১১১১১১১১১১১১১১১১১১১১১১১১১১

জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক এস এস মোস্তফা কামাল জানান, ২৭০টি আশ্রয় কেন্দ্রে ১ লাখ ৩৫ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। দুর্যোগ কবলিতদের সহায়তার জন্য ৩১০ মেট্রিক টন চাল, নগদ ৫ লাখ ৪২ হাজার টাকা, ২ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার, ২৭ হাজার পিস পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট ও পর্যাপ্ত ওষুধপত্র মজুদ রাখা হয়েছে। একই সঙ্গে দুর্যোগ পূর্ববর্তী, দুর্যোগকালীন এবং দুর্যোগ পরবর্তী তিন স্তরে কাজের জন্য প্রশিক্ষিত ২২ হাজার স্বেচ্ছাসেবকসহ ৮৫টি মেডিক্যাল টিম প্রস্তুত রয়েছে। এছাড়া শিশুদের জন্য ১ লাখ টাকা ও গবাদি পশুর জন্য আরও ১ লাখ টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। উপকূলীয় উপজেলা শ্যামনগর, আশাশুনি ও কালিগঞ্জ উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকায় সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। এছাড়া সুন্দরবন সংলগ্ন নদী ও খালে থাকা নৌযানগুলিকে উপকূলবর্তী নিরাপদ স্থলে আনা হয়েছে।

সাতক্ষীরা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জুলফিকার অলী জানান, বিকাল ৩টা পর্যন্ত সাতক্ষীরায় ৪০.৪ মিলি লিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। বাতাসের আর্দ্রতা ৯৬ শতাংশ।

 আরও পড়ুন...

উপকূলে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত

যে কারণে এবারও ৯১ সালের মতো ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়ের শঙ্কা

সুন্দরবন দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করবে ‘বুলবুল’

‘বুলবুল’ মোকাবিলায় সরকার ও দল সর্বোচ্চ প্রস্তুত: ওবায়দুল কাদের

আশ্রয়কেন্দ্রে যাচ্ছেন উপকূলবাসী

‘বুলবুল’ মোকাবিলায় সাতক্ষীরায় সেনা মোতায়েন

স্বাস্থ্য বিভাগের ছুটি বাতিল, দুর্যোগ মোকাবিলায় ৮ নির্দেশনা

ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ মোকাবিলায় প্রস্তুত সরকার: নৌ প্রতিমন্ত্রী

দুর্গতদের যেকোনও প্রয়োজনে ৯৯৯-এ কল করার অনুরোধ

 সারাদেশে নৌ চলাচল বন্ধ

উপকূলে ৭ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসের শঙ্কা

১৩ জেলার সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি বাতিল