নবান্নে হরেক রকমের মাছের মেলা

বগুড়ায় মাছের মেলাবাংলা পঞ্জিকা অনুসারে সোমবার পহেলা অগ্রহায়ণ হওয়ায় বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলার সনাতন ধর্মাবলম্বীরা নবান্ন উৎসব পালন করেছেন। ঐতিহ্যবাহী এ উৎসবে প্রধান আকর্ষণ ছিল হরেক রকম মাছ। এ উপলক্ষে বিভিন্ন হাট-বাজারে মাছের মেলা বসে। দাওয়াতে আসা মেয়ে-জামাই ও আত্মীয়-স্বজনকে মাছ, নতুন চালের ভাত ও সবজি দিয়ে আপ্যায়ন করা হয়।
নন্দীগ্রাম উপজেলার রণবাঘা ও ওমরপুর বাজারে মাছের মেলা বসে। প্রতিটি দোকানে সাজানো হয়েছিল বোয়াল, রুই, কাতলা, চিতল, সিলভার কার্প, বাঘাআইড়সহ নানা ধরনের মাছ। সর্বোচ্চ ১৪ কেজি ওজনের মাছ বিক্রি হয়েছে।
উপজেলার নামুইট গ্রামের মাছ বিক্রেতা মিন্টু মিয়া জানান, উৎসবকে ঘিরে অনেকে বাড়ির আশপাশের পুকুরে মাছ চাষ করেছেন। নবান্নের কারণে বড় বড় মাছ বিক্রি করতে এনেছেন মেলায়। মাছ বিক্রেতা মোকাব্বর হোসেন জানান, মাছের আকারভেদে একটি মাছ ৮ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে।
উপজেলার নন্দীগ্রাম সদরের অসীম কুমার রায় জানান, তিনি ওমরপুর বাজার থেকে পাঁচ হাজার টাকার মাছ কিনেছেন। দাসগ্রামের বাদল চন্দ্র জানিয়েছে, রুই মাছ ৪৮০ টাকা কেজি, বিগহেড ৫৫০ টাকা কেজি ও চিতল ৯০০ টাকা কেজি দরে কিনেছেন।

জয়পুরহাটে মাছের মেলাজয়পুরহাটে মাছের মেলায় ঢল
জয়পুরহাট প্রতিনিধি জানিয়েছেন, নবান্ন উৎসব ঘিরে জমে উঠেছে কালাই উপজেলার পাঁচশিরা মাছের মেলা। মেলায় দেশি নানা জাতের মাছ আনেন আয়োজকরা। রুই, কাতলা, চিতল ও বোয়ালসহ বড় বড় মাছ কিনতে আসেন ক্রেতারা। ২০ কেজি পর্যন্ত ওজনের মাছ উঠেছে মেলায়। সোমবার দিনব্যাপী এ মেলায় লোক সমাগমও ব্যাপক হয়েছে। বড় বড় মাছ কিনতে উৎসুক জনতার ঢল নামে মেলায়।
মেলায় অংশ নেন উপজেলার মাত্রাই, হাতিয়র, হারুঞ্জ, পুনট ও পাঁচগ্রামসহ আশপাশের প্রায় ২৫ থেকে ৩০ গ্রামের মানুষ। ঘরে ঘরে এ উৎসবকে ঘিরে প্রতিটি বাড়িতেই মেয়ে-জামাইসহ স্বজনদের আগে থেকেই দাওয়াত দেওয়া হয়।
এবারের মেলায় বিশাল আকৃতির একটি মাছ মাথার ওপর তুলে ক্রেতা আকর্ষণের চেষ্টা করেন কালাই উপজেলার হাতিয়র গ্রামের মাছ বিক্রেতা গোলাম রব্বানী। তিনি ১৫ কেজি ওজনের সিলভার কার্প মাছটির দাম হাঁকেন ১১ হাজার টাকা। ২০০ থেকে ৬০০ টাকা কেজি দরে ব্রিগেড ও সিলভার কার্প বিক্রি হয়। রুই ও কাতলা মাছ বিক্রি হয় ৩০০ থেকে ৬০০ টাকা কেজি দরে।
স্থানীয় মাছ চাষি মাহমুদ হাসান বলেন, মেলা উপলক্ষে এক বছর ধরে পুকুরে মাছ চাষ করেছি। বাছাই করে বড় বড় মাছ মেলায় বিক্রি করতে এনেছি। মানুষের সাড়াও মিলেছে বেশ।
নওগাঁর ধামুইরহাট উপজেলা থেকে মেলায় এসেছেন অপর্ণা কর্মকার। তিনি বলেন, মাছের প্রচুর সরবরাহের পাশাপাশি মেলায় ক্রেতা ও দর্শনার্থীদের ব্যাপক সমাগম দেখে বেশ ভালো লাগছে। মনে হচ্ছে, আমরা হারাইনি, বাঙালি সংস্কৃতি আমাদের মাঝে এখনও জীবন্ত আছে।