প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মুক্তিযুদ্ধ কর্নারসহ নানা ব্যতিক্রমী উদ্যোগ

মুক্তিযুদ্ধ কর্নার ও মহানুভবতার আলমারিমানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার প্রত্যন্ত একটি গ্রামে ৬২ নং কচুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবস্থান। বিদ্যালয়টিতে রয়েছে ব্যতিক্রমী বেশ কিছু উদ্যোগ। সেখানে রয়েছে– বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ,ছেষট্টির ছয় দফা কর্মসূচি, বঙ্গবন্ধুর পারিবারিক দুর্লভ ছবি, বঙ্গবন্ধু বিষয়ক বুক কর্নার, বঙ্গবন্ধু কর্নারসহ নানান আয়োজন। এসব আয়োজনের পাশাপাশি উদ্বোধন করা হলো মুক্তিযুদ্ধ কর্নার ও মহানুভবতার আলমারি।

জেলা প্রশাসক এসএম ফেরদৌস মঙ্গলবার বিকালে বিদ্যালয়টির দোতলার একটি কক্ষে স্থাপিত মুক্তিযুদ্ধের কর্নার ও মহানুভবতার আলমারির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। অনুষ্ঠানে হরিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাবিনা ইয়াসমিন, সহকারী কমিশনার (ভূমি) বিল্লাল হোসেন, বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সভাপতি আব্দুল মজিদ, প্রধান শিক্ষক নাসরীন আক্তার উপস্থিত ছিলেন।

মুক্তিযুদ্ধ কর্নারে রয়েছে স্বাধীনতা যুদ্ধ নিয়ে বিভিন্ন মূল্যবান বই। আর মহানুভবতার আলমারিতে রাখা হয়েছে স্কুল ড্রেস, জুতা, খাতা-কলমসহ নানান নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী।শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনের অতিরিক্ত এসব পোশাক অপেক্ষাকৃত দরিদ্র শিক্ষার্থীরা নিয়ে নিচ্ছে।

ওই বিদ্যালয়ের প্রতিটি কক্ষে লেখা রয়েছে মনীষীদের মূল্যবান উক্তি। এছাড়া মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেওয়া খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাদের ছবি, ভাষা শহীদদের ছবিসহ নানান বাণী।

মনীষীদের বাণীএ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক নাসরীন আক্তার জানালেন, এসব ছাড়াও বিদ্যালয়টিতে রয়েছে কাব কর্নার, সততা স্টোর, বুক কর্নার, স্টুডেন্ট কাউন্সিল, ক্ষুদে ডাক্তার এবং মোবাইল মাসিদের নামের তালিকা।

কাউন্সিল নির্বাচনে ছাত্র-ছাত্রীরা নিজেদের মধ্যে থেকেই প্রিসাইডিং অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করে। কোনও ছাত্র-ছাত্রী বিদ্যালয়ে না আসলে মোবাইল মাসিরা ফোন করে খোঁজ-খবর নিয়ে তাদের বিদ্যালয়ে আনার ব্যবস্থা করে থাকেন।

বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র ফাহিম মুনতাসির অনীক জানালো, তাদের উদ্দেশ্য ভালো মানুষ হওয়া। তারা তাদের অপ্রয়োজনীয় পোশাক বিদ্যালয়ের মহানুভবতা আলমারিতে এনে জমা করেন যাতে অন্যরা সেগুলো ব্যবহার করতে পারেন।

বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের নামের তালিকাঅনুষ্ঠানে প্রধান শিক্ষক জেলা প্রশাসকের কাছে স্কুলটিতে বিজ্ঞান কর্নার প্রতিষ্ঠার জন্য আর্থিক সহযোগিতা চাইলে তিনি ২৫ হাজার টাকা দেওয়ার আশ্বাস দেন। এ সময় তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র অনীকের সাধারণ জ্ঞানের গভীরতায় মুগ্ধ হয়ে জেলা প্রশাসক তাকে পুরস্কৃত করার ঘোষণা দেন।

জেলা প্রশাসক জানালেন,বিদ্যালয়টির ওপর একটি ডকুমেন্টারি তৈরি করে তা প্রতিটি বিদ্যালয়কে অনুসরণ করতে বলবেন।