তবে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিভিল সার্জন ডা. মো. শাহআলম বিএমএর ঘোষণা করা হাসপাতালের চিকিৎসকদের কর্মবিরতির বিষয়ে দ্বিমত পোষণ করেছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর এলাকার মুন্সেফপাড়ায় ডা. ডিউক চৌধুরীর মালিকানাধীন খ্রিষ্টিয়ান মেমোরিয়াল হাসপাতালে প্রসবজনিত কারণে ভর্তি হয়ে একটি কন্যা সন্তান প্রসব দিয়ে মারা যান ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর এলাকার ক্রিসেন্ট কিন্ডার গার্টেনের সহকারী শিক্ষিকা নওশীন আহমেদ দিয়া। চিকিৎসকদের ভুল চিকিৎসায় শিক্ষিকা দিয়া মারা গেছেন এই অভিযোগে খ্রিষ্টিয়ান মেমোরিয়াল হাসপাতালের পরিচালক ডা. ডিউক চৌধুরী, ডা. অরুনেশ্বর পাল চৌধুরী ও রাসেল আহমেদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন শিক্ষিকা দিয়ার বাবা শিহাব উদ্দিন গেন্দু।
এই মামলায় অভিযুক্ত তিন চিকিৎসককে জেল হাজতে পাঠান জেলা ও দায়রা জজ আদালত। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিএমএ ভবনে সংগঠনটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভা শেষে বিএমএ’র ভারপ্রাপ্ত জেলা সভাপতি ডা. সুখেন্দু বিকাশ তালুকদার স্বাক্ষরিত একটি বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ৪ জানুয়ারি থেকে চিকিৎসকদের আন্দোলন কর্মসূচি শুরু হবে। চার জানুয়ারি থেকে পরবর্তী সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত চিকিৎসকদের প্রাইভেট প্র্যাকটিসও বন্ধ থাকবে।
এছাড়া ৫ ও ৬ জানুয়ারি সদর হাসপাতালের সামনে মানববন্ধন শেষে দুপুর ১২ থেকে ২টা পর্যন্ত বর্হিবির্ভাগে চিকিৎসা সেবা বন্ধসহ নিরাপত্তাহীনতার কারণে ৭ জানুয়ারি সরকারি ও বেসরকারি সব পর্যায়ে চিকিৎসা সেবা বন্ধ রাখার কথা উল্লেখ করা হয়।
তবে জরুরি চিকিৎসা ও জরুরি অপারেশন বিএমএ ভবন নিয়ন্ত্রণ সেলের মাধ্যমে সমন্বয় করা হবে বলে প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
জেলা বিএমএ সাধারন সম্পাদক ডা. মো. আবু সাঈদ বলেন, ‘ডা. ডিউকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের অভিযোগ থাকতে পারে। তবে আমরা তার পাশে আছি। একজন চিকিৎসকের ভুল চিকিৎসায় কেউ মারা গেল কিনা সে বিষয়টি প্রমাণ না হওয়া পর্যন্ত জেলে থাকার বিষয়টি মানার মতো না। এমন ধারা অব্যাহত থাকলে চিকিৎসকদের প্রতি মানুষের আস্থা যেমন কমবে, তেমনি ভবিষ্যতে যে কারো বিরুদ্ধে অহেতুক মামলা হয়ে যাবে।’
পুলিশ কোনও ধরণের তদন্ত না করেই মামলা নথিভুক্ত করায় তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
২৫০ শয্যা বিশিষ্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. শওকত হোসেন বলেন, ‘বিএমএর সভায় কিছু সিদ্ধান্ত হয়েছে। কেউ যদি এ সিদ্ধান্তের প্রতি একাত্মতা পোষণ করে সেবা বন্ধ রাখে তাহলে বিকল্প ব্যবস্থায় সেবা নিশ্চিত করা হবে।’
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিভিল সার্জন ডা. মো. শাহ আলম বলেন, ‘বিএমএর সভায় আমি উপস্থিত থাকলেও সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় চলে এসেছি। হাসপাতালে কর্মবিরতি দেওয়ার পক্ষে আমি না।’ এটা কোনোভাবেই করা যায় না বলে মন্তব্য করেন তিনি।