লালদীঘি মাঠে শেখ হাসিনার জনসভায় গুলি: পাঁচ জনের মৃত্যুদণ্ড

আদালতচট্টগ্রামের লালদীঘি মাঠে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার জনসভায় গুলি চালিয়ে ২৪ জনকে হত্যার মামলায় পাঁচ জনকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। সোমবার (২০ জানুয়ারি) বেলা ৩টায় চট্টগ্রামের বিশেষ জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক চট্টগ্রাম জেলা ও দায়রা জজ মো. ইসমাইল হোসেন রায় ঘোষণা করেন। আট আসামির মধ্যে তিন জন আগেই মারা গেছেন। 

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন−পুলিশের তৎকালীন হাবিলদার প্রদীপ বড়ুয়া, কনস্টেবল মমতাজ উদ্দিন, মোস্তাফিজুর রহমান, মো. আব্দুল্লাহ ও ইন্সপেক্টর গোপাল চন্দ্র (জেসি) মণ্ডল। জেসি মণ্ডল ছাড়া অন্য আসামিরা রায় ঘোষণার সময় উপস্থিত ছিলেন। জেসি মণ্ডল পলাতক।  এ মামলার অপর আসামির মধ্যে প্রধান আসামি চট্টগ্রামের তৎকালীন পুলিশ কমিশনার মীর্জা রকিবুল হুদা, কনস্টেবল বশির উদ্দিন ও আব্দুস সালাম আগেই মারা গেছেন।

আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। বাংলা ট্রিবিউনকে তিনি বলেন, ‘আজ সকালে আসামিপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন করার কথা ছিল। আসামিপক্ষ যুক্তি উপস্থাপন না করায় আদালতের বিচারক বিকালে এ রায় ঘোষণা করলেন।’

তিনি আরও জানান, ‘আসামিদের বিরুদ্ধে পৃথক চারটি ধারায় অভিযোগ গঠন করা হয়েছিল। এসব ধারায় বিভিন্ন মেয়াদে সাজা হয়েছে আসামিদের। হত্যার সঙ্গে সরাসরি জড়িত থাকায় ৩০২ ধারায় পাঁচ আসামিকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। অন্যদিকে ৩২৬ ধারায় প্রত্যেক আসামিকে ১০ বছর সশ্রম কারাদণ্ড এবং ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।’

রায়ে রাষ্ট্রপক্ষ সন্তোষ প্রকাশ করেছে। তবে রায়ের সময় আসামিপক্ষের কোনও আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন না। 

এর আগে গতকাল রবিবার (১৯ জানুয়ারি) আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন করা হয়। গত ১৪ জানুয়ারি মামলাটির সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়। সেদিন আদালতে এই মামলার ৫৩তম সাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দেন আইনজীবী শম্ভুনাথ নন্দী।

প্রসঙ্গত, ১৯৮৮ সালের ২৪ জানুয়ারি চট্টগ্রামের লালদীঘি মাঠে আওয়ামী লীগের জনসভা ছিল। ওই দিন বেলা ১টার দিকে শেখ হাসিনাকে বহনকারী ট্রাকটি আদালত ভবনের দিকে আসার সময় গুলিবর্ষণ শুরু হয়। পুলিশের গুলিতে ওইদিন ২৪ জন মারা যান। ঘটনার চার বছর পর ১৯৯২ সালের ৫ মার্চ আইনজীবী মো. শহীদুল হুদা বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন। ১৯৯৭ সালের ১২ জানুয়ারি প্রথম দফায় অভিযোগপত্র দাখিলের পর অধিকতর তদন্ত শেষে ১৯৯৮ সালের ৩ নভেম্বর দ্বিতীয় দফায় অভিযোগপত্র জমা দেন তদন্ত কর্মকর্তা। অভিযোগপত্রে আট পুলিশ সদস্যকে আসামি করা হয়। আসামিদের মধ্যে তিনজন ইতোমধ্যে মারা গেছেন। আরেকজন পলাতক রয়েছেন। বাকি চার জন আজ আদালতে উপস্থিত ছিলেন।