বেশি বেতনে চাকরির কথা বলে বিদেশে ড্যান্স বারে নারী পাচার করতো তারা

আটক আট জনউচ্চ বেতনে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে বিদেশে ড্যান্স বারে নারী পাচার করতো চক্রটি। আন্তর্জাতিক অপরাধীদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জসহ বিভিন্ন জেলার তরুণীদের পাচার করে আসছিল তারা। এই চক্রের আট সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে ট্রাভেল এজেন্সি ও নাচের প্রশিক্ষণকেন্দ্রসহ ড্যান্সক্লাবের মালিকও রয়েছে। রবিবার রাতে রাজধানীর কামরাঙ্গীরচর, কেরাণীগঞ্জ ও মুগদা এলাকায় অভিযান চালিয়ে দুই নারীকে উদ্ধার ও এই আটজনকে র‍্যাব গ্রেফতার করে। এসময় তাদের কাছ থেকে জব্দ করা হয়েছে নারীদের বিপুল পরিমাণ পাসপোর্ট, ভিসার ফটোকপি ও পাচারের কাজে ব্যবহৃত নথিপত্রসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম।

সোমবার (২৭ জানুয়ারি) দুপুরে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে র‌্যাব-১১ সদর দফতরে সংবাদ সম্মেলনে গণমাধ্যমকে এসব তথ্য জানান র‍্যাবের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আলেপ উদ্দিন।

গ্রেফতারকৃতরা হলো- রাজধানীর কাকরাইল এলাকার ধানসিঁড়ি ট্রাভেল এজেন্সির মালিক শাহাবুদ্দিন, নারায়ণগঞ্জের একটি নাচের প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের মালিক রিজভী হোসেন অপু, পাচারকারী চক্রের এজেন্ট হৃদয় আহম্মেদ কুদ্দুস, মামুন, স্বপন হোসেন, শিপন, মুসা ও এই চক্রের নারী সদস্য শিল্পী আক্তার।র‍্যাবের সংবাদ সম্মেলন

র‌্যাব জানায়, ইতোপূর্বে নারী পাচারকারী চক্রের ছয় সদস্য র‌্যাবের অভিযানে গ্রেফতার হয়। এরপরই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নজর এড়াতে এই চক্রের অন্য সদস্যরা পাচারের কৌশল পরিবর্তন করে। সরাসরি দুবাই ও মালয়েশিয়া পাচার না করে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতসহ আরও কয়েকটি দেশকে ট্রানজিট পয়েন্ট হিসেবে ব্যবহার করতে শুরু করে তার। এই চক্রটি দেশের বিভিন্ন পোশাক কারখানায় কর্মরত নিম্নবিত্ত নারী শ্রমিক, তালাকপ্রাপ্ত ও পারিবারিক সমস্যার শিকার তরুণীদের টার্গেট করে নাচ শিখিয়ে বিদেশে ডান্স বারে উচ্চ বেতনে চাকরি দেওয়ার নামে ফাঁদে ফেলে পাচার করে থাকে। এই পাচারের মূল হোতারা হচ্ছে বিভিন্ন ট্রাভেল এজেন্সির মালিক। তাদের সহায়তা করে থাকে দেশের বিভিন্ন নাচের প্রশিক্ষণকেন্দ্র, ডান্সক্লাবের মালিক ও প্রশিক্ষকরা। গত দেড় বছরে এই চক্রটি ১৫ থেকে ২৫ বছর বয়সের সহশ্রাধিক তরুণীকে বিদেশে পাচার করে অবৈধভাবে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।পাচারের কাজে ব্যবহৃত সরঞ্জাম

র‍্যাবের এই কর্মকর্তা জানান, তাদের গোয়েন্দা নজরদারিতে বিষয়টি ধরা পড়লে পাচারকারীদের অবস্থান শনাক্ত করে রবিবার রাতে অভিযান চালিয়ে আটজনকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা প্রত্যেকেই আগের মামলার পলাতক আসামি। তাদের ওই মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।

এর আগে গত ২৩ নভেম্বর নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার তারাবো এলাকা থেকে ডান্সবারে নারী পাচারকারী চক্রের ছয় সদস্যকে গ্রেফতারসহ পাচারের শিকার চার তরুণীকে উদ্ধার করে র‌্যাব।