‘বঙ্গবন্ধু আবাসনে’ ঠাঁই হলো ৩৪ পরিবারের

বঙ্গবন্ধু আবাসন

হতদরিদ্র, স্বামী পরিত্যক্তা, এতিম, বিধবা ও অসহায়— এমন ৩৪টি পরিবারের ঠাঁই হলো বঙ্গবন্ধু আবাসনের ঘরগুলোতে। মুজিববর্ষ উদযাপনের অংশ হিসেবে এবং জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নকে বাস্তবায়নের জন্য এসব আধুনিক ঘরগুলো বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ঘর বরাদ্দ দিয়ে এবং বরাদ্দ পেয়ে খুশি খাগড়াছড়ি পৌর কর্তৃপক্ষ ও সুবিধাভোগীরা।

খাগড়াছড়ি পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী দিলীপ কুমার বিশ্বাস বলেন, ‘খাগড়াছড়ি শহরের কুমিল্লাটিলা এলাকায় মনোরম পরিবেশে গড়ে তোলা হয়েছে ‘বঙ্গবন্ধু আবাসন’। খাগড়াছড়ি পৌরসভা প্রায় ১২ কোটি টাকা ব্যয়ে গড়ে তুলেছে বঙ্গবন্ধু আবাসন প্রকল্প। গত তিন বছর ধরে চলা প্রকল্পের কাজ শেষ হয় গত বছরের ডিসেম্বরে। মুজিববর্ষ উপলক্ষে তা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৩৪টি হতদরিদ্র পরিবারকে । প্রত্যেক প্লটে দুটি থাকার কক্ষ, একটি রান্না ঘর, একটি ডাইনিং, একটি ওয়াশরুম, একটি বারান্দা রয়েছে। আবাসনের মাঝখানে রয়েছে জলাশয়, সেখানে গোসল ও ধোয়া-মোচার ব্যবস্থা আছে। রয়েছে বিদ্যুৎ ও পানির সুবিধা। সব প্লটের সামনে ফুলের বাগান করার জায়গা আছে। বিকালে সবাই গোল ঘরে বসে আড্ডা বা বিশ্রাম নিতে পারবে। আবাসনের ঘর বরাদ্দ পাওয়া পরিবারগুলোর জন্য ময়লা, আবর্জনা ফেলার  সুনির্দিষ্ট ডাস্টবিন আছে। পানি নিষ্কাসনের জন্য আছে ড্রেনেজ ব্যবস্থা। গত ৬ মার্চ আনুষ্ঠানিকভাবে বঙ্গবন্ধু আবাসনের উদ্বোধন করেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রী। বঙ্গবন্ধু আবাসনে বাসা বরাদ্দ পেয়ে খুশি হতদরিদ্র পরিবারের লোকজন।

স্বামী পরিত্যক্তা রহিমা বেগম জানান, এক সময় তিনি ছেলেমেয়ে নিয়ে রাস্তায় রাস্তায় থাকতেন। মেয়র তাকে এবং তার সন্তানদের থাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। তার জন্য তিনি আল্লাহর কাছে দোয়া করেন।

আয়েশা আক্তার নামে আরেকজন বলেন, তার জায়গা-জমি, বাড়ি-গাড়ি কিছুই ছিলো না। তিনি আগে শহরের ইসলামপুরে ভাড়া বাসায় ছিলেন। মেয়র মাথা গোঁজার ঠাঁই করে দিয়েছেন। এজন্য তিনি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

বিলকিছ আক্তার নামে আরেক নারী বলেন, তার স্বামী নেই। আগে তিনি সন্তানদের নিয়ে বাজারে বাজারে থাকতেন। পৌরসভা তার থাকার জন্য পুরো একটি আধুনিক ঘর দিয়েছে। অনেক সরঞ্জামাদিও দিয়েছে। তিনি এতে তিনি ভীষণ খুশি।

খাগড়াছড়ি পৌরসভার মেয়র রফিকুল আলম বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অঙ্গীকার ছিল দেশে কোনও মানুষ ঘরহীন থাকবে না। প্রধানমন্ত্রীর অঙ্গীকার বাস্তবায়নের জন্য শহরের কুমিল্লাটিলা এলাকায় স্বামী পরিত্যক্তা, এতিম, বিধবা, ভূমিহীন ও দুস্থ পরিবারের জন্য বঙ্গবন্ধু আবাসন গড়ে তুলেছি এবং তা বরাদ্দও দিয়েছি। শহরের শালবাগান এলাকায় আরেকটি আবাসন প্রকল্পের কাজ হাতে নিয়েছি এবং তার কাজ শুরু হয়েছে। শেষ হলে তাও অসহায় পরিবারের সদস্যদের বরাদ্দ দেওয়া হবে।’

খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, ‘তিনি আবাসন প্রকল্প দেখে অভিভূত হয়েছেন। শহরের সবচেয়ে হত-দরিদ্ররা এই আবাসনে ঘর পেয়েছেন। তারা খুশি হয়েছেন।’ সরকার সংবিধানের আলোকে খাগড়াছড়ি পৌরসভার মাধ্যমে হত-দরিদ্রদের জন্য যে আবাসন করেছে, তা দেশের আর কোথাও আছে বলে জানা নেই উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘খাগড়াছড়ি পৌরসভার মতো সবাই যদি কাজ করে-সত্যিকার অর্থে মুজিবের বাংলায় কেউ গৃহহীন থাকবে না ‘