করোনায় ‘মানবতার ঘর’

উদ্বোধনের পর মানবতার ঘরে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীর প্যাকেট ও কাপড়সিলেট শহরের সাদিপুর নওয়াগাঁও এলাকায় মসজিদের দেয়াল ঘেষে যাত্রা শুরু করে 'মানবতার ঘর'। দুই দিন আগে যাত্রা শুরু করা মানবতার ঘরটি দরিদ্র ও মধ্যবিত্ত পরিবারের মুখে হাসি ফুটিয়েছে। ন্যাশনাল প্রেস সোসাইটি (গণমাধ্যম ও মানবাধিকার সংস্থা) সিলেট শাখার উদ্যোগে এটি মঙ্গলবার (৩১ মার্চ) যাত্রা শুরু করে। ইতোমধ্যে গত দুদিনে মানবতার ঘর থেকে ৪৮টি নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীর প্যাকেট ও কাপড় নিয়ে গেছেন ভুক্তভোগি পরিবারের সদস্যরা।

বৃহস্পতিবার (২ মার্চ) দুপুর ১২টার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় মানবতা ঘরের অপর প্রান্তের রাস্তায় অপেক্ষা করছের দুই নারী ও এক পুরুষ। তারা মানবতার ঘর থেকে খাদ্যসামগ্রী নেওয়ার জন্য এসেছেন। কিন্তু ওই সময়ে মানবতার ঘরে সামগ্রী শেষ হয়ে গিয়েছিল।

দুই নারী জানান, বাসায় কোনও খাবার নেই। গতরাতে চিড়া ও রুটি খেয়ে ঘুমিয়েছিলেন। কেউ সহযোগিতাও করছে না। গত মঙ্গলবার পাশের ঘরের দুই নারী বুরহান উদ্দিন (রহ.) মাজার থেকে বিকালে বাসায় যাওয়ার সময় দুটি নিত্যপ্রয়োজনীয় খাবারের প্যাকেট নিয়ে গেছেন। তাদের কাছ থেকে মানবতা ঘরের ঠিকানা নিয়ে তারা দক্ষিণ সুরমার একটি গ্রাম থেকে ৬০ টাকা রিকশা ভাড়া দিয়ে এসেছেন।

এ বিষয়ে সংগঠনের সিলেট শাখার সভাপতি মোহাম্ম জুম্মান জানান, মানুষকে সহযোগিতা করার মনোভাব থেকেই এই উদ্যোগ। অনেকেই যখন এই খারাপ সময়ে কারও কাছে গিয়ে সাহায্য চাইতেও পারছেন না। যার কারণেই আমরা নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী প্যাকেট করে ওই ঘরে রাখি। যার প্রয়োজন তারাই এখান থেকে কাপড় ও চাল, ডাল, পেঁয়াজ, তেলসহ  খাবারের প্যাকেট নিয়ে যান। কেউ যাতে একটির বেশি প্যাকেট কিংবা কাপড় নিতে না পারেন সেজন্য স্থানীয় কয়েকজন ব্যবসায়ী ও যুবক এই বিষয় তদারকি করছেন। গত দুদিনে আমরা ৪৮টি প্যাকেট রেখেছিলাম। সেই সঙ্গে কিছু কাপড় সংগ্রহ করার পর সেগুলো লন্ড্রিতে পরিষ্কার করে ঘরটিতে রেখেছিলাম। পর্যায়ক্রমে আমাদের এই কার্যক্রম সিলেট সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন ওয়ার্ডে চালু করা হবে। সমাজের বিত্তবান মানুষেরাসহ সবাই দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জন্য আমাদের সহযোগিতা করবেন বলে আশা করছি।

সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম জানান, মানবতার ঘরে সহয়াতা করার জন্য অনেকেই এগিয়ে এসেছেন। আমরা তাদের সহযোগিতাও নিচ্ছি। এমনকি যারা আমাদের কাছে সহায়তা পৌঁছতে পারবেন না তাদের বাসা-বাড়িতে গিয়ে আমরা তা নিয়ে আসবো। বৃহস্পতিবার (২ মার্চ) সন্ধ্যার দিকে আরও ১৩টি নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীর প্যাকেট ও কিছু কাপড় সেখানে রাখা হবে।