চাল বিতরণে অনিয়ম, ইউপি চেয়ারম্যান গ্রেফতার

বরগুনা

বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার কাকচিড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলাউদ্দীন পল্টুকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। জেলেদের ভিজিএফ চাল বিতরণ না করে আত্মসাতের অভিযোগে শনিবার (৪ এপ্রিল) দুপুরে ইউপি কার্যালয় থেকে আটক করা হয় তাকে।

বরগুনা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হারুন-অর রশীদ এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘চেয়ারম্যান পল্টুর বিরুদ্ধে পাথরঘাটা থানায় চাল বিতরণে অনিয়ম ও আত্মসাতের অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। ওই অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।’

পাথরঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহাব উদ্দীন বলেন, ‘উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) চেয়ারম্যান আলাউদ্দীন পল্টুর বিরুদ্ধে শনিবার সকালে চাল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ করেছেন। ওই অভিযোগ আমলে নিয়ে আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা নিয়েছি।’

অপরদিকে একই ঘটনায় জেলা মৎসজীবী সমিতির সভাপতি গোলাম কবির জেলেদের পক্ষে পাথরঘাটা থানায় চেয়ারম্যান আলাউদ্দীন পল্টু, ইউপি সচিব জাহাঙ্গীর, খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল কালাম, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা নাসরিন সুলতানা ও ট্যাগ অফিসার রনজিত মিস্ত্রি এবং গ্রাম পুলিশ আবুল কালামকে আসামি করে একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।

গোলাম কবীর বলেন, ‘কাকচিড়া ইউনয়নের মোট ৫৫০ জন জেলের বিপরীতে মাসে ৪০ কেজি হিসেবে জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে মোট ৮০ কেজি করে ১৬৬৬ বস্তায় ৪৪ মেট্রিক টন চালের ডিও খাদ্য গুদাম থেকে ছাড়িয়ে আনা হয়। জেলেদের অভিযোগ, চেয়ারম্যান জেলেপ্রতি ২৫ থেকে ৩০ কেজি চাল বিতরণ করে বাকি চাল আত্মসাৎ করেন। আমি বিষয়টি নিজে সত্যতা যাচাইয়ের পর উপজেলা চেয়ারম্যান ও নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানাই। শুক্রবার বিকালে উপজেলা চেয়ারম্যান মোস্তফা গোলাম কবির ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির তদন্তে এসে অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পান। রাতে আমি এই বিষয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছি।’

পাথরঘাটা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তফা গোলাম কবির জানান, চেয়ারম্যান আলাউদ্দীন পল্টু চাল বিতরণে ব্যাপকভাবে অনিয়ম করেছেন। তার এলাকায় বরাদ্দ ৪৪ মেট্রিক টন চালের মধ্যে মাত্র সাড়ে ১৬ মেট্রিক টন চাল বিতরণের সঠিক প্রমাণ দিতে পেরেছেন। বাকি সাড়ে ২৭ মেট্রিক টন চাল বিতরণের কোনও প্রমাণ দিতে পারেননি।

ভিজিএফ চাল বিতরণের দায়িত্বে থাকা সরকারি কর্মকর্তা (ট্যাগ অফিসার) রনজিৎ মিস্ত্রি জানান, চাল বিতরণের একদিন আগে আমাকে পরিষদ থেকে অবহিত করার কথা। কিন্তু আমাকে না জানিয়ে আমার অনুপস্থিতিতে ৪৪ মেট্রিক টন চাল সরানো হয়েছে, যা অনিয়ম।

পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির বলেন, ‘অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। বিষয়টি জেলা প্রশাসককে জানানো হয়েছে। বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’