বেতাগীতে ডায়রিয়ায় আরও এক নারীর মৃত্যু

বরগুনাবরগুনার বেতাগীতে ডায়রিয়ার প্রকোপে খাদিজা বেগম (৫০) নামে আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। বুধবার (৩০ এপ্রিল) রাতে বেতাগী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। এ নিয়ে বেতাগীতে ডায়রিয়ায় দু’জন নারী মারা গেলেন।

বৃহস্পতিবার (৩০ এপ্রিল) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বেতাগী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. তেন মং। নিহত খাদিজা বেগম উপজেলার বিবিচিনি ইউনিয়নের ফুলতলা গ্রামের আ. লতিফ মুন্সির স্ত্রী।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, করোনার প্রাদুর্ভাবের মধ্যে বেতাগী উপজেলায় হঠাৎ দেখা দিয়েছে ডায়রিয়ার প্রকোপ। ২৬ এপ্রিল ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসার অভাবে বাড়িতে মারা গেছেন মরিয়ম (৫৫) নামের এক নারী। করোনা পরিস্থিতির মধ্যে ডায়রিয়ার প্রকোপ দেখা দেওয়ায় বিপাকে পড়েছেন চিকিৎসকরা।

বেতাগী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, গত এক সপ্তাহে মোট ১২৫ জন ডায়রিয়া রোগী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়েছেন। চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১০১ জন। বর্তমানে ভর্তি আছেন ২৪ জন। প্রতিদিনই ২০-২৫ জন রোগী ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে আসছেন। এদের মধ্যে অধিকাংশই নারী ও শিশু। হাসপাতালে খাবার স্যালাইনের সংকট না থাকলেও কলেরার স্যালাইনের সংকট রয়েছে বলে জানান কর্তব্যরত চিকিৎসকরা। এ সংকট নিরসণে তাৎক্ষণিকভাবে সিভিল সার্জন স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে ৫০০ ব্যাগ স্যালাইন সরবরাহ করে প্রাথমিক ধাক্কা সামাল দেন। এরপরই বুধবার (২৯ এপ্রিল) কলেরার স্যালাইনের সংকট নিরসনে উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে ৫২ হাজার টাকা দেওয়া হয়।

বরগুনার বেতাগী উপজেলার দেড় লক্ষাধিক মানুষের চিকিৎসার একটি বড় কেন্দ্র বেতাগী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। ৫০ শয্যার এই হাসপাতালে সম্প্রতি একজন মেডিক্যাল অফিসারের করোনা পজিটিভ  হওয়ায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পরেছে পুরো উপজেলা জুড়ে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ আতঙ্কে অনেকেই যখন হাসপাতালবিমুখ, ঠিক তখনই হঠাৎ শুরু হয়েছে ডায়েরিয়ার প্রকোপ। অনেকে করোনা আতঙ্কে হাসপাতালে না এসে চিকিৎসা নিচ্ছেন বাড়িতে বসে। করোনার মধ্যে ডায়েরিয়া রোগীর সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন কর্তব্যরত চিকিৎসকরা।

বরগুনার বেতাগী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. তেন মং বলেন, 'ঋতু পরিবর্তনের ফলে গত কয়েকদিন ধরে লোকজন ডায়রিয়া ও পেটের পীড়াজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। খাবার স্যালইনের সংকট না থাকলেও কলেরার স্যালাইনের সংকট রয়েছে। তবে এ সংকট সমাধানে ইতোমধ্যেই স্বাস্থ্য বিভাগ ও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।