পৌরভবনে মেয়র-কাউন্সিলর সংঘর্ষ, আহত ১০

সরিষাবাড়ী পৌরসভা সংঘর্ষের দৃশ্য

জামালপুরের সরিষাবাড়ী পৌরভবনে মেয়র ও কাউন্সিলরদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় মেয়র, কাউন্সিলর ও সাংবাদিকসহ কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়েছেন। উভয় পক্ষের আহতরা হলেন- মেয়র রুকনুজ্জামান রোকন, মেয়রের দেহরক্ষী তনয়, প্যানেল মেয়র মোহাম্মদ আলী, কাউন্সিলর কালা চাঁন পাল, জহুরুল ইসলাম, পৌর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক সুমন চাকলাদার, যুবলীগ কর্মী সাদ্দাম, নান্নু, কফিল, বাবু ও লিটন। গুরুতর আহতবস্থায় মেয়রের দেহরক্ষী তনয় (৩২)-কে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে ও দৈনিক আলোচিত জামালপুরের সাংবাদিক মাসুদুর রহমান (৩০)-কে সরিষাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

রবিবার (১০ মে) সকাল ১১টায় পৌরভবনে মেয়রের প্রবেশে বাধা দেওয়াকে কেন্দ্র করে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, মেয়র রুকনুজ্জামান রোকন তার সমর্থিত লোকজন নিয়ে প্রবেশ করতে গেলে কাউন্সিলররা ও যুবলীগ কর্মীারা বাধা দেয়। এই নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে হাতাহাতি, ধাওয়া-সংঘর্ষ শুরু হয়। খবর পেয়ে সরিষাবাড়ী থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

কাউন্সিলররা তৎক্ষণিক সংবাদ সন্মেলন করে এই সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় মেয়রের বিচার দাবি করেছে।

এলাকাবাসী জানায়, পৌরসভার ঠিকাদারিসহ নানা কর্মকাণ্ড নিয়ে পৌর মেয়র রুকনুজ্জামানের সঙ্গে কাউন্সিলরদের বিরোধ চলে আসছিল। এই বিরোধের জের ধরে গত ১০ মে মিটিং করে কাউন্সিলররা পৌর মেয়রের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনে। ওইদিন রাতে সংবাদ সম্মেলনে ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে লাইভে এসে পৌর মেয়র রুকনুজ্জামান দাবি করেন, তিনি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার। স্থানীয় সংসদ সদস্য মুরাদ হাসানের ইন্ধনে কাউন্সিলররা তার বিরুদ্ধে অনাস্থা এনেছে। মেয়রের এই অভিযোগোর পর স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। তৎক্ষণিক সভা করে পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতির পদ থেকে মেয়র রুকনুজ্জামানকে অব্যাহতি দেয় উপজেলা আওয়ামী লীগ।

আহত প্যানেল মেয়র মোহাম্মদ আলী বলেন, পৌরভবনে প্রবেশের সময় কাউন্সিলররা বকেয়া বেতন ভাতা দাবি করলে মেয়র ক্ষিপ্ত হয়ে তথ্য প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসানকে উদ্দেশ্য করে বাজে মন্তব্য শুরু করেন। কাউন্সিলররা মেয়রের এই আচরণের প্রতিবাদ করলে মেয়রের ক্যাডাররা কাউন্সিলরদের ওপর হামলা চালায়।

এদিকে ঘটনার পরপরই পৌর মেয়র রুকনুজ্জামান রুকন ফেসবুক লাইভে এসে বলেন, 'আমি পৌরসভায় প্রবেশ করার সময় কাউন্সিলররা ও যুবলীগের কর্মীরা আমাকে ও আমার দেহরক্ষীকে মারধর করেছে।'