ট্রাকপ্রতি আম মাত্র হাজার টাকা!

IMG_20200521_184102উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরায় দীর্ঘ সময় ধরে তাণ্ডব চালিয়েছে ঘূর্ণিঝড় ‘আম্পান’। ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবে গোটা জেলা ধ্বংসস্তুপে পরিণত হওয়ার পাশাপাশি সবজি, ধান ও আমসহ ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বিশেষ করে আম চাষিদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ঝরে পড়া আম ট্রাকপ্রতি হাজার টাকাতেও বিক্রি করতে পারছেন না কেউ কেউ।  

সাতক্ষীরা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর জানিয়েছে, আম সংগ্রহের আগে ঝড় হওয়ায় চাষিরা বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। ল্যাংড়া, হিমসাগর ও আম্রপালী আম কোথাও ৮০ ভাগ কোথাও ৯০ ভাগ এবং কোথাও শতভাগ ঝরে পড়েছে। সবমোট ৮৩ ভাগ আমের ক্ষতি নির্ধারণ করা হয়েছে।

সূত্রটি আরও জানায়,  চলতি মৌসুমে জেলার সাতটি উপজেলায় চার হাজার ১১৫ হেক্টর জমিতে ৫ হাজার ২৯৯টি আম বাগানে আম চাষ হচ্ছে। ১৩ হাজার ৯৯ জন চাষি আম উৎপাদনের সঙ্গে জড়িত। এছাড়া ব্যক্তি পর্যায়ে আরও কয়েক হাজার আম চাষি রয়েছেন। চলতি মৌসুমে জেলায় আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৪০ হাজার মেট্রিক টন। মে মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে আম পাড়া শুরু হওয়ার কথা ছিল।

গত সপ্তাহে সাতক্ষীরায় কালবৈশাখী ঝড়ে আমের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ঝড়ে পড়া সেই কাঁচা আম ৫ থেকে ১৫ টাকা পাইকারি দরে বিক্রি হয়েছে। করোনা প্রকোপ ও আম্পান আমের চূড়ান্ত ক্ষতি করেছে বলে দাবি করছেন আম চাষিরা।

সাতক্ষীরা সদরের আম চাষি আব্দুল গণি বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় আম্পানে সব শেষ হয়ে গেছে। পড়া আম কেউ নিতে চাচ্ছে না। যেখানে এক মণ আম ১৫ শ’ টাকা বিক্রি হওয়ার কথা সেখানে এক ট্রাক আম এক হাজার টাকা দিয়ে একজন নিয়ে চলে গেছেন।’ তিনি সরকারি সহায়তা দাবি করেন।

সাতক্ষীরা সদরের চাষি বিপ্লব দাশ জানান, ২০ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে  ১২টি বাগান কিনেছিলেন তিনি। সব বাগানের আম ঝরে পড়েছে এক রাতের ঝড়ে। আমের পরিচর্যা বাবদ আরও ৫ লাখ টাকা ব্যয় করেছেন।  ঋণ শোধের চিন্তা নিয়ে দিশেহারা তিনি।

IMG_20200521_184225সাতক্ষীরা তালা উপজেলার আম চাষি ঘোষ বলেন, ‘আমার ১২ বিঘার আম বাগানের একটি গাছেও আম নেই। খরচও হয়েছে অনেক। করোনার পর ঘূর্ণিঝড় আম্পানের আঘাতে তছনছ হয়ে সব।’

সাতক্ষীরা সদর উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা আমজাদ হোসেন বলেন, ঘূর্ণিঝড় আম্পান সাতক্ষীরার কৃষিতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে জেলার আম চাষিরা। লাখ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে তারা আম চাষে নেমেছিলেন। তাদের অধিকাংশ আম পড়ে গেছে। ৮৩ ভাগ আমের ক্ষতি নির্ধারণ করা হয়েছে। এতে জেলার চাষীরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে। আমরা কৃষকদের পাশি থাকার আশ্বাস দিয়েছি।