মেয়ে পেয়েছে জিপিএ-৫, বাবার কপালে চিন্তার ভাঁজ

বাবা-মার সঙ্গে জিপিএ-৫ পাওয়া আসমানী

সন্তান ভালো ফলাফল করলে বাবা-মার মনে সাধারণত বাঁধভাঙা উল্লাস নামে। কিন্তু ব্যতিক্রম ঘটনাও আছে। ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার ডাউটি গ্রামে তেমনি এক হতভাগ্য গর্বিত পিতার সন্ধান পাওয়া গেছে। তার নাম ওলিয়ার মোল্লা। পেশা দিনমজুর। দিন-আনা দিন-খাওয়া জীবনে এক পসলা সুখের বৃষ্টি নামার কথা ছিল মেয়ে আসমানীর এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পাওয়ার খবরে। কোলাবাজার ইউনাইটেড মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে মানবিক বিভাগে জিপিএ-৫ পেয়েছে মেয়ে। কিন্তু এই খবর পাওয়ার পর আনন্দ করার আগেই চিন্তার ভাঁজ পড়েছে দরিদ্র পিতার কপালে। ভালো ফলাফল না করলে হয়তো আর লেখাপড়া করাতেন না মেয়েকে, কিন্তু এই ফলাফল তাকে ভবিষ্যতের দিকে দৃষ্টি ফেলতে বাধ্য করছে। একারণেই মেয়ের সাফল্যেও বাবার চোখে অন্ধকার নেমে এসেছে।

আসমানীর পিতা ওলিয়ার রহমান মোল্ল্যা বলেন, 'সবাই আমার মেয়ের সুনাম করছে। কিন্তু আমি তো এখন চিন্তায় আছি, আগামীতে মেয়েকে কলেজে কীভাবে পড়াবো, এমন ক্ষমতা তো আমার নেই।'

তিনি আরও জানান, তার দুই মেয়ে ও এক ছেলে। বড় মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন। ছোট ছেলে সাব্বির তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ে। ছেলে-মেয়ে স্ত্রীকে নিয়ে ছনের ঘরে তাদের বসবাস।

ওলিয়ার আরও বলেন, 'অভাবের সংসারে মেয়ের লেখাপড়ার খরচ ঠিকমতো জোগাতে পারিনি। টাকার অভাবে তারা ভালো পোশাক ও স্কুলে যাওয়া-আসার খরচ দিতে পারেনি। এখন শুনছি, মেয়ে পরীক্ষায় ভালো করেছে। আগামীতে কীভাবে মেয়েকে পড়াবো তাই ভাবছি।'

কোলাবাজার ইউনাইটেড হাইস্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আব্দুল ওহাব জোয়ার্দার জানান, আসমানী অত্যন্ত মেধাবী এবং ভদ্র। সে ক্লাসে সব সময় মনোযোগী থাকতো। সে জিপিএ-৫ অর্জন করায় বিদ্যালয়ের সব শিক্ষক-কর্মচারী অত্যন্ত খুশি।