শ্মশানে লাশ দাহ সংক্রান্ত জটিলতার অভিযোগ

চাঁদপুর

করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা যাওয়ার পর পৌর শ্মশানে মরদেহ নিলেও চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ বাজার ব্যবসায়ী রঞ্জিব কুমার রায়ের শেষকৃত্যে কেউ এগিয়ে আসেনি। শ্মশান কমিটির বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করায় এবং তাদের সঙ্গে দ্বন্দ্ব থাকার কারণে দাহ করা সম্ভব হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন স্বজনরা। তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন শ্মশান কমিটির লোকজন।

স্থানীয়রা জানান, মৃত রঞ্জিব কুমার আখড়া কমিটির সদস্য ছিলেন। আগে থেকেই শ্মশান কমিটির কয়েকজনের সঙ্গে তার দ্বন্দ্ব ছিল। একারণে তার মরদেহ সেখানে দাহ করা হয়নি।

রঞ্জিব রায়ের ছেলে অনিক বলেন, 'রাত ২টার দিকে বাবার শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়। পরে তিনি স্ট্রোক করেন। কুমিল্লা নেওয়ার পথে মারা যান।'

রঞ্জিব কুমার রায়ের ছোট ভাই সাগর কুমার রায় বলেন, 'তিনি মারা যাওয়ার পর আমরা তার মরদেহ নিয়ে শ্মশানে নিয়ে যাই। সেখানে থাকা দুজনকে বললাম লাশঘরের চাবি দেওয়ার জন্য। কিন্তু তারা চাবি না দিয়ে দাহ কমিটির মহন্ত সাহার সঙ্গে কথা বলতে বলেন। তার কাছে গেলে তিনি আবার পাঠান কমিটির সেক্রেটারির কাছে। তিনি আবার পাঠান সভাপতির বাড়িতে। সভাপতির কাছে গেলে তিনি রেগে যান। বিভিন্ন কথা বলেন। এক পর্যায়ে আমরা তাকে বললাম, শ্মশানের কেউ লাগবে না, আমরাই মরদেহ দাহ করবো। কিন্তু তাতেও তার কাছ থেকে সদুত্তর পাইনি।'

তিনি বলেন, 'শ্মশানের খোলা আকাশের নিচে প্রায় চার ঘণ্টা ভাইয়ের মরদেহ পড়েছিল। পরবর্তীতে আমরা তার মরদেহ বড়কুল গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যাই। সকালে তার দাহ করা হয়।'

তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন হাজীগঞ্জ পৌর মহাশ্মশানের সভাপতি অর্পন সাহা। তিনি বলেন, 'কিছুদিন আগে আমাদের একটি মিটিং হয়েছিল। সেখানে সিদ্ধান্ত হয়েছে, কোনও মরদেহ শ্মাশানে আসার চার ঘণ্টা পর দাহ করা হবে। কারণ কেউ করোনা আক্রান্ত হয়ে, আবার কেউ উপসর্গ নিয়ে মারা যাচ্ছেন। এ বিষয়টি পরিবারের পক্ষ থেকে লুকিয়ে রাখার ঘটনাও ঘটেছে। তাই সবার জীবনের নিরাপত্তার স্বার্থেই চার ঘণ্টা পর মরদেহের সৎকার কাজ শুরু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।'

তিনি বলেন, 'আমি তাদের বলেছি, আপনারা অপেক্ষা করুন, দাহ হবে। কিন্তু তারা অপেক্ষা না করেই মরদেহ নিয়ে যায়।'

এ বিষয়ে অ্যাডিশনাল পুলিশ সুপার (হাজীগঞ্জ সার্কেল) আফজাল হোসেন বলেন, 'রঞ্জিব রায় নামের একজন মারা গেছেন। হাজীগঞ্জ পৌর শ্মশানে দাহ না করার খবর পেয়েছি। তবে তাদের পক্ষ থেকে আমাদের বিষয়টি জানানো হয়নি। তারা নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় গ্রামের বাড়িতেই দাহ করেছেন। এছাড়া সেন্দ্র এলাকায় মারা গেছেন রাধা কৃষ্ণ নামের একজন। তিনি গত রাতে মারা যাওয়ার পর তার মরদেহ শ্মশানে নেওয়ার ক্ষেত্রে বাধা দেওয়া হয় বলে শুনেছি।'