নারায়ণগঞ্জের ৩ রেড জোনে ঢিলেঢালা লকডাউন

Narayanjangকরোনার হটস্পট নারায়ণগঞ্জের তিনটি স্থানে জেলা প্রশাসনের দেওয়া লকডাউন ঢিলেঢালাভাবে পালিত হচ্ছে।  গত কয়েকদিনের সংক্রমনের হার বিবেচনা করে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের আমলাপাড়া জামতলা ও ফতুল্লার ভুইঘর এলাকার রুপায়ণ টাউনকে লকডাউন ঘোষণা করে জেলা প্রশাসন।

তিনটি এলাকার প্রবেশের মুখে বাঁশ ফেলে লকডাউন সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দিয়ে যাতায়াত সীমিত করে দেওয়া হয়। লকডাউন এলাকায় প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না কোনও যানবাহন। লকডাউন এরিয়ার প্রতিটি প্রবেশ মুখে বসানো হয়েছে পুলিশের চেকপোস্ট। কিন্তু স্থানীয় লোকজন পুলিশের চেকপোস্টের বাধা অমান্য করে  হরহামেশাই এলাকা থেকে বের হচ্ছে এবং ভেতরে প্রবেশ করছেন।

নগরীর আমলা পাড়া এলাকার জাকির সুপার মার্কেট পয়েন্টে দায়িত্বরত পুলিশের এএসআই শহীদুল ইসলাম জানান, সকাল থেকে লকডাউন এরিয়া থেকে যারা বের হচ্ছেন তাদের বাধা দেওয়া হয়েছিল কিন্তু তারা পুলিশের বাঁধা উপেক্ষা করে নানা জরুরি অজুহাত তুলে লকডাউন এলাকা থেকে বের হচ্ছেন। কেউবা বাজারের দোহাই দিয়ে, কেউ ব্যাংকের কথা বলে আবার কেউ চিকিৎসা সেবা গ্রহণের কথা বলে লকডাউন এলাকা থেকে বের হচ্ছেন। আবার অনেকে ভেতরে কাজের নানা অজুহাতে ভেতরে প্রবেশ করছেন।

লকডাউন হওয়া আমলাপাড়া প্রবেশের প্রধান সড়ক স্বপ্নের ভোরে দায়িত্বরত পুলিশে এসআই আব্দুর রশিদ জানান স্থানীয় আমলাপাড়ার ভেতরে এবং প্রেসিডেন্ট এলাকায় ৭ থেকে ৮ টি ক্লিনিক রয়েছে। এসব ক্লিনিকে ডাক্তার দেখানোর কথা বলে অনেকেই প্রবেশ করছেন। সকাল থেকে তারা যারা আমলাপাড়া থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করেছেন তাদের বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন কিন্তু তারা বাধা মানতে নারাজ। করোনা যে রয়েছে অনেকে সেটি বিশ্বাস করতে চাচ্ছেন না। তারা অনেকটা তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে ভেতরে ঢুকছে।  প্রায়ই মানুষের সাথে পুলিশের বসচা  হচ্ছে। যে কারণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অনেকটা অসহায় অবস্থায় লকডাউন এরিয়ায় ডিউটি করতে দেখা গেছে।

একই চিত্র দেখা গেছে নগরীর জামতলা ও ভুইগর রুপায়ন টাউন এলাকায়। দুটি রেড জোনে প্রবেশ পথে পুলিশ দায়িত্বরত আছেন। কিন্তু পুলিশের বাধা কেউ মানছেন না। লকডাউন এলাকার ভেতরে থাকা সাধারণ মানুষ নানা জরুরি অজুহাত তুলে বের হচ্ছেন এবং প্রবেশ করছেন। নগরীর ভুইগর রুপায়ন টাউন এলাকার বাসিন্দা আফজাল হোসেন জানান, জেলা প্রশাসন থেকে যে ধরনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল ভ্রাম্যমান নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ভ্যানে করে বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হবে। সেটি কোথাও দেখা যায়নি। যে কারণে দৈনন্দিন বাজার করতে তাকে ঘর থেকে বের হতে হচ্ছে।

এদিকে সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, জেলা প্রশাসন ঘরে ঘরে ভ্যানে করে বাজার পৌঁছে দেওয়ার যে ঘোষণা দিয়েছিল সেটি কোথাও পালিত হয়নি। যে কারণে মানুষ বাজার ও জরুরি প্রয়োজনের অজুহাত তুলে ঘর থেকে বেরিয়ে আসছেন।

এদিকে দুপুর পৌনে একটার দিকে আমলাপাড়া সড়কের প্রবেশমুখে প্রশাসনের ম্যাজিস্ট্রেট নেতৃত্বে সেনাবাহিনীর সদস্যরা পরিদর্শনে আসেন। এসময় তারা তারা হ্যান্ডমাইক দিয়ে মানুষকে সচেতন করার চেষ্টা করেন। লকডাউন এরিয়া থেকে কাউকে বিনা কারণে ঘর থেকে বের না হওয়ার জন্য বারণ করেন।

এ ব্যাপারে নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন জানান, ‘ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার মানুষকে সচেতন করার জন্য আমরা তাদের বোঝানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এরইমধ্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে আমাদেরকে একটি গাইডলাইন দেওয়ার কথা রয়েছে। লকডাউন এলাকার মানুষ কী করবেন- সেই সম্বলিত গাইডলাইন নিয়ে আমরা আরও কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করবো। সে সময় নিম্ন আয়ের মানুষদের খাদ্যসহায়তাসহ বাড়ি বাড়ি বাজার পৌঁছে দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও রক্ষা করা হবে।