‘পিপিপির ভিত্তিতে চালু হবে পাটকল’

বক্তব্য দিচ্ছেন খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেকখুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শ্রমিকদের ব্যাপারে অত্যন্ত আন্তরিক। শ্রমিকদের কথা চিন্তা করেই সরকার এ পর্যন্ত পাটকলগুলোতে ১০ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিয়েছেন। সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের (পিপিপি) ভিত্তিতে পাটকলগুলো আধুনিকায়ন করে চালু করা হবে। সরকারের এ সিদ্ধান্তের ফলে পাটকলগুলো বন্ধ হবে না, শ্রমিকরাও বেকারও হবেন না। কারণ পরবর্তী সময়ে এসব পাটকলে এ অঞ্চলের শ্রমিকদেরই কর্মসংস্থান অব্যাহত থাকবে।’

সোমবার (২৯ জুন) পিপিপির ভিত্তিতে খুলনার সাতটি পাটকল চালুর সরকারি সিদ্ধান্ত উপলক্ষে এক প্রেস কনফারেন্সে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেয়র এসব কথা বলেন। খুলনা সার্কিট হাউজে জেলা প্রশাসনের আয়োজনে এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন খুলনার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেন।

প্রেস কনফারেন্সে জেলা প্রশাসক জানান, শ্রম আইন অনুযায়ী দুই মাস আগে অর্থাৎ ৩০ জুন সরকারের পক্ষ থেকে নোটিশ দিয়ে বিস্তারিত জানানো হবে। ইতোমধ্যে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সভায় এ ব্যাপারে নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শ্রমিকদের সব বকেয়া পাওনা ২০২০-২০২১ অর্থ বছরে ৪০ শতাংশ এবং বাকি ৬০ শতাংশ পাওনা টাকা পরবর্তী দুটি অর্থ বছরে ৩০ শতাংশ করে পরিশোধ করা হবে। এছাড়া ২০১৪ সাল থেকে অবসরে যাওয়া শ্রমিকদের পাওনা এককালীন পরিশোধ করা হবে। সরকারের এ সিদ্ধান্তের ফলে প্রতিটি শ্রমিক প্রায় সাড়ে ১২ লাখ থেকে ৫৪ লাখ পর্যন্ত টাকা পাবেন।

এদিকে রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল বন্ধের সরকারি সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি উত্তাল হয়ে উঠেছে খুলনার শিল্পাঞ্চল। খুলনা অঞ্চলের রাষ্ট্রয়ত্ত নয়টি পাটকলের শ্রমিকরা সন্তানদের সঙ্গে নিয়ে নিজ নিজ মিলের সামনে সোমবার সকাল ৯টা থেকে ১১টা পর্যন্ত দু’ঘণ্টা অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। বাংলাদেশ রাষ্ট্রয়ত্ত পাটকল সিবিএ-নন সিবিএ সংগ্রাম পরিষদের আহ্বানে এ কর্মসূচি পালিত হয়। এ সময় বিক্ষোভ সমাবেশও করেন তারা।

সমাবেশে সংগ্রাম পরিষদ আহ্বায়ক সরদার আব্দুল হামিদ বলেন, ‘বিশ্ব ব্যাংকের প্রেসক্রিপশন অনুয়ায়ী ব্যক্তি মালিকদের যড়যন্ত্র এবং আমলাতন্ত্রের চক্রান্তে ২৫ জুন আন্তঃমন্ত্রণালয়ের বৈঠকে সরকারি ২৫টি পাটকল বন্ধ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। ৩০ জুনের মধ্যে এই সিদ্ধান্ত পরিবর্তন না হলে ১ জুলাই থেকে শ্রমিক ও পরিবারের সদস্যরা আমরণ অনশন কর্মসূচি শুরু করবে।’

তিনি আরও জানান, বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী সোমবার দুপুরে রাষ্ট্রয়ত্ত পাটকল সিবিএ-নন সিবিএ সংগ্রাম পরিষদের সঙ্গে বৈঠক করেন। আর এ কারণে খুলনার শ্রমিক নেতারা ঢাকায় রয়েছেন। এই বৈঠক ফলপ্রসূ না হলে আন্দোলন আরও বেগবান হবে।