শিক্ষার্থীদের একজন জয়নুল বলে, ‘এটা আমাদের খেলার মাঠ, এখানে কেন টিনের বেড়া দেওয়া হবে?’ রাহুল, শায়লা, মনোয়ার ও আজিজার বলে, ‘আমাদের বিদ্যালয়ের খেলার মাঠে কোনও বেড়া থাকতে দেবো না। আমাদের খেলার মাঠ দখল করলে আমরা খেলবো কীভাবে?’
জানা যায়, ১৯৮৭ সালে বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর ২০১৩ সালে প্রতিষ্ঠানটি সরকারিকরণ হয়। বিদ্যালয়ের মোট জমির পরিমাণ ৩৩ শতক। এরমধ্যে, ১৫ শতক জমির ওপর বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে আজিজার রহমান গামা, মো. মোস্তাফিজুর রহমান লিংকন ও মোস্তাক আহম্মেদ নিশাত নামে কতিপয় ব্যক্তি বিদ্যালয়ের মাঠে টিনের বেড়া দিয়ে ঘেরাও করেন। পৈত্রিক ও ক্রয় সূত্রে তারা জমির মালিক দাবি করে সাইনবোর্ডও লাগিয়ে দেন।
শুক্রবার বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এমন দৃশ্য দেখে ক্ষুব্ধ হয়। পরে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে বিষয়টি জানায় তারা। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও বিদ্যালয় ম্যানিজিং কমিটির উপস্থিতিতে শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ের মাঠে দেওয়া টিনের বেড়া অপসারণ করে।
স্থানীয় অভিভাবক ও এলাকাবাসীর হয়ে স্থানীয় আব্দুল আলী বলেন, একটি সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাঠ রাতের আঁধারে টিনের বেড়া দিয়ে দখল করাটা আইনের প্রতি অনুগত কোনও সুস্থ নাগরিকের কাজ হতে পারে না। যদি এই জমির প্রশ্নে তাদের কোনও ন্যায্য দাবি থাকে, তবে নিশ্চয়ই আদালতের মাধ্যমে মীমাংসা হতে পারতো।
৭ নম্বর ঠাকুরগাঁও রোড আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শিউলি আক্তার বলেন, আমি সকালে খবর পেয়ে এসে দেখি বিদ্যালয়ের মাঠে টিনের বেড়া দিয়ে দখল করা হয়েছে। এ বিষয়ে আমার কোনও যোগাযোগ কেউ করেনি আর আমি জানতামও না যে এ প্রশ্নে কারও কোনও দাবি দাওয়া রয়েছে। আমি শুধু জানি আমার বিদ্যালয়ের মোট জমির পরিমাণ ৩৩ শতক।
স্থানীয় ১২ নম্বর ওয়ার্ড পৌর কাউন্সিলর একরামুদ্দৌলা বলেন, একটি সরকারি বিদ্যালয়ের মাঠে রাতের অন্ধকারে দখল করাটা অন্যায়।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তানভিরুল ইসলাম বলেন, স্কুলের জমি দখল করার ঘটনা নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি বিরাজ করছিলো। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। এখন পর্যন্ত কোনও লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।