ঈদকে সামনে রেখে ইতোমধ্যে বিভিন্ন এলাকায় বসতে শুরু করেছে পশুর হাট। তবে এসব পশুর হাটে বেচা-কেনা নিয়ে ক্রেতা-বিক্রেতাদের মধ্যে দুশ্চিন্তা কাজ করছে। কোরবানির জন্য প্রস্তুত পশুর ভালো দাম পাবেন কিনা তা নিয়ে শঙ্কায় খামারিরা। অন্যদিকে সামাজিক দূরুত্ব বজায় রেখে হাটে গিয়ে পছন্দের পশু কিনতে পারবেন কিনা তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন ক্রেতারা।
প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের কর্মকর্তারা বলছেন, করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও চট্টগ্রামে কোরবানির পশুর চাহিদা ও যোগানে তেমন একটা তারতম্য দেখা হবে না।
গরু, মহিষ, ছাগল ও ভেড়া মিলে চট্টগ্রামে এবার কোরবানির পশুর চাহিদা নির্ধারণ করা হয়েছে সাত লাখ ৩১ হাজার। গতবছর এই চাহিদা নির্ধারিত ছিল সাত লাখ ২০ হাজার ৯৫৭টি। চাহিদার বিপরীতে এবার চট্টগ্রামে মোটাতাজা করা হয়েছে ছয় লাখ ৮৯ হাজার ২২টি পশু। এর মধ্যে গরু চার লাখ ৬৪ হাজার ৫৭২টি, মহিষ ৫৭ হাজার ১৩১টি, ছাগল ও ভেড়া এক লাখ ৬৭ হাজার ২১০টি এবং অন্যান্য পশু ১০৯টি।
গতবছর এই চাহিদা নির্ধারিত ছিল গরু চার লাখ ১৪ হাজার ৩৮৭টি, মহিষ ৪৮ হাজার ২৮৪টি, ছাগল-ভেড়া এক লাখ ৪৭ হাজার ৫৪৮টি।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. রেয়াজুল হক বলেন, চট্টগ্রামে এবার কোরবানির পশুর কোনও সংকট হবে না। চাহিদা ও যোগান এখানে সমান সমান। অভ্যন্তরীণভাবে আমরা স্বয়ংসম্পূর্ণ। এর পাশাপাশি প্রতিবছরের ন্যায় এবারও এখানে পাবনা, রাজশাহীসহ বিভিন্ন জেলা ও আমাদের তিন পাবর্ত্য জেলার পশু আসবে। তাই কোরবানির পশুর কোনও সংকট হবে না।
এদিকে এবার চট্টগ্রামে কোরবানি পশুর পর্যাপ্ত মজুত থাকলেও এই পশুগুলো ভালো দামে বিক্রি নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন খামারিরা।
কর্ণফুলী উপজেলার শিকলবাহাধীন শাহ আমানত অ্যাগ্রো ফার্মের মালিক মো. আখতার হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, গরু পালনকে ব্যবসা হিসেবে নিয়ে গত কয়েক বছর ধরে কোরবানির গরু বিক্রি করে আসছি। তবে এবার গরুর প্রকৃত দাম পাবো কিনা, তা নিয়ে শঙ্কায় আছি। কারণ করোনার জন্য মানুষের ক্রয় ক্ষমতা কমেছে। আগে যারা একা একটি গরু কোরবানি করতেন, এবার তাদের অনেকে ভাগে কোরবানি দেবেন। তাই খামারগুলোতে যে পরিমাণ গরু মোটাতাজা করা হয়েছে, তার বিক্রি নিয়ে খামারিরা শঙ্কায় আছি।
সাতকানিয়া উপজেলার দক্ষিণ চরতি এলাকার খামারি আব্দুল মোমিন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে কোরবানির গরু লালন-পালন করছি। আমার দুটি খামারে ১৪০টি গরু আছে। এ গরুগুলোই আমার সারা জীবনের আয়ের টাকা দিয়ে কেনা। সঙ্গে কিছু ব্যাংক ঋণও রয়েছে। কিন্তু এবারে গরুর বাজার নিয়ে খুব আতঙ্কের মধ্যে আছি। এর মধ্যে প্রথম কথা হচ্ছে বাজার কেমন হচ্ছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে কি গরুর বাজার সম্ভব? তাছাড়া করোনার কারণে মানুষের আর্থিক সংকটে চাহিদাও কমবে বলে মনে করেন এই খামারি।