গড়াইয়ের ভাঙনে তিন শতাধিক বসতবাড়ি বিলীনের পথে

ভাঙন পাড়ের মানুষের মানববন্ধনঝিনাইদহের শৈলকুপার তিনটি ইউনিয়নের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে গড়াই নদী। নদীটির ভাঙনে ওই এলাকার ৫টি গ্রামের কয়েকশ' বসতবাড়ি ও ফসলি জমি হুমকির মুখে। গত কয়েকদিনে নতুন করে ভাঙন দেখা দেওয়ায় এবং ওই এলাকায় প্রতিরক্ষা বাঁধ না থাকায় আতঙ্কিত এলাকাবাসী। ভাঙন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে গত শুক্রবার মানববন্ধন করেছেন সারুটিয়া ইউনিয়নের বড়ুরিয়া গ্রামের ভাঙনকবলিত মানুষ।

যেকোনও সময় নদীগর্ভে বিলীন হতে পারে টিউবওয়েল ক্ষতিগ্রস্তরা বলেন, 'নদীর হিংস্র থাবায় এ উপজেলার সারুটিয়া, হাকিমপুর ও ধলোহরাচন্দ্র ইউনিয়নের নদীর পাড়ভিত্তিক গ্রামগুলোর শতশত বিঘা ফসলি জমি ও বাড়ির একাংশ হারিয়ে গেছে। নদীর করাল গ্রাসে হুমকির মুখে পড়েছে বড়ুরিয়া মসজিদ ও পাশের বাজারসহ তিন শতাধিক বসতবাড়ি।' তারা আরও বলেন, 'দ্রুত নদী ভাঙন ঠেকানো না গেলে গ্রামের শতশত পরিবার পথে বসবে।' ক্ষতিগ্রস্তরা অভিযোগ করেন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা ভাঙন প্রতিরোধে গুরুত্ব না দেওয়ায় তারা স্থায়ী প্রতিরক্ষা বাঁধ পাচ্ছেন না।

ভাঙনকবলিত এলাকাএদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা সরোয়ার জাহান সুজন বলেন, 'জরুরি প্রতিরক্ষা বাঁধ নির্মাণের জন্য প্রকল্প চেয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ পেলেই কাজ শুরু করা হবে।' তিনি আরও বলেন, 'স্থায়ী প্রতিরক্ষা বাঁধ নির্মাণ ছাড়া ভাঙন প্রতিরোধ করা সম্ভব না।'

এলাকাবাসীর মানববন্ধনউল্লেখ্য, কুষ্টিয়া থেকে ভাটিতে আসা গড়াই নদী ঝিনাইদহের শৈলকুপার লাঙ্গলবাঁধ পর্যন্ত প্রায় ৪০ কিলোমিটার অংশে প্রবাহিত। ১৯৯০ সালের পর থেকে বছরের পর বছর এ নদীর ভাঙনের করাল গ্রাসে তিনটি ইউনিয়ন ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অনেক পরিবার বসতভিটা ও ঘরবাড়ি ছেড়ে পথে বসেছে। সারুটিয়া, হাকিমপুর ও ধলোহরাচন্দ্র  ইউনিয়নের গড়াই নদীর পাড়ভিত্তিক বড়ুরিয়া, কৃঞ্চনগর, মাঝদিয়া, মাদলা ও লাঙ্গলবাঁধ বাজার এখন হুমকির মুখে পড়েছে। প্রতিরক্ষা বাঁধ না দেওয়ায় প্রায় ১৪শ' বিঘা ফসলি জমি ও প্রায় ১০০টি বাড়ির একাংশ নদী গ্রাস করে নিয়েছে। সম্প্রতি অতিবৃষ্টির কারণে পানি বৃদ্ধি পাওয়ার পর থেকেই নদীর এ ভাঙন শুরু হয়েছে। তাই এলাকাবাসী অনতিবিলম্বে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়ানো এবং প্রতিরক্ষা বাঁধ দেওয়ার অনুরোধ জানান।