করোনাভাইরাস প্রতিরোধে ভারত সরকার ১৩ মার্চ বিকাল থেকে বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে বাংলাদেশি পাসপোর্টধারী যাত্রীদের ভারতে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করে ও ভিসা স্থগিত করে। কিন্তু স্বাধীনতার পর থেকে দু’দেশের মধ্যে এক ঘণ্টার জন্যও পাসপোর্টধারী যাত্রী যাতায়াত বন্ধ হয়নি। করোনার কারণে বন্ধ হয়ে যায় ঢাকা-কলকাতা বাস সার্ভিস ও খুলনা-কলকাতা বন্ধন ট্রেন সার্ভিস। এখন জনশূন্য হয়ে পড়েছে বেনাপোল বন্দর, খাঁ খাঁ করছে বেনাপোল-পেট্রাপোল চেকপোস্ট এলাকা। অলস সময় কাটাচ্ছেন বিভিন্ন পরিবহন কাউন্টারের লোকজনসহ ইমিগ্রেশন, কাস্টমস, বন্দর, চেকপোস্টের ব্যাংক বুথ, আনসার সদস্যরা। নেই কুলিদের হাকডাক। সর্বত্র নীরব সুনসান অবস্থা।
এদিকে বাংলাদেশি যাত্রীরা ভারতে যেতে না পারলেও, ভারতীয়সহ অন্যান্য দেশের যাত্রীরা ভারত থেকে বাংলাদেশে আসছেন নির্বিঘ্নে। অথচ ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে করোনাভাইরাস ব্যাপক হারে ছড়িয়ে পড়েছে। ভারতের বনগাঁ শহরে করোনাভাইরাস রোগী শনাক্ত হওয়ায় বেনাপোল-পেট্রাপোল চেকপোস্ট এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে বলে ওপারের বিভিন্ন মাধ্যমে জানা গেছে। এ অবস্থায় বাংলাদেশ সরকারের কোনও নিষেধাজ্ঞা না থাকায় ভারতীয় পাসপোর্টধারী যাত্রীরা ভারত-বাংলাদেশ যাতায়াত করছেন। তবে কিছু কিছু বাংলাদেশি রোগী ভারতে যাওয়ার উদ্দেশে চেকপোস্টে আসলেও তাদের ফেরত পাঠানো হয়।
এদিকে পণ্য আমদানি-রফতানির ওপর কোনও নিষেধাজ্ঞা না থাকায় দু’দেশের মধ্যে আমদানি- রফতানি বাণিজ্য স্বাভাবিক গতিতে চলছে। তবে যেকোনও সময় এ বন্দর দিয়ে আমদানি-রফতানি বন্ধ হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা।
হঠাৎ করে বাংলাদেশি ভিসায় ভারত ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারিতে বাণিজ্যে ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা। যদিও এখন পর্যন্ত তার কোনো প্রভাব পড়েনি। তবে বাংলাদেশিরা ভারতে প্রবেশ বন্ধ থাকলে শিল্প কারখানায় উৎপাদন ব্যাহতের পাশাপাশি নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য-সামগ্রীর বাজারে মূল্য বাড়ারও শঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা।
বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সজন বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের বড় বাণিজ্যিক সম্পর্ক। ব্যবসায়ীরা ভারতে যেতে না পারলে আমদানি-রফতানি বাণিজ্যও বন্ধ হতে পারে। এক মাসেরও বেশি সময় চীনের সঙ্গে বাণিজ্য বন্ধ রয়েছে। আবার ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য বন্ধ হলে ব্যবসায়ীদের ক্ষতির পাশাপাশি নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বেড়ে যাবে। বাণিজ্যিক বিষয়ে যাতে কোনও প্রভাব না পড়ে তার জন্য বিকল্প ব্যবস্থা চালুতে সরকারের এখনই পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।
বেনাপোল চেকপোস্ট ইমিগ্রেশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আহসান হাবিব বলেন, ভারতে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা থাকায় কোনও বাংলাদেশি পাসপোর্টধারী যাত্রীকে ভারতে যেতে দেওয়া হচ্ছে না। তবে ভারতীয় যাত্রীদের প্রবেশে সরকারের কোনও নিষেধাজ্ঞা না থাকায় তাদের বাংলাদেশে প্রবেশে ও ভারতে যেতে অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। সরকারের নির্দেশনা পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান।