শনিবার (আগস্ট ১) ঈদের দিন দুপুরের পর থেকেই হিলির চেকপোস্ট সড়কের চামড়াপট্টির দোকানগুলোতে চামড়া আসতে শুরু করে। মৌসুমি ব্যবসায়ীরা উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে চামড়া কিনে বিক্রির জন্য আনেন আড়তগুলোতে। একইভাবে বিভিন্ন এতিমখানা ও মাদ্রাসাগুলো তাদের সংগ্রহ করা চামড়া বিক্রির জন্য আড়তে নিয়ে আসেন।
হিলির সাতকুড়ি ও বোয়ালদাড় গ্রামের মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ী রবিউল ইসলাম ও সিদ্দিক হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, প্রতিবছরই কোরবানির ঈদকে ঘিরে বাড়তি কিছু লাভের আশায় বিভিন্ন স্থান থেকে চামড়া কিনি। এ বছরও আমরা চামড়া কিনেছি। আশা করেছিলাম গত কয়েকবছর ধরে চামড়ার দাম না পেলেও, এবার চামড়ার ভালো দাম পাবো ও লাভবান হবো। চামড়া কেনার আগে আড়তদারদের সঙ্গে কথা বলে একটি দামও নির্ধারণ করা হয়। তবে চামড়া কিনে বিক্রির জন্য আড়তে আনার পর সেই দামে আর মিলছে না।
বোয়ালদাড় মাদ্রাসার শিক্ষক মাওলানা মাসুদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, বিভিন্ন এতিমখানা ও মাদ্রাসায় মানুষের দান করা চামড়া বিক্রি করে মাদ্রাসার এতিম ছাত্রদের পড়ালেখা ও খাওয়ার খরচ চালানো হয়। গতবছরে চামড়ার যে দাম পেয়েছিলাম, এবার তার চেয়েও দাম কম। ভালো দাম না পেয়ে আমরা হতাশ হয়ে পড়েছি। এতে মাদ্রাসার ছাত্রদের পড়ালেখা ও খাওয়ার খরচ মেটাতে বিড়ম্বনায় পড়তে হবে।
হিলির চামড়াপট্টির ব্যবসায়ী আমজাদ হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, গত বছরের চামড়া বিক্রির আট লাখ টাকা বকেয়া রয়েছে, যা পাইনি। এর পরেও এবার ঈদে চামড়া কিনছি, কিন্তু আমরা চামড়ার ন্যায্যমূল্য পাওয়া নিয়ে শঙ্কায় আছি।। সরকার চামড়ার দাম বেধে দিলেও ট্যানারি মালিকরা আমাদের থেকে সেই দামে চামড়া কিনছেন না। এতে করে লোকসান গুনতে হচ্ছে।
তিনি জানান, গরুর চামড়া তিনশ’ থেকে সাড়ে তিনশ’ টাকায় কিনলেও এর সঙ্গে দুইশ’ টাকার খরচ যোগ হয়। এতে পাঁচশ’ থেকে সাড়ে পাঁচশ’ টাকা খরচ আসে। তবে বিক্রি করতে হচ্ছে সাড়ে তিনশ’ থেকে চারশ’ টাকায়। সরকার যদি চামড়ার ওপর সুনজর দিতো, তাহলে চামড়ার বাজার ভালো হতো। সরকার যে কাঁচা চামড়া রফতানির উদ্যোগ নিয়েছিলো, তার সঠিক বাস্তবায়ন হলে ব্যবসায়ীরা লোকসানের হাত থেকে বেঁচে যেতো বলে মন্তব্য করেন তিনি।