মাস্ক এখন ব্যাগ আর পকেটে!




m4নীলফামারীতে মাস্ক ব্যবহার ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার প্রবণতা কমতে বসেছে। গ্রামগঞ্জের হাট-বাজারে স্বাস্থ্যবিধি মানা তো দূরের কথা, অনেকের মুখেই নেই মাস্ক। মঙ্গলবার (১১ আগস্ট) বিকালে জেলা শহরের জনবহুল এলাকা চৌরঙ্গীর মোড়ে দেখা যায়, অনেকে মাস্ক ছাড়াই চলাফেরা করছেন। অনেকের থুতনির নিচে, আবার অনেকেই মাস্ক পকেটে নিয়ে ঘুরছেন।

মাস্ক পরেননি কেন জানতে চাইলে পথচারী আশরাফুল হক জানান, জেলার কিশোরগঞ্জ থেকে আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে এসে স্যান্ডেল কিনতে বাজারে এসেছেন। তিনি বলেন, আমি গ্রামের মানুষ, আমাদের গ্রামে এখন আর করোনার জন্য কেউ মাস্ক পরে না। তাই ভাবলাম শহরে মাস্ক না পরলেও চলবে। তাছাড়া মুখে পান আছে, শেষ হলে পরে নেবো। মাস্ক নিয়ে এখন আর কেউ ভাবে না। তবে পকেটে আছে।

m1জেলা সদরের পঞ্চপুকুর ইউনিয়নের তাঁতিপাড়া গ্রামের লালচান চন্দ্র রায় বলেন, সকালে বড় বাজারে সদাইপাতি কিনতে এসেছিলাম। পরে ক্ষুধা পেলে মাস্ক ব্যাগে রেখে হোটেলে নাস্তা করলাম, তাই আর পরার খেয়াল ছিল না। তাছাড়া আগের মতো করোনার প্রভাব নেই। এ নিয়ে পুলিশ ও প্রশাসনের তৎপরতাও দেখা যায় না। তিনি জানান, মাস্ক সবার কাছে আছে। কেউ রাখছে ব্যাগে আবার অনেকেই পকেটে।

জেলা শহরের বড় বাজার ট্রাফিক মোড় পেরিয়ে কিচেন মার্কেটে যেতে হয়। জনবহুল এই মোড়ে একঘণ্টা দাঁড়িয়ে দেখা যায়, বাজারে যারা আনাগোনা করছেন তাদের মুখে মাস্ক নেই। মাঝে মধ্যে দুই-একজনের মুখে মাস্ক দেখা গেলেও তা ছিল থুতনির নিচে। এই মার্কেটে লোকজনের অবস্থা দেখলে মনে হয় দেশে করোনার প্রাদুর্ভাব নেই।

m5শহরের বড় বাজারের স্মৃতি ক্লথ স্টোরের ব্যবসায়ী মকবুল হোসেন বলেন, মাস্ক পরার বিষয়ে গ্রাহকদের আমরা কিছু বলতে গেলে দোকান ছেড়ে চলে যান। বর্তমানে খেয়াল করলে দেখা যায়, এখন আর কেউ মাস্ক পরে না। এটা নিয়ে এখন আর কারো মাথাব্যথা আছে বলে মনে হয় না। আগে এই বাজারে সপ্তাহে তিন থেকে চারদিন প্রশাসনের লোক আসতো, এখন আর কেউ আসে না।

মাস্ক পরেননি কেন জিজ্ঞেস করলে রিকশাচালক তপন চন্দ্র রায় বলেন, দেখেন না কারও মুখে মাস্ক নাই। তাছাড়া ভ্যানচালক ও রিকশাচালক যে পরিশ্রম করে, তাতে করোনা ধরার ভয় নাই। শহরটা ঘুরে দেখেন, কয়জনের মুখে মাস্ক আছে। আগে তো এই স্ট্যান্ডে সরকারি-বেসরকারি লোকজন এসে মাস্ক পরিয়ে দিয়ে যেতো, এখন আর কাউকে দেখা যায় না। পুলিশও আসে না। তবে দেখবেন কারও না কারও ব্যাগে অথবা পকেটে মাস্ক আছে।

m2এ বিষয়ে নীলফামারী সদর থানার ওসি কে এম আজমিরুজ্জামান বলেন, আমি এই থানায় নতুন যোগদান করেছি। তবে এ বিষয়ে সদর ইউএনও'র সঙ্গে কথা বলে মোবাইল কোর্টের ব্যবস্থা করা হবে। তাছাড়া মানুষ সচেতন না হলে আইন দিয়ে সচেতন করা যায় না।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এলিনা আকতার জানান, করোনা সংক্রমণ এড়াতে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষে মাইকিংসহ মাস্ক ও মানুষকে সচেতন করতে লিফলেটও বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়াও রুটিন ওয়ার্ক হিসেবে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে মাস্ক যারা থুতনিতে রেখেছেন তাদের জরিমানার আওতায় আনা হচ্ছে। এছাড়া পুলিশ মাঠে-ঘাটে ও গ্রামগঞ্জে যেখানে যাচ্ছে, করোনা প্রতিরোধে মানুষকে সচেতন করছে বলে জানান তিনি।

m3