খাদ্যগুদাম কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ

দুর্নীতিরাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার খাদ্যগুদামের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক মো. হাবিবুর রহমানের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। তার বিরুদ্ধে এ অভিযোগে গত ২১ আগস্ট খাদ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক সারোয়ার মাহমুদ গোয়ালন্দ খাদ্যগুদাম আকস্মিক পরিদর্শন করেন। পরিদর্শনে অভিযোগের সত্যতা পেয়ে তিনি বিষয়টি তদন্তে একটি কমিটি গঠন করেন।  

পরিদর্শনকালে সারোয়ার মাহমুদ খাদ্যগুদামে অতিরিক্ত চাল, গম এবং পুরনো বস্তার মজুত দেখতে পেয়ে বিস্মিত হন। এ বিষয়ে খাদ্যগুদাম কর্মকর্তা হাবিবুর রহমানকে প্রশ্ন করা হলে তিনি কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি। মহাপরিচালকের পরিদর্শনকালে গুদামে অতিরিক্ত ৭৯ মেট্রিক টন চাল, ৩০ মেট্রিক টন গম এবং ৩০ কেজি পুরনো খালি বস্তা পাওয়া যায় বলে খাদ্য অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের নীতিমালা অনুযায়ী খাদ্যগুদামে সরকার নির্ধারিত নির্দিষ্ট পরিমাণ চাল, গম মজুত রাখতে হবে। এর কম বা বেশি রাখা যাবে না। এছাড়া খাদ্য অধিদফতর থেকে সরবরাহ করা বস্তা ব্যবহার করতে হবে। গুদামে পুরাতন বস্তা ব্যবহার করা যাবে না। কিন্তু গোয়ালন্দ খাদ্যগুদাম কর্মকর্তা বাজার থেকে নিম্নমানের চাল আগাম কিনে গুদামজাত করে রেখেছেন। যাতে পরবর্তীতে সময়ে এই চাল সমন্বয় করা হয়। খাদ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক সরেজমিন তদন্তে এর সত্যতা পেয়েছেন। এ নিয়ে খাদ্য অধিদফতর ও জেলা অফিসে তোলপাড় চলছে। এর আগেও তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে দুর্নীতি ও অপকর্ম করলেও উপরের মহলকে ম্যানেজ করে সব সময় পার পেয়ে গেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

খাদ্য অধিদফতর সূত্রে আরও জানা গেছে, গোয়ালন্দ উপজেলা খাদ্য গুদামের গুরুতর অনিয়মের পরিপ্রেক্ষিতে মহাপরিচালক সারোয়ার মাহমুদ তাৎক্ষণিকভাবে ঢাকা বিভাগের আঞ্চলিক খাদ্য কর্মকর্তা তপন কুমার দাসকে একটি তদন্ত কমিটি করার নির্দেশ দেন। এ পরিপ্রেক্ষিতে ফরিদপুরের জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. সাহিদার রহমানকে প্রধান করে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন তিনি। তদন্ত কমিটি তদন্তের কাজ শুরু করেছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে গোয়ালন্দ খাদ্য গুদামের কর্মকর্তা মো. হাবিবুর রহমান খাদ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক কর্তৃক গোয়ালন্দ খাদ্যগুদাম আকস্মিক পরিদর্শনকালে অতিরিক্ত ৭৯ মেট্রিক টন চাল, ৩০ মেট্রিক টন গম এবং ২৬০টি খালি বস্তা পাওয়ার সত্যতা স্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘ভিজিডির চাল ইউপি চেয়ারম্যানরা উত্তোলন না করে রেখে যাওয়ায় গুদামে অতিরিক্ত ছিল। গত ২২ আগস্ট ওই চাল উপজেলার চার জন ইউপি চেয়ারম্যানের কাছে এবং ৩০ মেট্রিক টন গম গোয়ালন্দ ফ্লাওয়ার মিলের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।’

ইউনিয়ন পরিষদে গুদাম থাকার পরেও কেন চেয়ারম্যানদের ভিজিডির চাল এবং গোয়ালন্দ ফ্লাওয়ার মিলের গম অবৈধভাবে গুদামে মজুত রাখলেন? এ প্রশ্ন তিনি এড়িয়ে যান।