কৃষি বিভাগ ও চাষিরা জানান, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ত্রিপুরা সীমান্তবর্তী বিজয়নগর উপজেলার নোয়াবাদী, মেরশানী, বিষ্ণুপুর, পাহাড়পুর এবং আখাউপজেলার আজমপুর, আমুদাবাদ, রাজাপুরসহ কসবা উপজেলার বিভিন্ন এলাকার প্রতিটি বাগানে এখন থোকায় থোকায় মাল্টার সমারোহ। গত ২০১৬ সালে কৃষি বিভাগের প্রণোদনায় প্রথমবারের মতো চাষিরা বারি-১ ও বারি-২ জাতের মালটা গাছের চারা লাগিয়েছিলেন। শুরুতে অপরিচিত এই ফলটির চাষাবাদ নিয়ে স্থানীয় কৃষকেরা কিছুটা দ্বিধায় থাকলেও, খরচ কম আর উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপাশি ভালো দাম পাওয়ায় এখন মাল্টা চাষে ঝুঁকছেন তারা।
সোহাগ আরও জানান, তার বাগানটিতে ১২০টি গাছ রয়েছে। বাগান করতে প্রথমে ৬০ হাজার টাকা খরচ হয়। প্রথম বছরে প্রায় দুই লাখ টাকার মাল্টা বিক্রি করেছেন। এবার মাল্টার ফলন আরও ভালো হয়েছে, বেশি বিক্রি করতে পারবেন বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
সোহাগ বলেন, আমার দেখাদেখি অনেকেই পেয়ারা, বেগুনের আবাদ কমিয়ে মাল্টা বাগানের দিকে ঝুঁকেছে।
এদিকে এ বছর মাল্টার ফলন ভালো এবং সুস্বাদু হওয়ায় আগামী দিনে পতিত (খালি) জমিতে মাল্টা চাষের আগ্রহের কথা জানান এলাকার অন্যান্য কৃষকেরা।
বিজয়নগর সিংগারবিল এলাকার ফলচাষি কৃষক মো. আবু ছালেহ বলেন, আমাদের বিজয়নগরে এত সুন্দর মাল্টার আবাদ হবে, আমরা চিন্তাও করিনি। বর্তমানে আমাদের এলাকায় মাল্টা বাগানে ফলন ভালো হওয়ায় আমার মতো অনেক কৃষকের আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে। সরকার যদি আমাদের সহযোগিতা করে তাহলে আমরা আরও বেশি বেশি বাগান করতে পারবো।
মাল্টা চাষে আগ্রহী অপর কৃষক মো. কুদ্দুস মিয়া জানান, সোহাগের মাল্টা বাগান দেখে আমরাও আগ্রহী হয়েছি। এই এলাকার মাটি মাল্টা চাষের জন্য বেশ উপযোগী বলে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে আমাদের উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে। তাই আমারা অনেকেই এখন মাল্টা বাগান করার কথা ভাবছি।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মো. রবিউল হক মজুমদার জানান, এ বছর বিজয়নগর ,আখাউড়া কসবাসহ জেলার বিভিন্ন স্থানে ৭৬ হেক্টর জমিতে মাল্টার আবাদ করা হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় মাল্টার ভালো ফলন হয়েছে। এর মধ্যে এক হাজার ৬৬০টি বসতবাড়ি ও ১৯৮ ব্লক বাগানসহ মোট এক হাজার ৮৮০টি বাগানে মাল্টার আবাদ করা হয়। আবাদ হওয়া বাগান থেকে মোট ১৭ মেট্রিক টন মাল্টা উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। যার বাজারমূল্য প্রায় ১৩ কোটি টাকা।