ধর্ষণের দায়ে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামির আত্মসমর্পণ

ধর্ষণের দায়ে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি নাঈম হাসাননারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে ধর্ষণের দায়ে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি নাঈম হাসান (২৮) অবশেষে আত্মসমর্পণ করেছে। সোমবার (১২ অক্টোবর) দুপুরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মদ শাহীন উদ্দীনের আদালতে সে আত্মসমর্পণ করে। আপিলের শর্তে জামিন পেতে আত্মসর্মপণ করলে আদালত জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) রকিব উদ্দিন।

দণ্ডিত নাঈম হাসান আড়াইহাজার উপজেলার ব্রাহ্মন্দী ইউনিয়নের উজান গোবিন্দী গ্রামে আব্দুর রউফ ওরফে রূপ মিয়ার ছেলে।

পিপি রকিবউদ্দিন জানান, গত ১৭ সেপ্টেম্বর আড়াইহাজারে মেধাবী এক স্কুলছাত্রীকে অপহরণ ও ধর্ষণের ঘটনার আট বছর পর আসামি নাঈম হাসানকে (২৮) যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন আদালত। রায়ে অপহরণ এবং নারী ও শিশু নির্যাতন উভয় অভিযোগে পৃথকভাবে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডসহ আসামিকে চার লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানার দুই লাখ আদায় করে ভুক্তভোগী স্কুলছাত্রীর পরিবারকে দেওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছিলেন আদালত। রায়ের সময় আদালতে নাঈম অনুপস্থিত থাকায় ফের তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়।

মামলার বরাত দিয়ে বাদীপক্ষের আইনজীবী কাজী আব্দুস সেলিম ও মাসুদ রানা জানান, ২০১২ সালে ৭ এপ্রিল সকালে স্কুলে যাওয়ার পথে ওই ছাত্রীকে রাস্তা থেকে অস্ত্রের মুখে অপহরণ করে নাঈম হাসান। প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা-২০১০-এ নারায়ণগঞ্জ জেলায় পঞ্চম স্থান অর্জনকারী এবং ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পাওয়া ছাত্রীটি উজান গোবিন্দী বিনাইরচর উচ্চ বিদ্যালয়ে সপ্তম শ্রেণিতে পড়তো। অপহরণের পর রূপগঞ্জের পারাগাঁও এলাকায় নিয়ে তাকে ধর্ষণ করে অজ্ঞান অবস্থায় বাড়ির সামনের রাস্তায় ফেলে যায় ধর্ষক। পরিবারের সদস্যরা আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের নারী নির্যাতন প্রতিরোধ সেলে রেখে চিকিৎসা দেন।

এ ঘটনায় ভিকটিমের বাবা বাদী হয়ে অপহরণসহ নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে আড়াইহাজার থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এর পর থেকে পরিবারকে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য এবং যারা সাক্ষী দিয়েছে তাদের হুমকি ও বিভিন্নভাবে নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া যায়। এছাড়াও জামিনে প্রতারণার আশ্রয়সহ বিভিন্ন মিথ্যা তথ্য দিয়ে আদালতকে বিভ্রান্তি করার চেষ্টা করে কালক্ষেপণ করতে থাকে আসামি। এক পর্যায়ে উচ্চ আদালতে মামলার কার্যক্রম ফের স্থগিতের আবেদন করলে গত সপ্তাহে চেম্বার জজ তা খারিজ করে দেন। পরে গত ১৭ সেপ্টেম্বর চাঞ্চল্যকর এ মামলার রায় ঘোষণা করেন আদালত।