পাটকল শ্রমিকদের টাকা দেওয়া শুরু হচ্ছে

খুলনা

খুলনায় রাষ্ট্রায়ত্ত ৭টি পাটকলের অবসরপ্রাপ্ত, অবসানকৃত ও বদলি শ্রমিকদের এক হাজার ৬৭৭ কোটি টাকা পাওনা রয়েছে। প্রায় ৭ ধরনের পাওনা মিলিয়ে এই পরিমাণ অর্থ পরিশোধ করার প্রক্রিয়া চলছে। আগামী ১৯ অক্টোবর থেকে এই টাকা দেওয়া শুরু হবে।
বাংলাদেশ পাটকল করপোরেশন (বিজেএমসি) সূত্রে জানা গেছে, খুলনা জোনের পাটকলগুলোর অবসায়নকৃত ১০ হাজার ৩৬৪ জন শ্রমিককে গোল্ডেন হ্যান্ডশেকের মাধ্যমে ১ হাজার ১৬২ কোটি ৩১ লাখ টাকা, অবসরপ্রাপ্ত ৪ হাজার ৬৮০ জন শ্রমিকের ৩৭২ কোটি ৪০ লাখ টাকা এবং বদলি ২১ হাজার ৩৫১ জন শ্রমিকের ১১৪ কোটি ৯২ লাখ টাকা প্রদান করা হবে। এছাড়া বকেয়া মজুরির ২৭ কোটি ৬৪ লাখ টাকা শ্রমিকদের পাওনা রয়েছে।

বিজেএমসি সূত্রে আরও জানা যায়, পাটকল শ্রমিকদের প্রভিডেন্ট ফান্ড (পিএফ), গ্র্যাচুইটি, গোল্ডেন হ্যান্ডশেক সুবিধাসহ সমুদয় পাওনার ৫০ শতাংশ নিজ নিজ ব্যাংক হিসাবে এবং বাকি ৫০ শতাংশ সঞ্চয়পত্র আকারে পরিশোধ করা হবে। এরই মধ্যে শ্রমিকদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বর বিজেএমসির হাতে পৌঁছেছে। একই সঙ্গে শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধের প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে। গত ১৫ সেপ্টেম্বর করিম জুট মিলের শ্রমিকদের গোল্ডেন হ্যান্ডশেকের অর্থ প্রদানের প্রক্রিয়া শুরু হয়। আর আগামী সোমবার বিজেএমসির খুলনা জোনের ৭টি পাটকলের শ্রমিকদের গোল্ডেন হ্যান্ডশেকসহ ৭ ধরনের পাওনা পরিশোধে অনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হবে। ১৯ অক্টোবর বেলা ১২টায় শ্রম প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান প্রধান অতিথি থেকে প্লাটিনাম জুট মিলের শ্রমিকদের মধ্যে পাওনা পরিশোধের অনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন।

বিজেএমসি'র আঞ্চলিক সমন্বয়কারী ও প্লাটিনাম জুট মিলের প্রকল্প প্রধান মো. গোলাম রব্বানী জানান, অডিট রিপোর্ট অনুযায়ী প্রাথমিক হিসেবে শ্রমিকদের পাওনা ১৬৭৭ কোটি টাকা। শ্রমিকদের নির্ভুলভাবে পাওনা পরিশোধ করা হবে।

উল্লেখ্য, লোকসানের কারণে রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলগুলোর ২৪ হাজার ৮৮৬ স্থায়ী শ্রমিককে গোল্ডেন হ্যান্ডশেকের (স্বেচ্ছা অবসরে) মাধ্যমে অবসরে পাঠানো হচ্ছে বলে গত ২৮ জুন ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে জানান বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী। ১ জুলাই থেকে বিজেএমসির ২৫টি পাটকল বন্ধ ঘোষণা করে সরকার। পরে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল বন্ধ এবং শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধ নিয়ে সভার পর গত ২ জুলাই বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়- বন্ধ ঘোষণা করা রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলের প্রতি শ্রমিক গড়ে ১৩ লাখ ৮৬ হাজার টাকা এবং সর্বোচ্চ ৫৪ লাখ টাকা পর্যন্ত পাবেন। সরকার তাদের পাওনার অর্ধেক নগদে পরিশোধ ও বাকি অর্ধেক টাকার সঞ্চয়পত্র দেবে। পাটপণ্যের উৎপাদন ব্যবস্থার আধুনিকায়ন ও পুনর্বিন্যাস করে বিজেএমসির বন্ধ মিলগুলো জরুরি ভিত্তিতে ফের চালু করা হবে। এজন্য মিলগুলোকে সরকারি নিয়ন্ত্রণে পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি), যৌথ উদ্যোগ জিটুজি বা লিজ মডেলে পরিচালনার মাধ্যমে যত দ্রুত সম্ভব আবার উৎপাদনে ফিরিয়ে আনার কার্যক্রম চলমান রয়েছে।