চানাচুর চুরির অভিযোগ

৬০ শিক্ষার্থীকে গুরুতর শাস্তি, মাদ্রাসা সভাপতিসহ চার শিক্ষক কারাগারে

গ্রেফতার মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. বাদশা মিয়া।

কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলায় চানাচুর চুরির অভিযোগে মাদ্রাসার সভাপতি ও শিক্ষকরা ৬০ জন শিক্ষার্থীকে হেড-ডাউন (মাথা নিচে পা উপরে) করে আধা ঘণ্টা শাস্তি দেন। এতে ২৫ জন শিক্ষার্থী গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে। এসময় কারও বমি, কারও নাক-মুখ দিয়ে রক্ত বের হয়। এ সময় অনেক শিক্ষার্থীর চিৎকারে আশেপাশের লোকজন এগিয়ে আসে। স্থানীয় লোকজন এমন শাস্তির নামে নির্যাতনের প্রতিবাদে ওই মাদ্রাসাটি ঘেরাও করে ফেলে। পরে তারা থানায় খবর দিলে পুলিশ এসে শিক্ষার্থীদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়। সোমবার রাতে বুড়িচং উপজেলার শংকুচাইল আশ্রাফুল উলুম হাফেজিয়া নুরানীয়া ফুরকানিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানায় এ ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় ওই মাদ্রাসার সভাপতিসহ চারজন শিক্ষককে আটক করে থানায় নিয়ে গেছে পুলিশ। পরে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। মঙ্গলবার তাদের আদালতে সোপর্দ করা হলে বিচারক তাদের জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

আসামিরা হলেন মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. বাদশা মিয়া, শিক্ষক মো. মোতালেব, মো. মিজানুর রহমান ও হাফেজ মো. সফিকুল ইসলাম।

মামলার বিবরণ ও পুলিশ সূত্র জানায়, শংকুচাইল আশ্রাফুল উলুম হাফেজিয়া নুরানীয়া ফুরকানিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানার এক শিক্ষার্থীর বাড়ি পাশের ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার বাগড়া গ্রামে। ওই শিক্ষার্থী তার বাড়িতে কয়েকদিন ছুটি কাটিয়ে সোমবার বিকালে মায়ের সঙ্গে  মাদ্রাসায় ফিরে আসে। এসময় আল-আমিনের মা একটি চানাচুরের প্যাকেট তার ছেলেকে কিনে দেন। পরে দেখতে পায় মায়ের দেওয়া চানাচুরের প্যাকেটটি কোনও ছেলে দুষ্টামি করে নিয়ে গেছে। সে তার মাকে ফোন করে বিষয়টি জানালে তিনি মাদ্রাসার সভাপতি ও শিক্ষকদেরকে জানান। সন্ধ্যায় মাদ্রাসার সভাপতি ও শিক্ষকরা চানাচুর চুরি করার দায়ে ৬০ জন শিশু শিক্ষার্থীকে হেড-ডাউন করে আধা ঘণ্টা শাস্তি দেন।

বুড়িচং থানার ওসি মো. মোজাম্মেল হোসেন জানান, এ ঘটনায় এক শিক্ষার্থীর পিতা মো. ফিরোজ মিয়া বাদী হয়ে বুড়িচং থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মঙ্গলবার ওই মামলায় মাদ্রাসা কমিটির সভাপতি ও শিক্ষকদের আদালতের মাধ্যমে জেল-হাজতে পাঠানো হয়।