বৃহস্পতিবার (২৯ অক্টোবর) মাগরিবের নামাজের আগে বুড়িমারী ইউনিয়ন পরিষদের দরজা ভেঙে ওই যুবককে বের করে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। পরে লাশ নিয়ে বুড়িমারী প্রথম বাঁশকল এলাকায় জয় ট্রেডার্সের সামনে লালমনিরহাট-বুড়িমারী জাতীয় মহাসড়কের ওপর কাঠখড়ি ও পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে পুড়িয়ে দেয় বিক্ষুব্ধ জনতা।
পুলিশ জানায়, নিহত আবু ইউনুস মোহাম্মদ শহীদুন্নবী (৫০) রংপুর শহরের শালবন মিস্ত্রি পাড়ার মৃত আবু ওয়াজেদ মিয়ার ছেলে। তিনি রংপুর ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের সাবেক লাইব্রেরিয়ান। এই ঘটনায় আহত হয়েছেন শহীদুন্নবীর সঙ্গে থাকা সুলতান জোবায়ের আব্বাস (৪৫) নামের আরও এক ব্যক্তি। তিনি একই এলাকার শেখ আব্বাস আলীর ছেলে, পেশায় দলিল লেখক।
পুলিশ কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম বলেন, শহীদুন্নবীকে উত্তেজিত জনতা যখন ইউনিয়ন পরিষদের একটি কক্ষের দরজা ভেঙে বের মারধর শুরু করে, তখন পুলিশ তাকে রক্ষার জন্য এগিয়ে যায়। এসময় পুলিশ সদস্যরাও আহত হন। তবে শহীদুন্নবীকে রক্ষা করা যায়নি। তবে তার সঙ্গে থাকা অপর ব্যক্তিকে পুলিশ উদ্ধার করে।
নিহত ব্যক্তিকে পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিক্ষুব্ধ জনতা পুলিশ, স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধি কারও কথাই শুনেনি। কোনোভাবে তাদের নিয়ন্ত্রণ করা যায়নি। পুলিশ হ্যান্ডমাইকে বারবার বলার পরেও তারা শান্ত হয়নি। এক পর্যায়ে তাকে পিটিয়ে হত্যার পর সড়কে নিয়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে মামলার প্রক্রিয়া চলছে জানিয়ে তিনি বলেন, এখনও কাউকে আটক বা গ্রেফতার করা হয়নি। তবে সবকিছু প্রক্রিয়াধীন। প্রকৃত ঘটনা জানার চেষ্টা চলছে বলে তিনি জানান।
এদিকে পুলিশের পাশাপাশি র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নও (র্যাব) ঘটনার ছায়া তদন্ত শুরু করেছে বলে জানিয়েছেন র্যাব-১৩-এর কর্মকর্তা অতিরিক্ত হাফিজুর রহমান হাফিজ।
এ ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। শুক্রবার সকালে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে প্রধান করে কমিটি গঠন করা হয় বলে নিশ্চিত করেছেন জেলা প্রশাসক আবু জাফর।
তিনি বলেন, ‘প্রকৃত ঘটনা উদঘাটনে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
ঘটনার সময় ৫-৬ হাজার উত্তেজিত মানুষ ছিল, কারও কোনও নিয়ন্ত্রণ ছিল না বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন:
লালমনিরহাটে যুবককে হত্যার পর লাশ পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ
পিটিয়ে হত্যা করে মরদেহ পোড়ানোর ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন