সাংবাদিক ফাগুন রেজা হত্যা, একজনের রিমান্ড

জামালপুরসাংবাদিক ফাগুন রেজা হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে এক আসামিকে তিন দিনের রিমান্ডে নিয়েছে জামালপুর রেলওয়ে থানা পুলিশ। শুক্রবার (৬ নভেম্বর) দুপুরে জামালপুর রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তাপস চন্দ্র পন্ডিত বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, গত বছরের ২১ মে ঢাকা থেকে শেরপুরে নিজ বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হওয়ার পর সেদিনই রাত সাড়ে আটটার দিকে নিখোঁজ হন শেরপুরের এনটিভির সাংবাদিক কাকন রেজার বড় ছেলে ফাগুন রেজা।

পরদিন ২২ মে জামালপুর সদরের রানাগাছা এলাকায় রেললাইনের পাশ থেকে সাংবাদিক ফাগুন রেজার লাশ উদ্ধার করা হয়। তবে এসময় নিহত ফাগুন রেজার সঙ্গে থাকা মোবাইলফোন, ল্যাপটপ, পরিচয়পত্র ও অন্যান্য কাগজপত্রের কোনও সন্ধান পাওয়া যায়নি। এ ঘটনায় হত্যা মামলা দায়েরের পর তথ্য-প্রযুক্তির মাধ্যমে ফাগুন রেজার ব্যবহৃত মোবাইলফোনের অবস্থান নির্ণয় করে ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার তারাকান্দা এলাকার আব্দুল মজিদের ছেলে সোহরাব (৩২) নামে একজনকে শনাক্ত করে পুলিশ।

কিন্তু বিভিন্ন নাম পরিচয় ব্যবহার করে বিভিন্ন জায়গায় অবস্থান করায় তাকে কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। এদিকে গাজীপুর জেলার সাফারিপার্ক সড়কে এক চালককে আহত করে অটোরিকশা ছিনতাইয়ের সময় স্থানীয় জনতা আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে সোহরাবকে।

পরে চলতি বছরের ১৪ সেপ্টম্বর গাজীপুরের শ্রীপুর থানায় তার বিরুদ্ধে হত্যা প্রচেষ্টা ও ছিনতাইয়ের অভিযোগে মামলা দায়ের করে আদালতের মাধ্যমে কাশিমপুর কারাগারে পাঠানো হয়। কিন্ত সেখানে ওই আসামি ভুল নাম ঠিকানা ব্যবহার করে। হত্যাচেষ্টা ও ছিনতাই মামলায় ছদ্দ নাম ঠিকানা ব্যবহার করলেও ফাগুন হত্যার সঙ্গে জড়িত অভিযোগে আগে থেকেই চিহ্নিত সোহরাব আটক আছে বলে জানতে পায় জামালপুর রেলওয়ে থানা পুলিশ। পরে আরও অধিকতর যাচাই বছাই শেষে নিশ্চিত হয়ে কাশিমপুর কারাগার থেকে সোহরাবকে গত ২৮ অক্টোবর জামালপুরে জেলা কারাগারে আনা হয়।

জামালপুর সদর উপজেলার কোর্ট দারোগা এএসআই মনির হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, আসামি সোহরাবকে বুধবার ( ৪ নভেম্বের) ফাগুন হত্যা মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে জামালপুর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের কাছে রিমান্ডের আবেদন করে রেলওয়ে থানা পুলিশ। পরে বিচারক সোলায়মান কবীর আসামি সোহরাবের তিন দিনের রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর করেন।

জামালপুর রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তাপস চন্দ্র পন্ডিত বলেন, গত ৪ নভেম্বর আসামিকে তিন দিনের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ অব্যাহত রয়েছে, ধারণা করা হচ্ছে সে পেশাদার খুনি। বিভিন্ন থানায় তার নামে একাধিক হত্যা মামলা রয়েছে।

নিহত সাংবাদিক ফাগুন রেজার মা মিলি রেজা বলেন, সাড়ে ১৭ মাস পরে একজন আসামি ধরা পড়েছে, আশা করি পুলিশ এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে যারা রয়েছে তাদেরও খুঁজে বের করবে। তিনি ছেলে হত্যার সঙ্গে জড়িত সবার শাস্তি দাবি করেন।