হত্যা মামলায় কুমিল্লার মহানগর যুবলীগের সভাপতি আবদুল্লাহ আল মাহমুদ সহিদ, কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আবুল হাসান, কুমিল্লা সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহম্মেদ নিয়াজ পাভেল ও কুমিল্লা মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি জহিরুল ইসলাম রিন্টুকে আসামি করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলামস। তিনি জানান, মামলায় আবদুল কাদের নামে এক আসামিকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। সে সদর দক্ষিণ উপজেলার কিংকরপুর এলাকার আলী আজমের ছেলে।
পুলিশ সুপার আরও জানান, সহিদ, হাসান, পাভেল ও রিন্টু ছাড়াও মামলায় গোয়ালমথনের মৃত মন্তু মিয়ার ছেলে আব্দুস সাত্তার (৩৪), চৌয়ারার মৃত সেকান্দার আলীর ছেলে খলিলুর রহমান খলিল (৪৫), শ্রীবল্লভপুরের খোকন মিয়ার ছেলে মেহেদী হাসান (২৪), চৌয়ারার আলী মিয়ার ছেলে নাছিম (২৩), একই এলাকার ছাদেক মিয়ার ছেলে মারুফ হোসেন (২৩), কালিকিংকরপুরের আলী আজ্জমের ছেলে আবদুল কাদের (৪০), চৌয়ারার মৃত আলী মিয়ার ছেলে নুরু মিয়া (৫৫), সদর দক্ষিণের রায় পুরের রুক মিয়ার ছেলে ইমরান (২৫), ধনপুরের আবদুল মালেকের ছেলে হালিম মিয়া (৩৪), ধনাইতরীর আবদুল রহিমের ছেলে আবদুল মান্নান (৩২), গোয়ালমথনের মৃত ওসমান মিয়ার ছেলে তুষার (৩৮), রায়পুরের রুক মিয়ার ছেলে সাইফুল ইসলাম (৩২), উলুরচরের বাবুল মিয়ার ছেলে মাবুল (৩২), চৌয়ারার মৃত আবদুল লতিফের ছেলে হানিফ মিয়া (৬০), চাষাপাড়ার মিরন খন্দকার (৫৫), চৌয়ারার মৃত মমতাজ উদ্দিনের ছেলে সেলিম মিয়া (৫৫), চাষাপাড়ার সেলিম মিয়ার ছেলে সাকিব (২২), গোয়ালমথনের মৃত হারুণ মিয়ার ছেলে মাসুদ রানা (২২), একই এলাকার মৃত বিদেশ চন্দ্র সাহার ছেলে পলাশ সাহা (৪৮) এবং রায়পুরের ফরিদ খানের ছেলে মেনায়েম খানকে মামলায় আসামি করা হয়েছে। এছাড়া অজ্ঞাতনামা ১০-১৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।
সূত্র জানায়, স্থানীয় রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব ও গত সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আসামি খলিলুর রহমানের সঙ্গে কাউন্সিলর নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিবাদ শুরু হয়। এর জের ধরে জিল্লুরকে হত্যার উদ্দ্যেশে প্রায় হুমকি দেওয়া হতো।
মামলা ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, যুবলীগ কর্মী জিল্লুর রহমানের স্ত্রী স্থানীয় সদর দক্ষিণের তারাপাইয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা জাহানারা বেগম ও তার সন্তান কুমিল্লা শহরের বাসায় অবস্থান করছিল। বুধবার (১১ নভেম্বর) সকালে জিল্লুর রহমান ছেলেকে মাদ্রাসায় পৌঁছে দিতে ঘটনাস্থলে অপেক্ষা করছিলেন। তার স্ত্রী ও সন্তান বাসা থেকে ঘটনাস্থলে পৌঁছার আগ মুহূর্তে ১০-১২টি মোটরসাইকেলযোগে আসা সন্ত্রাসীদের একটি দল তাকে ঘেরাও করে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে। মাত্র দুই মিনিটের মধ্যেই সন্ত্রাসীরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। এসময় তার স্ত্রী ঘটনাস্থলে পৌঁছে চিৎকার শুরু করলে এলাকাবাসী এগিয়ে আসে। এসময় সন্ত্রাসীরা দ্রুত পালিয়ে যায়। পরে তার স্ত্রী জাহানারা বেগম তাকে উদ্ধার করে একটি অটোরিকশাযোগে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করে।
খবর পেয়ে জেলা ও থানা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে যান। এদিকে যুবলীগ কর্মী জিল্লুর হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে শহরের নজরুল অ্যাভিনিউ এলাকায় মহানগর যুবলীগের ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। এর নেতৃত্বে ছিলেন এফবিসিসিআইয়ের পরিচালক মাসুদ পারভেজ খান ইমরান।