ওমানে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে দুই ভাইসহ তিন বাংলাদেশির মৃত্যু




omanওমানে কর্মরত অবস্থায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে দুই ভাইসহ তিন বাংলাদেশি রেমিট্যান্স যোদ্ধা মঙ্গলবার (১ ডিসেম্বর) সকালে স্থানীয় সময় সাড়ে ৮টায় মৃত্যুবরণ করেছেন। নিহতদের বাড়ি নোয়াখালী জেলার সুবর্ণচর উপজেলায়। তাদের অকাল মৃত্যুতে পরিবারে শোকের ছায়া নেমে আসে। রাত ১০টায় মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নিহত নিহত মোস্তফা ও নাছিরের বড় ভাই ওমান প্রবাসী ইব্রাহিম। দুপুরে মোবাইলে বাড়িতে বিষয়টি জানান বলে নিশ্চিত করেন নাছিরের শ্যালক জিয়া উদ্দিন ফারুক।

নিহতরা হলেন, উপজেলার চর আমানউল্যা ইউনিয়নের সাতাশদ্রোণ গ্রামের ফখরুল ইসলামের ছেলে মো. মোস্তফা (৫০) ও নূর হোসেন নাছির (৪০) এবং একই উপজেলার পূর্ব চরবাটা ইউনিয়নের আনছার মিয়ারহাট এলাকার বাহার উদ্দিনের ছেলে আলমগীর হোসেন (৩৫)।

নূর হোসেন নাছিরের শ্যালক জিয়া উদ্দিন ফারুক জানান, জীবিকার সন্ধানে মো. মোস্তফা ও নূর হোসেন নাছিরের বড় ভাই মো. ইব্রাহিম (৫৫) প্রায় ৩০ বছর আগে ওমানে যান। তিনি যাওয়ার ১০ বছর পর ছোট ভাই মো. মোস্তফাকে ওমানে নিয়ে যান। এর প্রায় পাঁচ বছর পর আরেক ছোট ভাই নাছিরকেও সেখানে নিয়ে যান। দুই বছর আগে তাদের ভাগনে কামরুলকে (২৫) ওমানে নিয়ে যান। প্রায় ৬/৭ বছর আগে একই উপজেলার পূর্ব চরবাটা ইউনিয়নের আলমগীর হোসেন কুয়েত থেকে ওমানে গিয়ে তাদের সঙ্গে একই ইলেকট্রিক কোম্পানিতে যোগ দেন। সেখানে ইলেকট্রিক মিস্ত্রি হিসেবে আল ওয়াফা শহরের একই কোম্পানিতে তিন ভাই ইব্রাহিম, মোস্তফা, নাছির, ভাগনে কামরুল এবং আলমগীর কাজ করতেন। তারা পাঁচ জন একই কোম্পানিতে কাজ করার পাশাপাশি একইসঙ্গে বসবাস করতেন। প্রতিদিনের মতো স্থানীয় সময় মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৮ টায় তারা একটি কুপে বিদ্যুতের কাজ করতে যান। প্রথমে আলমগীর হোসেন ওই কুপে নামেন। অনেক সময় পার হলেও বের না হয়ে আসায় মোস্তফাও কুপে নামেন। কিন্তু দীর্ঘ সময় পার হওয়ার পর কুপ থেকে আলমগীর ও মোস্তফার কোনও সাড়া না পেয়ে নূর হোসেন নাছিরও কুপে নামেন। পরে তাদের তিন জনের কোনও সাড়া না পেয়ে মো. ইব্রাহিমসহ সহকর্মীরা বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসন ও ফায়ার সার্ভিসে জানান।

খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা এসে আলমগীর, মোস্তফা ও নাছিরকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গেলে, চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন। লাশ বর্তমানে হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। ঘটনার আকস্মিকতায় বড় ভাই মো. ইব্রাহিম অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ভাগিনা কামরুল তাকে দেখাশুনা করছেন।

এদিকে দুই ছেলেকে হারিয়ে মুমূর্ষু অবস্থায় রয়েছেন ফখরুল ইসলাম। কান্না করতে করতে জ্ঞান হারাচ্ছেন মোস্তফার স্ত্রী মাহবুবা সুলতানা, দুই মেয়ে এক ছেলে, নাছিরের স্ত্রী কুলছুম বেগম, দুই ছেলে ও দুই মেয়ে।

একই অবস্থা অপর নিহত আলমগীরের বাড়িতেও। নিহতদের পরিবারের লোকজন তাদের লাশ দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনতে সরকারের সহযোগিতা কামনা করেছেন।