রংপুর মেডিক্যালে শীতজনিত রোগে ৭ দিনে ১৭ মৃত্যু 

রংপুর অঞ্চলে হাঁড় কাঁপানো শীতে জনজীবন অচল হয়ে পড়েছে। সেই সঙ্গে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে নিউমোনিয়া, কোল্ড ডায়রিয়া, শ্বাসকষ্টসহ নানান রোগ। গত এক সপ্তাহে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে ১৭ জন মারা গেছে। তাদের বেশির ভাগই শিশু ও বয়স্ক। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ডা. রোস্তম আলী।

অন্যদিকে, গত ২৪ ঘণ্টায় শীতের কবল থেকে রক্ষা পেতে আগুন পোহাতে গিয়ে দগ্ধ হয়ে দুই নারী রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে মারা গেছেন। তারা হলেন– রংপুরের পীরগাছার মুন্নী বেগম ও লালমনিরহাট সদরের খেমতি বেগম। বার্ন ইউনিটের প্রধান ডা. হামিদুর রহমান পলাশ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

সরজমিন রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে দেখা গেছে, ওয়ার্ডে তিল ধারণের জায়গা নেই।  নিউমোনিয়া, কোল্ড ডায়রিয়া ও শ্বাসকষ্টজনিত রোগে  আক্রান্ত গুরুতর অসুস্থ শিশুরা হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী থেকে আসা আসমা বেগম জানান, তার এক বছরের মেয়ে সাত দিন ধরে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হলে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এখন কিছুটা সুস্থ, তবে ডাক্তাররা আরও কয়েকদিন হাসপাতালে অবস্থান করে চিকিৎসা নিতে বলেছেন। একই কথা জানান রংপুরের মমিনপুর এলাকার সাজেদা বেগম। তার ছয় মাস বয়সী ছেলে এবং একই এলাকার ছয় বছর বয়সী মমতাজ দুজনেই শ্বাসকষ্ট জনিত রোগে ভুগছে।

কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. সালাম জানান, রংপুর অঞ্চলে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ চলছে। এ সময় শিশুদের ঘরের বাইরে বের না হওয়ার জন্য মায়েদের বলা হলেও তারা মানছেন না। ফলে শীতজনিত নানান রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। 

হাসপাতালের আউড ডোরে গিয়ে দেখা গেছে, সকাল থেকে দীর্ঘ লাইন ধরে শিশুদের নিয়ে মায়েরা আসছেন রংপুর অঞ্চলের বিভিন্ন জেলা থেকে। আউটডোরে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. হাসনা আকতার জানান, শীতের কারণে সকালে এবং রাতে শিশুদের বাইরে বের করা যাবে না। এ ছাড়াও পর্যাপ্ত শীতবস্ত্র দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে।

রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ডা. রোস্তম আলী জানালেন, গত এক সপ্তাহে এক হাজার ৩শ’ ২২ জন শীতজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসাপাতালে ভর্তি হয়েছে। তাদের বেশির ভাগই শিশু।