জাতীয় পার্টি’র (জেপি) চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু এমপি বলেছেন, ‘স্বাধীন দেশে প্রতিটি সরকারের দায়িত্ব থাকে উন্নতি করার। আমরা এই কাজ না করে অতীত সরকারগুলোর পতন বা পরিবর্তনের পর তাদের বিষয়ে কুৎসা, চরিত্রহরণ, গীবত, নিন্দায় মুখর থাকি, যা কাম্য নয়। অন্যের ভালো কাজের প্রশংসা করতে হবে।’
বুধবার বিকালে পিরোজপুর জেলার কাউখালী উপজেলার কেউন্দিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে উপজেলা জাতীয় পার্টি (জেপি) আয়োজিত এক সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘নতুন প্রজন্মকে দেশের স্বাধীনতার পূর্বাপর অবস্থার কথা জানাতে হবে। স্বাধীনতা পরবর্তীকালে বাংলাদেশে অনেক পরিবর্তন হয়েছে। বঙ্গবন্ধু’র নেতৃত্বে তাঁর আদর্শ, নিদের্শনা ও প্রদর্শিত পথে আমরা একটি স্বাধীন রাষ্ট্র অর্জন করেছি। বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যাতে দেশের কথা চিন্তা করে আগামীতে মানুষের ভাগ্য উন্নয়নে কাজ করতে পারে তার পরিবেশ ও পথ আমাদেরই দেখাতে হবে।’
আনোয়ার হোসেন মঞ্জু বলেন, ‘স্বাধীনতা ব্যর্থ হয়নি। আমরা যদি দ্বন্দ্ব-সংঘাত না করতাম তাহলে দেশে আরও পরিবর্তন অর্জিত হতো। বাংলাদেশ আজ মূল সড়কে উঠে গেছে। নতুন প্রজন্ম নিয়ে আমরা খুবই আশাবাদী। তারা দেশ-বিদেশে লেখাপড়া করছে এবং বিদেশে শিক্ষা অর্জন করে দেশে ফিরে আসছে। তাদের মধ্যে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি জন্ম নিয়েছে। এই ধারণাকে ভিত্তি করে ভিন্ন ধরনের যে ভবিষ্যৎ গড়ে উঠছে সেখানে অতীতের অভ্যাস বদলে যাবে। আমাদের অনেক দূর যেতে হবে। তা না হলে স্বাধীনতার কোনও মূল্য থাকে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘ঐকমত্য থাকলে পরিকল্পিত উন্নয়ন হয়। উন্নয়নের জন্য এক থাকতে হয়। বিগত ৩৬ বছরে দক্ষিণাঞ্চলসহ সারা দেশে যোগাযোগ ও অন্যান্য ক্ষেত্রে ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে। স্থানীয় নেতৃত্ব ও মানুষ ঐক্যবদ্ধ থাকায় এই পরিবর্তনের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের উন্নয়নের পক্ষে থাকতে হবে। উন্নয়ন কাজ করতে হলে শুধু দাবি-দাওয়া, আবেদন-নিবেদন করেই বসে থাকলে চলবে না। কাজের পেছনে লেগে থাকতে হয়।’
সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, ‘পদ্মা সেতুতে অচিরেই যানবাহন চলবে আজ আমরা দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ সে স্বপ্ন দেখি। আমরা রীতিমত বিশ্বাস করি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ়তা ও অটল মনভাবের কারণে দেশবাসী পদ্মা সেতু পেয়েছে। আমাদেরও উন্নয়ন কাজের জন্য ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। শেখ হাসিনার মন্ত্রিসভায় দুই বারে ১০ বছর এবং এরশাদ সাহেবের মন্ত্রিসভায় সাত বছর মন্ত্রিত্ব করার অভিজ্ঞতা থেকে একথা বলতে পারি, উন্নয়ন হচ্ছে ধারাবাহিক প্রক্রিয়। আজ দেশের বার্ষিক আয় চার লাখ হাজার কোটি টাকা। বিগত একটি সরকারের অর্থমন্ত্রী সংসদে দাঁড়িয়ে বলেছিলেন সরকারের হাতে অর্থ নাই, কীভাবে দেশ চলবে। সেদিন আমরা সংসদে স্পিকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেছিলাম, মানুষের দেওয়া পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষ রাজস্বে দেশ চলে। এই অর্থের সঠিক ব্যবহার করতে হয়। দুর্নীতি-অপচয় থাকলে অর্থের অভাব হয়।’
বীর মুক্তিযোদ্ধা মফিদুল ইসলাম দুলালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন, উপজেলা জেপি’র সাধারণ সম্পাদক মো. শাহ আলম নসু, কাউখালীর ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক আমিনুর রশীদ মিল্টন, সমাজসেবী আব্দুল লতিফ খসরু প্রমুখ।
সুধী সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন, কাউখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান পল্টন ও যুগ্ম সম্পাদক সুনীল কুন্ডু, জেপি’র যুগ্ম সম্পাদক খান মো. বাচ্চু, বজলুর রহমান নান্নু, নেপাল চন্দ্র দে, সাংগঠনিক সম্পাদক মঞ্জুরুল মাহফুজ পায়েল, শিয়ালকাঠি ইউনিয়ন জেপি’র সভাপতি হেমায়েত উদ্দিন তালুকদার ও সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান মোল্লা, উপজেলা যুব সংহতির সভাপতি জিয়াউল হাসান জুয়েল, সাধারণ সম্পাদক নূরুজ্জামান মনু, ছাত্রসমাজের উপজেলা সভাপতি তারিকুল ইসলাম কাইয়ুম শেখ, সাধারণ সম্পাদক শামীম আহমেদ প্রমুখ।