নিরাপদ আবাসন কেন্দ্র থেকে পালানো আরও দুজনের সন্ধান

গাজীপুর মহানগরীর ভোগড়া মোগরখাল এলাকায় অবস্থিত নারী, শিশু ও কিশোরী হেফাজতিদের নিরাপদ আবাসন কেন্দ্র থেকে পালিয়ে যাওয়া ১৪ জনের মধ্যে আরও দুজনের সন্ধান পাওয়া গেছে। তাদের মধ্যে একজন কেরানীগঞ্জে এবং অপরজন নরসিংদীতে আছেন। তারা পারিবারিক হেফাজতে রয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন নারী ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপ-পরিচালক এবং আবাসন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফরিদা খানম।

আবাসন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানান, তবে অসুস্থতাজনিত কারণে সন্ধান পাওয়া দুজনকে আবাসন কেন্দ্রে পাঠানো যাচ্ছে না। সুস্থ হওয়ার পর নিয়ম-নীতি অনুসরণ করে তাদের আবাসন কেন্দ্রে পাঠানো হবে বলে অভিভাবকেরা জানিয়েছেন। এর আগে সাত জনকে আটক করেছিল পুলিশ। এছাড়া আরও পাঁচ জনের অবস্থান শনাক্ত করা গেছে। ২৬ মার্চের অনুষ্ঠানের কারণে পুলিশ ব্যস্ত থাকায় পাঁচ জনের অবস্থান জানার পরও তাদের উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। খুব শিগগিরই তাদের উদ্ধার করা হবে।

এদিকে, দায়িত্ব অবহেলার অভিযোগে কেন্দ্রের সহকারী হোস্টেল সুপার মরিয়ম খাতুনকে বৃহস্পতিবার সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তিনি নিয়মিত হোস্টেলে অবস্থান না করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। জামালপুরের উপজেলা মহিলা কর্মকর্তাকে এ কেন্দ্রে ফুলটাইম অবস্থান করার জন্য দুই মাস আগে তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। তিনি যোগদান করেননি। এ কারণে তাকেও শোকজ করা হয়েছে।

তাছাড়া নারী ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব সায়েদুল ইসলাম বৃহস্পতিবার বিকালে এ ঘটনা তদন্তে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করেছেন। মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব এবং নারী বিষয়ক অধিদফতরের পরিচালক মনোয়ারা ইসরাতকে ওই কমিটির প্রধান করা হয়েছে। কমিটিকে আগামী সাত কর্মদিবসের প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। ইতোমধ্যে তদন্ত কমিটির প্রধান করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। তদন্তে আরেকজন নতুন কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেওয়া হবে। তদন্ত কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন– ওই আবাসন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফরিদা খানম, উপসচিব জগদীশ দেবনাথ, গাজীপুরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবুল কালাম ও গাজীপুর জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) শাহানাজ আক্তার।

মন্ত্রণালয়ের উপপরিচালক ও আবাসন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফরিদা খানম বলেন, ‘এখানে ফুলটাইম অফিসার নেই। আমি এ কেন্দ্রে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছি। এ কেন্দ্রে মোট ২৮ জন হেফাজতি ছিল। তার মধ্যে বুধবার রাতে ১৪ জন পালিয়ে গেলেও ওই রাতেই সাত জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। ফুলটাইম কর্মকর্তা নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত সপ্তাহে অন্তত দুই দিন এ আবাসন কেন্দ্রে ফুলটাইম অবস্থান করবো।

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ (জিএমপির) বাসন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল ফারুক জানান, এ ঘটনায় ওই কেন্দ্রের স্টোরকিপার আব্দুর রহমান মোল্লা বাদী হয়ে ১৪ জনকে আসামি করে বৃহস্পতিবার বিকালে বাসন থানায় মামলা দায়ের করেছেন। ২৬ মার্চের নানা কর্মসূচির কারণে অন্য কোথাও যাওয়া সম্ভব হয়নি।