উদ্ধার করা ফেনসিডিল বিক্রির অভিযোগ পুলিশের বিরুদ্ধে

বগুড়ার শিবগঞ্জের মোকামতলায় চেকপোস্ট বসিয়ে উদ্ধার করা ২৪৮ বোতল ফেনসিডিলের মধ্যে ৮৮ বোতল বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ ওঠায় এ নিয়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছে। এই ফেনসিডিল উদ্ধার সংক্রান্ত দুটি মামলা তদন্তের জন্য মঙ্গলবার রাতে ডিবি পুলিশকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। মোকামতলা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ পরিদর্শক শাহীনুজ্জামান জানান, শিবগঞ্জ সার্কেলের নেতৃত্বে উদ্ধার করা ফেনসিডিল বিক্রির অভিযোগ ওঠায় বিষয়টি পুলিশ সুপার (এসপি) নিজে তদন্ত করছেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রগুলো জানায়, গত ৩ এপ্রিল রাতে শিবগঞ্জ সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আরিফুল ইসলাম সিদ্দিকীর নেতৃত্বে মোকামতলা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের পাশে ঢাকা-রংপুর মহাসড়কে চেকপোস্ট বসানো হয়। তল্লাশির সময় ঢাকাগামী খালেক পরিবহন থেকে নাজিম নামে এক ব্যক্তিকে ৫০ বোতল এবং পিংকি পরিবহন থেকে সাইফুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তিকে ১৯৮ বোতল ফেনসিডিলসহ গ্রেফতার করা হয়। এ ব্যাপারে মোকামতলা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের এসআই সুজাউদ্দৌলা পরদিন শিবগঞ্জ থানায় দুটি মামলা করেন। তবে পিংকি পরিবহন থেকে ১৯৮ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করা হলেও ১১০ বোতল দেখিয়ে সাইফুল ইসলামের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়। পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক পুলিশ সদস্যরা অভিযোগ করেন, এএসআই মিজান অন্যদের সহযোগিতায় তার সোর্সের মাধ্যমে ৮৮ বোতল ফেনসিডিল বিক্রি করে দেন। তবে এ ব্যাপারে এএসআই  মিজানের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

এ ব্যাপারে অভিযোগ উঠলে পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভূঁইয়া মঙ্গলবার মোকামতলা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে উপস্থিত হয়ে ফেনসিডিল উদ্ধারকারী কর্মকর্তা ও সাক্ষীদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন। এছাড়া এ সংক্রান্ত দুটি মামলা তদন্তের জন্য নথি ডিবি পুলিশকে দেওয়া হয়েছে। বগুড়া ডিবি পুলিশের ইনচার্জ পরিদর্শক আবদুর রাজ্জাক জানান, অন্যান্য মামলার মতোই শিবগঞ্জ থানার এই দুটি মামলা তাদের তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

শিবগঞ্জ সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আরিফুল ইসলাম সিদ্দিকী জানান, তার নেতৃত্বে ফেনসিডিল উদ্ধার হয়নি। ৮৮ বোতল ফেনসিডিল বিক্রির অভিযোগ উঠলেও এর সত্যতা পাওয়া যায়নি। সিজার লিস্টে ২৪৮ বোতল ফেনসিডিল উল্লেখ আছে। তিনি দাবি করেন, অভ্যন্তরীণ বিরোধে কোনও পুলিশ সদস্য এমন মিথ্যা অভিযোগ তুলেছেন। পুলিশ সুপার নিজে বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন।

বগুড়া সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) ফয়সাল মাহমুদ বলেন, ‘আমি আনঅফিসিয়ালি এমন অভিযোগ পেয়েছি। তদন্তে অভিযোগের সত্যতা মিললে কর্তৃপক্ষ জড়িতদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’

পুলিশ সুপার সাংবাদিককদের বলেছেন, অভিযোগের তদন্ত চলছে। এ ঘটনায় কেউ জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।