হোটেলে খরচ বেশি, সরকারি কোয়ারেন্টিন সেন্টার অপরিচ্ছন্ন

ভারত ফেরত প্রায় ৫০০ জন খুলনার হোটেল ও সরকারি প্রতিষ্ঠানসহ ১১টি স্থানে কোয়ারেন্টিনে আছেন। আর হোটেলের খরচ নিয়ে লোকজন আছেন চাপে। তারা ১৪ দিনের পরিবর্তে ৭ দিনের কোয়ারেন্টিনে থাকার দাবি জানিয়েছেন। আর সরকারি প্রতিষ্ঠানে কোয়ারেন্টিনে থাকা লোকজন আছেন মশার যন্ত্রনা আর অপরিচ্ছন্ন পরিবেশের মধ্যে।

খুলনার হোটেল অ্যাম্বাসেডরে কোয়ারেন্টিনে থাকা চট্টগ্রামের ইকবাল হোসেন বলেন, ‘ভারত থেকে আমরা করোনা নেগেটিভ রিপোর্ট নিয়ে এসেছি। তারপরও সরকারি সিদ্ধান্তে ৭ দিনের কোয়ারেন্টিন হলে ভালো হয়। হোটেলের ভাড়া ও খাওয়াসহ প্রতিদিন ২২০০-২৪০০ টাকা ব্যয় হচ্ছে। ১৪ দিনে এ ব্যয় কোথায় যাবে হিসাব করেন। কোয়ারেন্টিন ৭ দিনের করা হলেও উপকার হয়।’

কোয়ারেন্টিন সেন্টার

অ্যাম্বাসেডরের ম্যানেজার দেবাশিষ মণ্ডল বলেন, এখানে এ পর্যন্ত ৫২ জনকে কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। সবার জন্য এখানে ৫০ ভাগ ছাড় দেওয়া হয়েছে। আমাদের নিরাপত্তার কোনও ব্যবস্থা নেই। কর্মীরা নিজ দায়িত্বে নিরাপদ থেকে সেবা প্রদানে তৎপর রয়েছেন।    

এ হোটেলে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা এএসআই মামুন সরদার বলেন, পুলিশ ও আনসার সদস্যরা এখানে কোয়ারেন্টিনে থাকা লোকজন যাতে বের হতে না পারে আর বাইরে থেকে কেউ তাদের কাছে যেতে না পারে সে বিষয়টি দেখছেন। সবাই সেলফ নিরাপত্তা নিচ্ছেন।   

খুলনা টিচার্স ট্রেনিং কলেজ (টিটিসি) এ পর্যন্ত ১১৬ জনকে কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৫ জনকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

হোটেলে কোয়ারেন্টিন

টিটিসি’তে অবস্থান নেওয়া রোখসানা বেগম (৪৫) বলেন, তারা একই পরিবারের ৪ জন রয়েছেন। তার অভিযোগ, তাদেরকে যেখানে রাখা হয়েছে সেটা খুবই ময়লা আবর্জনা ভরা, প্রচন্ড মশা, বাথরুম পরিষ্কার না। ঠিকমতো কেউ খোঁজ খবর রাখে না।

টিটিসির অপর একজন মামুন শেখের অভিযোগ, তাকে এখানে আনা হয়েছে ৫ দিন আগে। আর শনিবার যাকে আনা হচ্ছে তাকেও একই সঙ্গে রাখা হচ্ছে। তাহলে তো কেউ নিরাপদ নয়। নতুনদের আলাদা রাখা দরকার বলে তিনি দাবি করেন।

স্থানীয়দের অভিযোগ, এখানে কোয়ারেন্টিনে আসা লোকজন অবাধে যাতায়ত করছে। তেলিগাতি গ্রামের একটি টিউবয়েল থেকে তারা পানি আনছে। একই টিউবয়েলে গ্রামের অনেক মানুষ পানি নিচ্ছেন।

কোয়ারেন্টিনে থাকা লোকজন

কোয়ারেন্টিনে থাকা লোকজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, এখানে পরিচ্ছন্নতা কর্মী নেই। খাবার পানি সরবরাহকারী নেই।

টিটিসির সহকারী অধ্যাপক ও করোনা প্রতিরোধ সদস্য আসাদুজ্জামান বলেন, নতুন টার্মে কাজ। কোয়ারেন্টিনে থাকা লোকজনকে যথাযথভাবে নিরাপত্তার সঙ্গে সেবা প্রদানের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।  

টিটিসির তত্ত্বাবধায়ক সেলিম রেজা বলেন, কোনও পিপিই বা স্বাস্থ্য সুরক্ষা সরঞ্জামাদি কিছু নেই এখানে। জনবল ঘাটতি আছে।

খুলনার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ইউসুফ আলী বলেন, ভারত ফেরতদের সেবা প্রদানকারীরা সেলফ প্রোটেকশন নিচ্ছেন। এখানে কেউই করোনা পজিটিভ নয়। তারপরও জীবাণু থাকতে পারে। তাই সবাই নিরাপদ দূরত্বে থেকে সেবা প্রদান করছেন।