পরদিনই ৬ জানুয়ারি ব্রাহ্মণবাড়িয়া নবীনগরে ডুবে মারা যায় আরেক শিশু। উপজেলার নবীনগর পশ্চিম ইউনিয়নের চিত্রি গ্রামে সফর মিয়ার চার বছর বয়সী ছেলে নাদিম নানার বাড়িতে বেড়াতে এসে বাড়ির পাশের নদীতে পড়ে যায়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় নবীনগর সদর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
প্রতিবছর এক থেকে ১৭ বছর বয়সী কমপক্ষে ১৮ হাজার শিশুর পানিতে ডুবে মৃত্যু হয়। মারা যাওয়া বেশিরভাগ শিশুর বয়স ১০ মাস থেকে দুই বছরের মধ্যে।
২০১৫ সালের জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত মোট ২২৫ জন পানিতে ডুবে মারা গেছে। এর মধ্যে শিশু আছে ১৯২ জন। সবচেয়ে বেশি মারা গেছে পুকুরে ডুবে- ১৩৬ জন । এদের মধ্যে বেশি মারা গেছে ৫-১২ বছর বয়সীরা। ২০১১ সালে যেখানে নিহতের সংখ্যা ছিল ১৩৯ সেখানে ২০১৪ সালে তা ৪৮০ তে দাঁড়ায়। এর আগের বছর ২০১৩ সালে ছিল ৫৮০। দুর্যোগ ফোরামের এই হিসাবটা কেবল জাতীয় দৈনিকগুলোতে প্রকাশিত খবরের ভিত্তিতেই করা।
প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, শহরের চেয়ে গ্রামে পানিতে ডুবে শিশুমৃত্যুর হার অনেক বেশি। তবে ঢাকা মহানগরেও পানিতে ডুবে মৃত্যুর ঘটনা কম নয়। ঢাকাকে ঘিরে রাখা বুড়িগঙ্গা, শীতলক্ষ্যা, তুরাগ, ধলেশ্বরী নদীতে অনেক শিশু ডুবে যায়। রাজধানীতে নিচু এলাকা বা ঝিলের ওপর গড়ে ওঠা বস্তির শিশুরা নর্দমায় ডুবে মারা যায় বেশি। সর্বশেষ এ ধরনের একটি দুর্ঘটনার বলি হয় রাজধানীর শ্যামপুরের নীরব।
মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের কর্মসূচি সমন্বয়ক আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, আমাদের পর্যবেক্ষণ বলছে বর্ষা মৌসুমে এমনটা বেশি ঘটে। বর্ষার তিন-চারটে মাস যদি আমরা অভিভাবকদের ভূমিকা এবং দায়িত্ব নিয়ে কর্মসূচি আনতে পারি তাহলে এ মৃত্যুর হার কমানো সম্ভব। তিনি বলেন, সকাল ১০টা থেকে দুপুরের পরপর এই ঘটনাগুলো বেশি ঘটে। এ থেকে বোঝা যায়, অভিভাবকরা যখন কাজের মধ্যে থাকেন তখনই ঘটনাগুলো বেশি ঘটে। সেক্ষেত্রে কিভাবে ওই সময়টা শিশুদের নজরে রাখা যায় সেটাই লক্ষ্য হওয়া দরকার। বর্তমান প্রকল্পের মধ্যে শিশুদের সাঁতার কাটা শেখানোর বিষয়ে মনোযোগ দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে চার বছর কম বয়সী শিশুরাই বেশি মারা যাচ্ছে।
ছবি কৃতজ্ঞতা: ম সাদেক ও সংগৃহীত
/এফএ/
আপ: আরএ