সোনারগাঁও জাদুঘরে এমপির উপস্থিতিতে কর্মকর্তা লাঞ্ছিত

নারায়ণগঞ্জনারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনে বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসে তাঁর ভাস্কর্যে শ্রদ্ধা নিবেদনের সময়ে সিনিয়র কর্মকর্তাদের অনুপস্থিতিতে ক্ষুব্ধ হয়ে এক কর্মকর্তাকে লাঞ্ছিত করেছে স্থানীয় এমপির লোকজন। ওই সময় তারা আগামী ১৪ জানুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য মাসব্যাপী লোকজ ও কারুশিল্প মেলা বন্ধেরও হুমকি দেয়।
রবিবার (১০ জানয়ারি) দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, রবিবার দুপুর ১২টায় বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনে (সোনারগাঁও যাদুঘর হিসেবে পরিচিত) বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান স্থানীয় নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের এমপি ও জাতীয় পার্টি নেতা লিয়াকত হোসেন খোকা। এর আগে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারাও শ্রদ্ধা জানান। কিন্তু এমপির উপস্থিতির সময় ফাউন্ডেশনের কোনও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা না থাকায় বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন সঙ্গে থাকা লোকজন। পরে এমপি খোকা তার অনুগামী লোকজন নিয়ে প্রশাসনিক কার্যালয়ে প্রবেশ করেন। এসময় ফাউন্ডেশনের পরিচালক কবি রবীন্দ্র গোপকে খুঁজতে হৈ চৈ শুরু করেন এমপি। পরে পরিচালককে না পেয়ে ফাউন্ডেশনের প্রদর্শন কর্মকর্তা আজাদ সরকারকে পেয়ে তার সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন। একপর্যায়ে এমপির সঙ্গে থাকা তারই লোকজন উত্তেজিত হয়ে আজাদ সরকারকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে। তখন এমপির সঙ্গে থাকা লোকজন আগামী ১৪ জানুয়ারী থেকে অনুষ্ঠিতব্য মাসব্যাপী লোকজ ও কারুশিল্প মেলার প্রসঙ্গ টেনে বলেন ‘এমপির নির্দেশ ছাড়া সোনারগাঁয়ে কোনও ধরনের মেলা হবে না’।

ফাউন্ডেশনের প্রদর্শন কর্মকর্তা আজাদ সরকার ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, এমপি লিয়াকত হোসেন সাহেব তার লোকজন নিয়ে অফিসে এসে হৈ চৈ করে পরিচালককে খুঁজে না পেয়ে তাকে গালমন্দ করেন। এমনকি এমপির সঙ্গে কথা না বলে মেলার সব কার্যক্রম যেন বন্ধ রাখা হয় সেই নির্দেশ দেওয়া হয়। এসময় তার কথার উত্তর নিতে গেলে এমপির সঙ্গের লোকজন তাকে মারধর করে আহত করে।    

নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের এমপি লিয়াকত হোসেন খোকা মেলা বন্ধের নির্দেশ দেওয়ার ঘটনা অস্বীকার করে বলেন, ‘আমরা বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসে সবাই বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যে ফুল দিতে গিয়েছিলাম।  কিন্তু তখন কর্তৃপক্ষের কোনও লোক ছিল না। এমনকি কোনও ধরনের আয়োজন করেনি এবং একটি মাইকও লাগানো হয়নি। এতে আমি দু:খ প্রকাশ করেছি। এ ঘটনার সঙ্গে মেলার কোনও সম্পৃক্ততা নেই।’

ফাউন্ডেশনের প্রদর্শন কর্মকর্তা আজাদ সরকারকে মারধরের বিষয়ে এমপি বলেন, ‘ওই স্থান থেকে বেরিয়ে আসার সময় পেছন থেকে দেখি আমাদের লোক একজনের সঙ্গে বেয়াদবি করেছে। পরে আমি নিজেই বিচার করে দু’জনের মাঝে মিমাংসা করে দিয়েছি।’

/এফএস/