ঘেরের আইলে আগাম শিম চাষে সফলতা

গ্রীষ্ম মৌসুমে শীতকালীন সবজি শিম চাষ করে সফলতা পেয়েছেন খুলনার কয়রা উপজেলার মহারাজপুর গ্রামের কলেজশিক্ষক মো. শাহাবাজ আলী। নিজ ঘেরের আইলে শিম চাষ করেছেন। এরই মধ্যে শিম বিক্রি শুরু করেছেন। ভালো দামও পাচ্ছেন। ফলে আগাম শিম চাষে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন আশপাশের কৃষকেরা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আগাম শিম বীজ তিন মাস আগে নিজের মৎস্য ঘেরের আইলে রোপণ করেন শাহাবাজ আলী। প্রায় ৪০ শতক ঘেরের আইলে শিম চাষ করেন। পাশাপাশি ঘেরের মধ্যে ইপসা-২, বারি-৪ জাতের ও বিভিন্ন প্রকার মাছ চাষ করেছেন। মাছ ও সবজি চাষে দারুণ সফলতা দেখছেন তিনি।

শাহবাজ আলী জানান, এক সপ্তাহ আগে শিম তোলা শুরু করেছেন। নতুন শিম বাজারে প্রতি কেজি ১০০ থেকে ১২০ টাকা বিক্রি করছেন।

তিনি বলেন, উপজেলা কৃষি অফিস এবং কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের গবেষণা বিভাগ এই চাষাবাদের পরামর্শ দিয়েছিল। ফলে আগাম জাতের শিমের বীজ সংগ্রহ করে বীজ রোপণ করি। বীজ রোপণের পর কৃষি বিভাগের পরামর্শে নিয়মিত সার ও কীটনাশক ব্যবহার করেছি। পোকামাকড় প্রতিরোধে পদক্ষেপ নিয়েছি। রোপণের পর থেকে সঠিকভাবে যত্ন নেওয়ার ফলে ভালো ফলন হয়েছে। প্রথমবার আগাম শিম চাষে ভালো ফলন পেয়ে আমি খুশি। আগামীতে ঘেরের আইলে এবং অন্যান্য পরিত্যক্ত জমিতে আগাম নানা ফসল লাগানোর প্রস্তুতি নিচ্ছি।

এদিকে, মহারাজপুর, মঠবাড়ি ও কালনা ও শ্রীরামপুরসহ আশপাশের অনেক গ্রামের চাষিরা কলেজশিক্ষকের আগাম শিম চাষের সফলতা দেখে চাষাবাদে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন।

কয়রা উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা ফারুক হোসেন বলেন, পুরো এলাকা লবণাক্ত হওয়ায় এবং আশপাশে চলতি বর্ষা মৌসুমে অনেক এলাকা প্লাবিত হওয়ায় চাষ করতে কৃষকেরা যখন ভয় পাচ্ছিলেন তখন শাহাবাজ আলী ভয় উপেক্ষা করে ঘেরের আইলে শিম লাগিয়েছেন। এতে সফলতা পেয়েছেন।

তিনি বলেন, শিম গাছে ফুল আসার সঙ্গে সঙ্গে কয়েক দিন টানা বৃষ্টি হয়েছিল। বৃষ্টির পানিতে চারদিক ডুবে যায়। এরপর পানি নেমে যায়। এ জন্য ঘেরের আইলে শিমের ভালো ফলন হয়েছে।

গবেষণা বিভাগ খুলনার প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. হারুনর রশিদ বলেন, বারি শিম ১, ২ ও ৪ আগাম চাষ করা যায়। শিম একটি উচ্চমূল্যের সবজি। যদি কৃষকেরা শিম চাষে আগ্রহী হন তাহলে লাভবান হবেন। কৃষকেরা চাষাবাদ করতে চাইলে সার্বিক সহযোগিতা দেবে কৃষি বিভাগ।