নবান্ন উৎসব উপলক্ষে মাছের মেলা

নবান্ন উৎসব উপলক্ষে অগ্রহায়ণের প্রথমদিন বৃহস্পতিবার বগুড়ার দুপচাঁচিয়া, শিবগঞ্জ ও নন্দীগ্রাম উপজেলায় ঐতিহ্যবাহী মাছের মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এসব মেলায় হরেক প্রজাতির বড় বড় মাছ বিক্রি হয়। গ্রামের প্রতিটি বাড়িতে অনেক আত্মীয়-স্বজন এসেছেন। মেলার মাছ দিয়ে তাদের আপ্যায়ন করা হচ্ছে।

দুপচাঁচিয়া উপজেলার ফেঁপিড়া, সাবলা, গয়াবান্ধা, খানপুর, সরঞ্জাবাড়ী, কইল, আমষট্ট, মাজিন্দা, গোবিন্দপুর ও উপজেলা সদরসহ এলাকার লোকজন নবান্ন উৎসব পালন করেন।

উপজেলার সরঞ্জাবাড়ী গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক পরিতোষ মণ্ডল জানান, আবহমানকাল থেকেই এখানকার মানুষ ধুমধামের সঙ্গে নবান্ন উৎসব পালন করা আসছেন। এ উৎসব উপলক্ষে দুপচাঁচিয়া উপজেলা সদরে বড় বড় মাছের মেলা বসে। সাধ্যমতো লোকজন রকমারি সবজিসহ বড় বড় মাছ কিনে হরেক রকম সুস্বাদু রান্না, নতুন ধানের চালের পায়েস, পিঠা-পুলি তৈরি করে মেয়ে-জামাই, নাতি-নাতনিসহ আত্মীয়-স্বজনদের আপ্যায়ন করেন।

দুপচাঁচিয়া মাছ বাজারে এদিন ২০ কেজি ওজনের কাতল মাছ তোলা হয়েছিল। মাছ বিক্রেতা প্রতি কেজি এক হাজার ১শ’ টাকা দাবি করলেও পরে ৮শ’ টাকা কেজি দরে কেটে বিক্রি করেন।

অন্যদিকে, শিবগঞ্জ উপজেলার ওমরপুর, নাগরকান্দি, হাটকড়ই, ধুন্দার ও নন্দীগ্রামের রণবাঘা আজ মাছের মেলা বসে। বাজারে কাতল, চিতল, রুই, সিলভার কার্প, ব্রিগেড, বাগাড়, বোয়ালসহ হরেক রকমের মাছ তোলা হয়। এক কেজি থেকে ২৫ কেজি ওজনের মাছ থরে থরে সাজিয়ে রেখে ক্রেতাদের আকৃষ্ট করা হয়। ১৮০ টাকা থেকে ৪৫০ টাকা কেজি দরে ব্রিগেড ও সিলভার কার্প বিক্রি হয়। রুই ও কাতল বিক্রি হয়েছে ২২০ টাকা থেকে ৬৫০ টাকা কেজি দরে। চিতল আকারভেদে ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়। ১২ কেজি ওজনের গজার মাছ ১২শ’ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হয়েছে।

মাছ বিক্রেতা মিলন হোসেন ও কবির আহমেদ জানান, মেলায় শতাধিক মাছের দোকান বসে। প্রত্যেকে ১০ থেকে ২০ মণ মাছ বিক্রি করেছেন।

গুন্দইল গ্রামের মাছ ব্যবসায়ী মোস্তফা জানান, নবান্ন উৎসবকে ঘিরে তারা মূলত বড় বড় মাছ বিক্রি করে থাকেন। ক্রেতার ক্রয় ক্ষমতা বিবেচনা করেই তারা দাম কম রাখেন।

নন্দীগ্রামের কাথম গ্রামের শফিকুল ইসলাম জানান, নবান্ন মেলা উপলক্ষে বাড়িতে বোন, জামাই, ভাগ্নে, ভাগ্নি ও আত্মীয়-স্বজন এসেছেন। তাদের আপ্যায়ন করতে তিনি মাছ কিনতে এসেছেন। তবে মাছের বাজার এবার চড়া।