শিক্ষক সেলিমের মৃত্যু, ৪৮ পৃষ্ঠার তদন্ত প্রতিবেদন জমা

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. সেলিম হোসেনের মৃত্যুর ঘটনায় প্রতিবেদন জমা দিয়েছে তদন্ত কমিটি। মঙ্গলবার (২৮ ডিসেম্বর) বিকাল ৪টার দিকে কুয়েট উপাচার্য ড. কাজী সাজ্জাদ হোসেনের কাছে এ প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়।

কুয়েটের জনসংযোগ ও তথ্য শাখার সেকশন কর্মকর্তা মো. রবিউল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘প্রতিবেদন জমা দেওয়ার সময় কমিটির পাঁচ সদস্যই উপস্থিত ছিলেন।’

জানা গেছে, ৩০ নভেম্বর শিক্ষক সেলিমের মৃত্যুর পর সৃষ্ট পরিস্থিতিতে ২ ও ৩ ডিসেম্বর সিন্ডিকেটের ৭৬তম জরুরি হয়। সেখানে ৩ থেকে ১৩ ডিসেম্বর ক্যাম্পাস বন্ধ, ৯ শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার এবং ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য পাঁচ সদস্যর কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি ২৫ দিন পর আজ প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। ৪৮ পৃষ্ঠার এ প্রতিবেদন নিয়ে আগে ছাত্র শৃঙ্খলা কমিটিতে আলোচনা হবে। সেখানে সিদ্ধান্তের পর সিন্ডিকেট সভায় যাবে এবং পরে নিয়মতান্ত্রিক সিদ্ধান্ত হবে।

এদিকে, ৭৭তম সিন্ডিকেট সভায় ২৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত কুয়েট বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এরপর ২৩ ডিসেম্বর ৭৮তম সভায় ৭ জানুয়ারি হল খুলে দেওয়া ও ৯ জানুয়ারি একাডেমিক কার্যক্রম শুরুর সিদ্ধান্ত হয়।

শিক্ষক সেলিমের মৃত্যুর পর অভিযোগ ওঠে, কুয়েটে শাখা ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক সাদমান নাহিয়ান সেজান কয়েকজন ছাত্র তাদের মনোনীত প্রার্থীকে ডাইনিং ম্যানেজার করার জন্য হল প্রভোস্ট ড. সেলিম হোসেনকে নিয়মিত হুমকি দিয়ে আসছিলেন। এরই ধারাবাহিকতায়, ৩০ নভেম্বর দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সাদমান নাহিয়ান সেজানের নেতৃত্বাধীন ছাত্ররা ক্যাম্পাসের রাস্তা থেকে ড. সেলিম হোসেনকে জেরা করা শুরু করেন। পরবর্তী সময়ে তারা শিক্ষককে ধরে নিয়ে তার ব্যক্তিগত কক্ষে (তড়িৎ প্রকৌশল ভবন) প্রবেশ করেন। সিসি টিভি ফুটেজে দেখা যায়, তারা আনুমানিক আধা ঘণ্টা ওই শিক্ষকের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন। এরপর শিক্ষক সেলিম দুপুরে খাবার খেতে ক্যাম্পাস সংলগ্ন বাসায় যান। বিকাল ৩টার দিকে স্ত্রী লক্ষ্য করেন তিনি বাথরুম থেকে বের হচ্ছেন না। পরে দরজা ভেঙে তাকে উদ্ধার করে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এদিকে, তার মৃত্যুর সঠিক কারণ উদঘাটনে দাফনের ১৫ দিন পর গত ১৫ ডিসেম্বর সকালে কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার বাগুলাট ইউনিয়নের বাঁশগ্রাম কবরস্থান থেকে তার লাশ উত্তোলন করা হয়। এরপর মেডিক্যাল বোর্ডের সিদ্ধান্তে ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য লাশ ঢাকায় পাঠানো হয়। ১৬ ডিসেম্বর রাতে লাশ কুষ্টিয়া পৌঁছানোর পর ওই একই কবরে দাফন করা হয়।